দেশের ভেতরে ও বাইরে সুন্দরী নারী সরবরাহকারী চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এই সার্কেলের প্রধান সামিনা আলম নীলা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রায় ছয় হাজার সুন্দরী নারী সরবরাহ বলে জানান ডিবি। এসব নারীর বেশির ভাগই শিক্ষিত এবং উচ্চবিত্ত পরিবারের।
জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবি মতিঝিল বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, সামিনা আলম নীলা, তার সহযোগী সৌরভ ইসলাম, চৈতি, তাসনিয়া বেলা, সাকিব আহমেদ ও মানসিব হায়াত।
বুধবার (৬ ডিসেম্বর) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কার্যালয়ে এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ডিবি হারুন অর রশিদ জানান, এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা থেকে সারাদেশের বিনোদন স্পটে নারীদের সরবরাহ করে আসছিল। নারীদের পাশাপাশি ইয়াবাও সরবরাহ করে। এছাড়া এই চক্রটি মিথ্যা পরিচয়ে ঢাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে।
ডিবি প্রধান বলেন, গ্রেফতারকৃত সাকিব ও পলাতক চৈতি স্বামী-স্ত্রী হয়ে বাড়ি দেখাশোনা করত। এসব বাড়িতে কাউকে নিয়ে গেলে আত্মীয় পরিচয় দিত।
ডিবি প্রধান বলেন, গ্রেফতারকৃত সাকিব অভিজাত এলাকায় ঘুরে বেড়াতো এবং নিজেকে সচিবের ছেলে পরিচয় দিত। তার গাড়িতে পতাকা লাগানো ছিল, সঙ্গে ছিল একজন দেহরক্ষী। কিন্তু দেখা গেছে তার বাবা লেখাপড়া জানেন না। সম্প্রতি সেনাবাহিনীতে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে সোনালী নামের এক তরুণীর কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন সাকিব। সে সচিবের ছেলে হওয়ার ভান করে এসব প্রতারণা করত।
তদন্তে সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করা হবে বলেও জানান এই ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা।
এক প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশিদ বলেন, তারা বিভিন্ন পেশার মানুষের কাছে নারী সরবরাহ করত বলে তথ্য পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তাধীন। এই চক্রটি অনেক জায়গায় অসংখ্য নারীকে সরবরাহ করত বলে জানা গেছে। কেউ বিদেশে পাচার হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া কেউ তাদের নির্ধারিত বাসায় গেলে তাদের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করে মাসের পর মাস ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করত সহযোগীরা। পরিবারকে জানানোর হুমকি দিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগও পেয়েছি।
উল্লেখ্য, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত এলাকার ফ্ল্যাট ও হোটেলে সুন্দরী নারীদের সরবরাহ করে আসছে। অবশেষে ডিবি পুলিশের হাতে ধরা পড়ে তারা।