দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারায় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির পদত্যাগের দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। তিনি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না বলে বারবার অভিযোগ উঠছে। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ট্রিগার টেপাটা তো ইজি। গুলি একবার বেরিয়ে গেলে তো ফেরত আনা যাবে না। তার আগে আমাদের চেষ্টা করতে দেন। সে জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে।
বুধবার সকালে রাজধানীর গুলশানে ইস্টার্ন ব্যাংক আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
পার্লামেন্টের ভিতরে ও বাইরে একটা চক্র বারবার বলছে—আপনার হাতে ট্রিগার আছে কিন্তু আপনি গুলি করেন না, সময় নেন; এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীদেরকে টিপু মুনশি বলেন, ‘গুলি করাটাই শেষ সমাধান না। আমরা মনে করি আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। হঠাৎ সাপ্লাই চেইন বন্ধ হয়ে গেলে এতে তো হিতের বিপরীত হবে। সে জন্য সব দিক দিয়ে কাজ করতে হবে। হঠাৎ করে তা বন্ধ করা হলে ভোক্তারা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যার জন্য আমরা আলোচনা করে আইনের মধ্যে থেকে দাম নির্ধারণ করতে চাই। ট্রিগার টানা সহজ। বুলেট একবার বেরিয়ে গেলে আর ফিরিয়ে আনা যায় না। তার আগে চেষ্টা করা যাক। আমরা এটা সম্ভব করার জন্য আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
টিপু মুনশি বলেন, সরকার পণ্যের দাম সাধ্যের মধ্যে রাখার চেষ্টা করছে, কিন্তু আসলে আমাদের উভয় পক্ষের কথাই শুনতে হবে। আমরা যতটা সম্ভব সমন্বয় করার চেষ্টা করি সব দিক সামলাতে।
দ্রদ্রব্যমূল্যের বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখছেন, আমরা সব রকম চেষ্টা করছি। কতগুলো আইটেম আছে যেটা বৈশ্বিক দামের ওপর নির্ভর করে। সেটা আমরা চেষ্টা করি, যে দাম সেটা সমন্বয় করতে। টাইম টু টাইম আমরা ভেরিফাই করি, দাম যেখানে কমানো দরকার কমাই।
মুদ্রাস্ফীতি বিশ্বব্যাপী প্রভাব ফেলেছে। অনেক দেশ ভালো করছে, আমরাও চেষ্টা করছি। যাতে মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা যায়,’ তিনি বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের দেশি পণ্য, যেমন কৃষি পণ্য; এটা কৃষি মন্ত্রণালয়ের কাজ। কৃষি মন্ত্রণালয় যেদিন আমাদের জানালো, এই দাম এখন হওয়া দরকার, আমরা সেদিনই সেই দাম ঘোষণা করলাম। এটা সমন্বয় করেই করছি আমরা। আমাদের ওপর চাপ পড়ে কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সব মন্ত্রণালয়কে নিয়ে কাজ করে।
তেলের দাম কমানো হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এক সময় তেলের দাম ছিল ২০৫ টাকা। বিশ্ববাজারে সময়ে সময়ে কমার কারণে আমরা তা অনেক কমিয়ে এনেছি। প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কমেছে। গত সপ্তাহেও পাঁচ টাকা কমেছে। আমরা সম্পূর্ণ সমন্বয় করছি। আমরা বৈশ্বিক পরিস্থিতির শিকার।
আন্তর্জাতিক বাজারের মতো একই হারে কমেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সেভাবে হিসাব করে
দাম নির্ধারণ করি।
যেমন বাড়লে সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে, কমলে তো সঙ্গে সঙ্গে কমে না—গণমাধ্যমকর্মীদের এমন মন্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এটা সত্যি কথাই বলেছেন। সুযোগটা ব্যবসায়ীরা নেয়। তবে এর উল্টো দিকও ব্যবসায়ীরা বলে। আলু ব্যবসায়ীদের কথার সূত্র ধরে তিনি বলেন, এই আলু যখন রাস্তায় ফেলে দিয়েছে দাম না পাওয়ার কারণে; তারা বলছেন, তখন তো পাশে এসে দাঁড়ানি আপনারা! এসব কথা তারা বলে। প্রকৃতপক্ষে দুদিকের কথাই শুনতে হয়। আমরা যতটা সম্ভব সমন্বয় করার চেষ্টা করি সব দিক সামলাতে।