সরকারী সম্পদের অপব্যবহার আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। দেশের অনেক নেতা ও সরকারী কর্মচারী রয়েছে যারা দেশের জাতীয় সম্পদ অন্যায় ভাবে নিজের মত করে ব্যবহার করে বিপুল মুনাফা অর্জন করেন। সম্প্রতি এমনি এক সরকারী কর্মকর্তার নাম উঠে এসেছে গন মাধ্যমে।
রেলওয়ের এক শ্রেণীর কর্মচারী ঐতিহ্যগতভাবে চট্টগ্রাম নগরীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জমিদারি প্রতিষ্ঠা করেছে। কর্মস্থল থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরের ক্ষেত্রে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে জমি বিনিময় করা হয়। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বাসা-বাড়ি ও দোকান ভাড়া দিয়ে প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা আদায় করছে বেশ কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী। রেলওয়ের এসওএস শাখার এক অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে আজ রেলওয়ের কর্মচারীদের জমিদারি নিয়ে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য প্রকাশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ রেলওয়ের ইস্টার্ন এসওএস অফিসের অফিস সহকারী সরাফত উল্লাহ বাটালীকে রেলওয়ে হোল্ডিং নম্বর A/765/E এর বাড়িটি বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং যথারীতি তিনি তিনটি অবৈধভাবে নির্মিত দোকানসহ ঘর. বরাদ্দ পাওয়ার পর জামশেদ উদ্দিন নামের ওই ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে একদফা এককালীন অগ্রিম এক লাখ টাকা এবং মাসিক পাঁচ হাজার টাকা ভাড়া আদায় করছে।
অভিযোগকারী জামশেদ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমি না খেয়ে সারাফত সাহেবকে মাসিক ভাড়া বুঝিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে সরাফত উল্লাহ দোকান দুটির জন্য আরও ১০ লাখ টাকা অগ্রিম দাবি করেন, সাথে মাসিক ১০,০০০ টাকা ভাড়াও। আমার মতো একজন ছোট দোকানদারের পক্ষে এত টাকা দেওয়া অসম্ভব, তবুও তার চাপের কারণে, আমি আরও এক লাখ টাকা অগ্রিম দেওয়ার প্রস্তাব দিলে সে তা উপেক্ষা করে এবং আমাকে দোকান ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। রেলপথ দ্বারা বহিরাগতদের কাছে এবং অন্যত্র বসবাস করে।
জামশেদ বলেন, আমার চার সন্তানকে নিয়ে এখন আমাকে রাস্তায় বসতে হবে। তারা আমার সমস্ত জিনিসপত্র ধ্বংস করে দেবে। তাই আইনি লড়াইয়ে নামব। দুদকসহ সবার কাছে অভিযোগ করেছি।
জানা গেছে, এই অবৈধ দোকান ব্যবসার সঙ্গে রেলওয়ের আরও লোকজন জড়িত, তাই সরাফত উল্লাহ রেলওয়ে অফিস ব্যবহার করে ওই দুটি দোকান থেকে ভাড়াটিয়াদের উচ্ছেদের উদ্যোগ নিয়েছেন। এই উচ্ছেদ প্রক্রিয়া 10 ফেব্রুয়ারি সম্পন্ন করা যেতে পারে।
এ বিষয়ে রেলওয়ের এসওএস বিভাগের অফিস সহকারী সরাফত উল্লাহ বলেন, আমার বরাদ্দকৃত বাসায় আমি বসবাস করছি। প্রতিবেদক বটতলী রোডের A/765/E নম্বর বাড়িতে গেলে সরাফত উল্লাহকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। বরং ১০ হাজার টাকা ভাড়ায় দীর্ঘদিন ধরে সেখানে বসবাস করছেন দুটি পরিবার।
ভাড়াটিয়ারা জানান, সরাফত উল্লাহ রাজীব কখনো এখানে থাকেননি। দোকান উচ্ছেদের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সরাফত উল্লাহ তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলার কথা বলে ফোন কেটে দেন।
ইস্টার্ন রেলওয়ের চিফ এস্টেট অফিসার সুজন চৌধুরী বলেন, আমাদের কোনো কর্মচারীকে বরাদ্দ করা বাড়ির খালি জায়গায় আমরা কোনো দোকান বরাদ্দ করি না। আর কেউ তা করতে পারে না। তিনি বলেন, উচ্ছেদের বিষয়টি এসওএস অফিস থেকে এসেছে এবং এতে তার কোনো ভূমিকা নেই।সরাফতের তিনটি দোকানের মধ্যে ১৫টি অবৈধভাবে নির্মিত দোকানের মধ্যে মাত্র দুটি কেন টার্গেট করে ভেঙে ফেলা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন যে, কোনো কর্মচারী নেই। করতে পারে।এবং সব অবৈধগুলো ভেঙ্গে দেওয়া হবে।আমরা কারো প্রতি অবিচার করতে পারি না।বিষয়টি জানার সাথে সাথে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ঘটনায় ওই সরকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহনের সিন্ধান্ত নিয়েছে ভুক্তভোগি ও গরিব দোকানি। মামলা করার পর বোঝা যাবে আসলে এই ঘটানা আসল রহস্যকি। এছাড়া ঘটনা সম্পর্কে ইস্টার্ন রেলওয়ের চিফ এস্টেট অফিসার সুজন চৌধুরী অবগত হয়েছেন। তিনি ব্যবস্থা গহন করবেন বলেও আশ্বাশ দিয়েছেন ওই দোকানীকে।