ডোনাল্ড লু বর্তমানে একটি আলোচিত নাম হয়ে দাঁড়িয়েছেন বিশ্ব রাজনীতিতে। বিশেষ করে গেলো কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন তিনি। আর সেই থেকে বাংলাদেশেও একটি বিশেষ নাম হয়ে দাঁড়িয়েছেন এই ডোনাল্ড লু। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু দুই দিনের সফর শেষে গত রোববার (১৫ জানুয়ারি) ঢাকা ত্যাগ করেন। শনিবার (১৪ জানুয়ারি) ঢাকায় এসে তিনি আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেন। গুলশানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গেও তিনি সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
ডোনাল্ড লু তার বাংলাদেশ সফরের ঠিক আগে ভারত সফর করেন (১২ থেকে ১৪ জানুয়ারি)। ১৩ এবং ১৪ জানুয়ারি জাতীয় রাজধানী নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ ভারত-মার্কিন ফোরামে অংশ নেওয়ার পর ভারতীয় মিডিয়া এনডিটিভিতে তার সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল। ভারত-মার্কিন ফোরামে কী আলোচনা হয়েছিল সে সম্পর্কে এনডিটিভির এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে লু , মৃদু হাসি বলেন, ”গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাগুলো মিটিংয়ে নয়, সাইড মিটিংয়েই হয়”
কিছুটা গম্ভীর লু তখন বলেছিলেন, “এটি সর্বত্র আলোচনা করা হয়েছে যে এই বছরটি মার্কিন-ভারত সম্পর্কের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর।” ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ওয়াশিংটন সফর করবেন। আমরা ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও ভারতের বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য। ২০২১ সালে আমাদের মধ্যে বাণিজ্য $১৬০ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই বছর নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিতব্য জি-২০ সম্মেলনে অংশ নেবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে লু বলেন, “আমরা আশা করি প্রেসিডেন্ট বিডেন অংশগ্রহণ করবেন এবং আমরা সবাই তার ভারত সফরের জন্য অপেক্ষা করছি।”
উল্লেখ্য, আগামী সেপ্টেম্বর মাসে নয়াদিল্লিতে বিশ্বের ২০টি বৃহৎ অর্থনীতির দেশের জোট জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
৯-১০ সেপ্টেম্বর দিল্লির প্রগতী ময়দানের ওই সম্মেলনে পৃথিবীর অনেক বড় বড় দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা উপস্থিত থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, এশিয়ায় চীন-ভারত দ্বন্দ্ব সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে, দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু বলেছেন, “চীন-ভারত সীমান্ত বিরোধ সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে নিষ্পত্তি করা উচিত। দুই পক্ষের মধ্যে। কিন্তু চীনের পক্ষ থেকে কোনো ভালো পদক্ষেপ নেই।” উল্টোদিকে, ভারত সীমান্তে, বিশেষ করে দেশের উত্তর-পূর্ব, পূর্ব সীমান্তে সম্প্রতি আগ্রাসী পদক্ষেপ নিতে দেখা গেছে চীনকে। ২০২০ সালে যখন চীনা সামরিক বাহিনী ভারতের সীমান্ত পোস্ট গালওয়ান উপত্যকায় আক্রমণ করেছিল, তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই প্রথম চীনা আগ্রাসনের সমালোচনা করেছিল এবং ভারতকে সাহায্যের প্রস্তাব করেছিল। আমরা আমাদের ভারতীয় অংশীদারদের সমর্থন অব্যাহত রাখব।”
এছাড়াও, ভারতের নিকটতম প্রতিবেশী পাকিস্তানের অর্থনীতি (বিশেষ করে ভয়াবহ বন্যার পর) শক্তিশালী করতে যুক্তরাষ্ট্রের পদেক্ষেপগুলোর কথাও তুলে ধরেন লু।
প্রসঙ্গত, এ দিকে বাংলাদেশ সফর সফল হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন ডোনাল্ড লু। এ ছাড়াও দেশের সরকারও বলছে তার সাথে করা মিটিং হয়েছে বেশ সফল।