প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে আসা নতুন কোনো ঘটনা নয়। প্রিয় মানুষটিকে পেতে জাত, ধর্ম, বর্ণ সব ত্যাগ কিছুই ছাড়তে পিছুপা হয়না। তেমন ঘটনায় ঘটেছে জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার রবিউল হাসান রুমান জীবনে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে ভালোবাসার মানুষকে পেতে সুদূর মেক্সিকো থেকে বাংলাদেশে আসে গ্লাডিস নাইলি টরিবিও মরালেস নামে ওই তরুণী।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক সক্ষতা গড়ে উঠে এসময় প্রেমের পরিণয়। প্রেমকে পূর্ণতা এনে দিতে সদুর সাড়ে ১৪ হাজার কিলোমিটার দূরের দেশ মেক্সিকো থেকে ছুটে এসেছিলেন প্রেমিকা গ্লাডিস নাইলি টরিবিও মরালেস। প্রেমিক জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি উপজেলার বাসিন্দা রবিউল হাসান রুমান। প্রেমের টানে টরিবিও মরালেস বাংলাদেশে ছুটে এসে বিয়েও করেন।
কিন্তু বিয়ের এক মাসের মধ্যে দেশে ফিরতে হবে তাকে। এখন স্বামী রবিউল হাসান রুমন তার প্রিয়তমা স্ত্রীর কাছে যাওয়ার জন্য ভিসার অপেক্ষায় রয়েছেন। ভিসা পেলেই উড়ে যাবে প্রিয়তমার কাছে। অচেনা সেই শহরে তাদের সুখী সংসার গড়তে চায়। গত বছরের ২১ নভেম্বর গ্ল্যাডিস নাইলি টোরিবিও মোরালেস নামের এক মেক্সিকান তরুণী ঢাকায় আসেন। এরপর তাকে স্বাগত জানান সরিষাবাড়ীর রুমান ও তার পরিবার। দেশে এসে ইসলাম গ্রহণ করেন। এ ধর্ম রীতিতেই বিয়ে করেন তারা।।
প্রেমিকা থেকে স্ত্রীর হওয়া গ্লাডিস নাইলি টরিবিও মরালেসের নাম রাখা হয় লাইলী আক্তার। ওই দিনই মধ্যরাতে সরিষাবাড়ির পোগলদিঘা গ্রামে পৌঁছান নতুন দম্পতি। সেখানে এক মাস থাকার পর দেশে ফিরেছেন লাইলী আক্তার। যাওয়ার আগে রুমানকে শিগগিরই মেক্সিকো নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার কথাও জানান লাইলী আক্তার।
দেশের একটি অন্যতম সংবাদমাধ্যম -এর সাথে মেক্সিকো যাওয়ার বিষয়ে রবিউল হাসান রুমানের কথা বলেছেন, যেহেতু মেক্সিকো বাংলাদেশে দূতাবাস নেই, তাই গত মে মাসে ভিসার জন্য আবেদন করতে ভারতের দিল্লিতে গিয়েছিলাম। তখন আমি ভারতে ছিলাম ১২ দিন। আমি সব কাগজপত্র জমা দিয়েছি। সব কাজ শেষ হলে আমি মেক্সিকো চলে যাব। সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাসের ইচ্ছা রয়েছে আমার।
রবিউল হাসান রুমনের বাবা নজরুল ইসলাম জানান, বিদেশি ছেলের বউ অনেক ভালো। তাদের উভয়ের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। ছেলের বউয়ের সাথে আমাদের কথা হয়। মেয়েটি খুব সুন্দর এবং মিশুক। ছেলে বারিউল মেক্সিকো যাওয়ার চেষ্টা করছে। ভিসা পাওয়ার পর চলে যাবে।
উল্লেখ্য, রবিউল হাসান রুমান জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে। তিনি ময়মনসিংহের রুমডো ইনস্টিটিউট অব মডার্ন টেকনোলজি থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা শেষ করে ফ্রিল্যান্সিং করছেন। লাইলী আক্তার ২০১৬ সালে মেক্সিকোর একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করেন। তার বাবা একজন ব্যবসায়ী।
প্রসঙ্গত, ভিসা পেলে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটবে এবং প্রবাসী স্ত্রীর সাথে ওই দেশেই বসবাসের ইচ্ছা পোষন করেন বাংলাদেশী এই যুবক। ভালোবাসা মানুষের অসম্ভ কাজকে সম্ভব করতে এটি তার বাস্তব প্রমাণ।