গত দুই দিনে সারাদেশে প্রায় ৯০০ অবৈধ বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতাল বন্ধ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। সারাদেশে লাইসেন্সবিহীন হাসপাতাল ও ক্লিনিকের সংখ্যার তুলনায় বন্ধ হওয়া ক্লিনিক ও হাসপাতালের সংখ্যা কম বলে জানা গেছে। আর বাংলাদেশে অবৈধ বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা অবৈধ প্রতিষ্ঠানের চেয়ে বেশি। তবে সিলগালা করা ক্লিনিকে গোপনে চলছে চিকিৎসা সেখানেই এক তরুনীর সাথে ঘটে গেল অপ্রত্যাশিত ঘটনা।
মাগুরার শালিখা উপজেলার আড়পাড়ায় অবৈধভাবে সিলগালা করা একটি ক্লিনিকে নার্সের অভিযানে নির্জনা খাতুনের (১৩) স্বজনরা মারা গেছেন। নিহত নির্জনা শালিখার পুকুরিয়া গ্রামের নাজমুল মোল্লার মেয়ে। সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।
রোববার সকালে ক্লিনিকটি সিলগালা করার অভিযোগে মাগুরা সদর হাসপাতালের স্টাফ নার্স করিমুন্নেসাকে আটক করেছে ক্লিনিক মালিক বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী। বাচ্চু মিয়া পালিয়ে গেছে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে চালু থাকা আল হেরা বেসরকারি হাসপাতাল নামের ক্লিনিকটি গত ২৯শে মে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে বন্ধ করে দেওয়া হয়। শহীদুল্লাহ দেওয়ান। কিন্তু আদেশ অমান্য করে করিমুন্নেছা ও তার স্বামী বাচ্চু মিয়া গোপনে রোগীদের ক্লিনিকে ভর্তি করে আসছিলেন। একপর্যায়ে রোববার সকালে বাচ্চু মিয়া ও তার স্ত্রী করিমুন্নেছা অবৈধভাবে ওই কিশোরীর অস্ত্রোপচার করলে মেয়েটির মৃত্যু হয়। নিহতের চাচা ডাবলু মোল্লার অভিযোগ, ৪ জুন শনিবার পেটে ব্যথা নিয়ে নির্জনাকে সেখানে ভর্তি করা হয়। ৫ জুন রবিবার সকাল ৮টার দিকে নার্স করিমুন্নেসা ও বাচ্চু মিয়ার অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশন করা হয়।
এর কিছুক্ষণ পরেই মেয়েটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে উদ্ধার করে যশোরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সকাল ১০টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি নার্স করিমুন্নেছা ও বাচ্চু মিয়ার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
ঘটনা জানতে পেরে দুপুরে সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ান, শালিখা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ইনচার্জ ডা. আবজাল হোসেন ও শালিখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিশারুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে নার্স করিমুন্নেসাকে আটক করেন। তবে গ্রেফতারকৃত নার্স তাকে নির্দোষ দাবি করে এবং যশোরের একজন চিকিৎসক মেয়েটির অস্ত্রোপচার করেন এবং তাকে সাহায্য করেন বলে দাবি করেন। তবে যশোরের ওই চিকিৎসকের নাম-ঠিকানা তিনি বলতে পারেননি। মাগুরার সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লাহ দেওয়ান বলেন, করিমুন্নেসা নিজে অপারেশন করলে সেটা অপরাধ। সরকারি কর্মচারী হয়ে বেসরকারি ক্লিনিকে ডাক্তারকে সাহায্য করাও অপরাধ। আমরা তার বক্তব্য খতিয়ে দেখছি।
শালিখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিশারুল ইসলাম জানান, আটক নার্স করিমুন্নেসাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বাচ্চু মিয়াকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।