অনেক পিতা-মাতা রয়েছে যারা নিজের সন্তানকে বোঝা মনে করে খুব অল্প বয়সেই অন্যের হাতে তুলে দেয়। যদিও বাংলাদেশের বাল্যবিবাহ একদমই নিষিদ্ধ এবং শাস্তিযোগ্য। অনেকেই এই আইনের তোয়াক্কা না করে নিজের অল্প বয়সী মেয়েকে অন্যের হাতে তুলে দেয়।সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনার জেরে সারা এলাকা জুড়ে শুরু হয়েছে চাঞ্চল্য।
এক সংবাদ সূত্রে জানা যায় , নোয়াখালীর চাটখিলে বাল্যবিবাহের দায়ে বর শাহাদাত হোসেনকে (২৮) এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই অপরাধে কনের বাবা মিজানুর রহমানকে (৪০) ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ঘটনার পর স্থানীয় কাজী বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে পালিয়ে যায়।
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: ইমরানুল হক ভূঁইয়া এ সাজা দেন।
জানা গেছে, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার রামনারায়ণপুর ইউনিয়নের ১৪ বছরের অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীর বাল্যবিবাহ ঠিক করা হচ্ছিল একই গ্রামের শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে। খবর পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত ঘটনার সত্যতা পায়। খবর পেয়ে স্থানীয় কাজী পালিয়ে যায়।
এ সময় আদালত বাল্যবিবাহ বন্ধ করে বর শাহাদাত হোসেনকে এক মাস ও মেয়ের বাবা মিজানুর রহমানকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।
এছাড়াও, আদালত একটি মুচলেকা জারি করে যে মেয়েটির 18 বছর না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে করা হবে না এবং বর 18 বছর না হওয়া পর্যন্ত মেয়েটিকে বিয়ে করবে না।
চাটখিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ ইমরানুল হক ভূঁইয়া ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয়। মেয়ের বাল্যবিয়ের কথা স্বীকার করেছেন কনের বাবা। এরপর ২০০৭ সালের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে কনের বাবাকে ৬ মাস এবং বরের ১ মাসের কারাদণ্ড হয়।
মোঃ ইমরানুল হক ভূঁইয়া আরো বলেন, অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে বাল্যবিবাহের কুফল এবং এর আইনি ব্যবস্থা সম্পর্কে সচেতন করা হয়। বাল্যবিবাহ বন্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এ সময় রামনারায়ণপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বাহার ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমানসহ চাটখিল থানার পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বাল্যবিবাহের কারণে অনেক অল্প বয়সী মেয়ের জীবন নষ্ট হয়ে গেছে। তাই সরকার কড়াভাবে নির্দেশ দিয়েছে সারা বাংলাদেশের কোন স্থানে অপরাধমূলক কাজ কেউ করতে না পারে। যার জন্য এই ইউনিয়ন সচেতন ও প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।