গতকাল বাংলাদেশে ঘটে গেছে আরো একটি নতুন ট্রাজেডি। গতকাল উত্তরার জসিমউদ্দিন সড়কে বিআরটি প্রকল্পের গার্ডার পড়ে দুর্ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় রেজাউল করিম হৃদয় (২৬) ও রিয়া মনি (২১) বেঁচে যান।
তবে তারা জীবিত ফিরে এলেও এত বড় দুর্ঘটনার শোক কাটিয়ে উঠতে পারবেন না। জীবিত ফিরে এসে হৃদিয়া এবং রিয়া দুঃখজনক ঘটনাটি বর্ণনা করেন।
হৃদয় বলেন, আমরা যাওয়ার সময় উপরে গার্ডার ঝুলতে দেখি। এর নিচ দিয়ে অনেক গাড়ি চলে যায়। সব গাড়ি যেমন যায়, আমরাও যাই। আমাদের আগের সব গাড়িও এর নিচে দিয়ে যায়। কিন্তু আমরা যখন যাই, এটি গাড়ির ডান দিক বরাবর পড়ে যায়। আর মাটিতে গাড়ি দেওয়া যায়।
হৃদিয়া আরও বলেন, আমার বাবা গাড়ি চালাতেন। পিছনে ছিল আমার শাশুড়ি, আমার স্ত্রীর খালা এবং তার দুই সন্তান। আমার স্ত্রীও পিছনে ছিল কিন্তু সে জানলার দিকে মুখ করে বাম পাশে বসে বেঁচেছিল, আমিও বাম পাশে ছিলাম। কিন্তু ডান পাশে পড়ে গেলে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।
হৃদয় বলল, গার্ডারটা এমনভাবে পড়ে গেল যে আমার পাশে একটু জায়গা নেই। ফলে আমি নড়াচড়া করতে পারতাম। কিন্তু আমার পা আটকে যায় এবং পায়ে ব্যথা হয়। কিন্তু রিয়ার পাশে কোন ঘর ছিল না। গাড়ি আর গার্ডারের মাঝে রিয়ার সারা শরীর আটকে গেল। সে সচেতন হলেও ভয়ে চিৎকার করছিল। পরে আশপাশের লোকজন এসে কাঁচ ভেঙ্গে আমাকে উদ্ধার করে। কিন্তু পেছনের অবস্থা এমন ছিল যে কাচ ভাঙা যেত না। গাড়ির দরজা ভেঙ্গে তাকে বের করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ প্রসঙ্গে রিয়া বলেন, আমাদের দুই ভাই-বোনকে শৈশব থেকে পরিণত বয়সে বড় করার পেছনে আমার মায়ের অবদান অনেক। সেই মাকে এভাবে পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হলো।
সোমবার উত্তরার জসিমউদ্দিন সড়কে বিআরটি প্রকল্পের গার্ডার পড়ে প্রাইভেটকারের ৫ যাত্রী নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দুই শিশু ও একজন নারী রয়েছে।
এ ঘটনায় হৃদয়ের বাবা রুবেল হাসান (৫০), রিয়ার মা ফাহিমা (৪০), রিয়ার খালা ঝর্ণা (২৮), ঝর্ণার মেয়ে জান্নাত (৬) ও ছেলে জাকারিয়া (৩) মারা যান।
প্রসঙ্গত, গতকাল বিয়ের বৌ ভাতের অনুষ্ঠান শেষ করে ফিরে যাওয়ার পথে তারা এই দুর্ঘটনার শিকার হন। আর সেই সময়ে বর হারান তার বাবাকে আর কনে হারান তার মাকে। আর এই ঘটনায় এখন শোকে বিবহ্বল সারা দেশবাসি।