পর্যায়ক্রমে দেশের সকল ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল দেশের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল যেসব ইউনিয়নে নির্বাচন হয়েছে তার অনেক স্থানে নৌকার প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন, এককথায় নৌকার ভরাডুবি ঘটেছে। নোয়াখালী জেলার সেনবাগ উপজেলাধীন ৪টি ইউনিয়ন পরিষদে ও একটি পৌরসভায় যেসব প্রার্থী বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন তারাই বিজয়ী হয়েছেন। সাতক্ষীরা জেলায় ১৭টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ১১টিতে নৌকা পরাজিত হয়েছে। কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলাধীন ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ৯টিতে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার হওয়া প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। এই সকল রিপোর্ট পাওয়া গেছে সেখানকার নিয়োজিত রিপোর্টার এবং প্রতিনিধিদের প্রেরনকৃত তথ্য থেকে।
নোয়াখালী : সেনবাগে আওয়ামী লীগের তিন বিদ্রোহী এবং বিএনপির দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। আর ভোটের আগে ডমুরুয়া ইউপিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হন। নৌকার প্রার্থীদের ভরাডুবির বিষয়ে জানতে চাইলে সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাফর আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘সবাই এখন ক্ষো’ভ-দুঃখে আছে। আমি খোঁজখবর নিয়ে পরে এ বিষয়ে কথা বলব।’
গাজীপুর : কালিয়াকৈরে একটি পৌরসভা ও সাতটি ইউপির মধ্যে একটি ইউপিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। পাঁচ ইউপিতে জিতেছেন বিদ্রো’হীরা।
পঞ্চগড় : পঞ্চগড়ের সদর (১০) ও আটোয়ারী উপজেলার পাঁচটিসহ মোট ১৫টি ইউপির ৯টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা হেরেছেন। জিতেছেন ছয়টিতে। দুটিতে জিতেছেন বিদ্রোহী।
রংপুর : সদর, তারাগঞ্জ ও কাউনিয়া উপজেলার ১৩টি ইউপির মধ্যে ৯টিতে নৌকার প্রার্থীরা হেরেছেন। ছয়টিতে জিতেছেন বি’দ্রো’হীরা।
নবীগঞ্জ : নবীগঞ্জ উপজেলার ১৩টি ইউপির চারটিতে নৌকা, চারটিতে বিদ্রো’হী, তিনটিতে বিএনপির স্বতন্ত্র ও দুটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জিতেছেন।
সাতক্ষীরা : দেবহাটার পাঁচটি ও কালীগঞ্জ উপজেলার ১২টি ইউপিতে নৌকার ছয় প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। সাতটিতে নৌকার বিদ্রো’হী, তিনটিতে স্বতন্ত্র (বিএনপির) ও একটিতে জাতীয় পার্টির (নারী) প্রার্থী জয়ী হয়েছেন।
ঝিনাইদহ : কোটচাঁদপুরের পাঁচ ইউপির মধ্যে একটিতে আওয়ামী লীগ ও চারটিতে বিদ্রো’হীরা বিজয়ী হয়েছেন।
চাঁদপুর : মতলব উত্তর উপজেলার ৯টি ইউপির তিনটিতে নৌকা, পাঁচটিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রো’হী ও একটিতে বিএনপি জয় পেয়েছে।
কুষ্টিয়া : দৌলতপুর উপজেলার ১৪টি ইউপিতে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত ৯ প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী জিতেছেন চারটিতে। বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী জিতেছেন একটিতে।
মেহেরপুর : গাংনীর তিন ইউপিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী একটিতে, বিদ্রোহী একটিতে ও অন্যটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।
দিনাজপুর : ফুলবাড়ী উপজেলার সাতটি ইউপির তিনজন নৌকার ও চারজন স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, সারা দেশের জেলাগুলোতে পর্যায়ক্রমে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আর এই নির্বাচনে দেশের বেশিরভাগ ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। তবে বর্তমান সময়ে এসে কয়েকটি জেলার ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ থেকে বহিষ্কার হওয়া প্রার্থী এবং বিদ্রো’হী প্রার্থীরা নির্বাচিত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। অনেক সময় দেখা গেছে, স্থানীয় এমপি এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা মোটা অর্থের বিনিময়ে প্রার্থী দিয়েছেন যারা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন। তবে অন্য যেসব প্রতীক নিয়ে যারা নির্বাচনে লড়েছেন তাদের অনেকের বিজয়ী হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।