ইভিএম হলো একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস যার মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হয়। এই পদ্ধতি এখন পৃথিবীর বেশ কয়েকটি দেশে ভোট গ্রহণ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে করে অনেক সুবিধা হয়েছে ভোট গ্রহণ কাজে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে ভোট গ্রহণ কাহ সম্পন্ন করা যায়। প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে মানুষের জীবনের কষ্টও অনেকাংশে হ্রাস পাচ্ছে। সম্প্রতি কমিশনার আহসান হাবিব খান ( Ahsan Habib Khan ) বলেছেন গোপন কক্ষ দাঁড়িয়ে থাকা ভোটারদের প্রভাবিতকারীকে তার ভাষ্যমতে এরা ডাকাত এবং সেই ডাকাতই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
ইভিএমের মধ্যে চ্যালেঞ্জ একটাই; আর কোনো চ্যালেঞ্জ আমি দেখি না। একটা ডাকাত, সন্ত্রাসী গোপন কক্ষে একজন করে দাঁড়িয়ে থাকে। বলে, আপনার ভোট হয়ে গেছে চলে যান। দিস ইজ দ্যা চ্যালেঞ্জ: নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান
কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেছেন, ভোট দিতে যে গোপন কক্ষ থাকে, সেখানে দাঁড়িয়ে থাকে ভোটারদের প্রভাবিত করা হয়। তার ভাষ্যে এরা ডাকাত এবং সেই ডাকাতই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ব্যালটের ভোটের ক্ষেত্রে একজনের কাগজ অন্যের জোর করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা অতীতে বহুবার ঘটেছে। তবে ইভিএমে একজন ভোটারের আঙ্গুলের ছাপে নিজের পরিচয় নিশ্চিত করতে হয় বলে একজনের ভোট অন্যের দেয়া সম্ভব নয়।
তবে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর গোপন কক্ষে ইভিএম মেশিনের বোতাম চেপে ভোট দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এমনও দেখা গেছে, গোপন কক্ষে দাঁড়িয়ে একজন প্রার্থীকে দেখানোর নামে ভোট দিতে বাধ্য করা হয়। এটা মূলত ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা করে থাকে।
বিষয়টি উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেন, “ইভিএমে একটাই চ্যালেঞ্জ; অন্য কোনো চ্যালেঞ্জ আমি দেখছি না। একজন ডাকাত, একজন সন্ত্রাসী, গোপন কক্ষে একে একে দাঁড়িয়ে আছে। বলুন, আপনার ভোট। চলে গেছে। এটাই চ্যালেঞ্জ।”
আগামী ১৫ জুন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের সব কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। গোপন বুথ ছাড়া সব জায়গায় সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে। ফলে কেন্দ্রের অভ্যন্তরে কোনো অবাঞ্ছিত ব্যক্তি উপস্থিত থাকতে পারবে না বলে মনে করছে নির্বাচন কমিশন।
কুমিল্লার ভোটাররা যাতে স্বতন্ত্রভাবে প্রার্থী বাছাই করতে পারবে তা নিশ্চিত করে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে; সাংবাদিকদের অনুমতি দেওয়া হবে। কেউ প্রবেশের ছবি দিলে সঙ্গে সঙ্গে ভোট দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে। ‘
তিনি বলেন, আমাদের কোনো দুর্বলতা নেই, কোনো চাপ নেই। আমরা সম্পূর্ণ স্বাধীন। দেখবেন আমি স্বাধীনভাবে কাজ করব। আমি কম কথা বলতে চাই। ‘
এর আগে কুমিল্লার প্রার্থী ও প্রার্থীদের প্রতিনিধিদের ইভিএম কাস্টমাইজেশন দেখানো হয়। কাস্টমাইজেশন হল কে ভোট দেবে এবং কে ভোট দেবে সে সম্পর্কে তথ্য যোগ করার প্রক্রিয়া।
১৬ জুন, ২০১০ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রথম ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছিল। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এই ডিভাইসে আগ্রহী হলেও রাজনীতিতে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি ও তার মিত্ররা এর বিরোধিতা করে। তাদের মতে, এই ডিভাইস দিয়ে দূর থেকে ভোট নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
যদিও নির্বাচন কমিশন অভিযোগ অস্বীকার করেছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে একশ’ আসনে ইভিএম ব্যবহারের কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানান কমিশনার। আলমগীর।
কুমিল্লায় প্রার্থীদের কাস্টমাইজেশন প্রক্রিয়ার কথা উল্লেখ করে আহসান হাবীব বলেন, “তাদের অনেক প্রশ্ন ছিল। আমি সেসব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি।’ তিনি বলেন, আমরা সব প্রার্থীদের নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করব।
তিনি বলেন, আঙুলের ছাপ অমিল বা কাটা আঙুলের ক্ষেত্রে ভোটার শনাক্তকরণের এক শতাংশ ক্ষমতা প্রিজাইডিং অফিসারের ছিল। তিনি যাকে খুশি ভোট দেবেন।
ভোট দেওয়ার অধিকার দেশের নাগরিকদের সবারই আছে। যার ভোট সে দিবে এবং তার যাকে খুশি তাকে ভোট দিবে। নিজের ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে অবৈধ হস্তক্ষেপ খুবই অন্যায়মূলক একটি কাজ। স্বাধীন দেশের মানুষ স্বাসধীনভাবে কাজ করবে এইটাই প্রত্যেকের প্রত্যাশা।