ঢাকাই সিনেমার অন্যতম কিংবদন্তি ও খ্যাতিমান অভিনেতা মাসুদ পারভেজ। তবে পর্দায় ‘সোহেল রানা’ হিসেবেই ভক্তদের মাঝে অধিক পরিচিত পেয়েছেন তিনি। অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজক ও চিত্রপরিচালক হিসেবেও ভক্তদের মাঝে বেশ সাড়া পেয়েছেন তিনি। এদিকে সম্প্রতি একটি সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন গুণী এই অভিনেতা। সেখানে স্মৃতিচারণ করেন প্রয়াত বন্ধুকে নিয়ে।
সদ্য প্রয়াত পরিচালক আজিজুর রহমান বুলি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কী আর বলব? বলার কি আছে? ভাষা হারিয়ে ফেলেছি, কোন ভাষা নেই। কোন অনুভুতি নেই. কেমন যেন পাথরের মত হয়ে গেছি। সবকিছু কেমন যেন কুয়াশার মতো লাগছে। বুলির মৃত্যুর খবর শোনার পর আমি সত্যিই ভালো নেই।
বন্ধুত্ব সবার সাথে হয় না, কারো কারো সাথে হয়। আজিজুর রহমান বুলি খুব ভালো বন্ধু ছিলেন। তার সাথে গভীর বন্ধুত্ব ছিল। এই জীবনে এমন বন্ধু আর হবে না। আমার বন্ধু ডাকার কেউ নেই। খুব একা হয়ে গেলাম। “আমি বড় একা হয়ে গেলাম” তিনি বলেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এখন ভয় লাগছে। আমার খুব ভয় লাগছে। কত মানুষকে হারিয়েছি? কত চেনা মানুষ চলে গেছে চিরতরে। যারা চলে যায় তারা কখনো ফিরে আসে না। বুলিরা আসবে না। বারবার চোখে ভেসে উঠছে তার মুখ। আমি ৫০ বছর আগের কিছুই মনে করতে পারছি না। তার পরিচালিত ও প্রযোজিত সিনেমার নামটাও মনে করতে পারছি না।
সোহেল রানা বলেন, “আমি জোর দিয়ে বলতে পারি যে বুলির মতো ভালো মনের মানুষ ছবিতে আর কেউ নেই। আর দেখতে পাব বলে মনে হয় না। সবসময় খুশি থাকতে ভালোবাসতাম। কখনো রাগী বুলি দেখিনি। তার হাসি অনেকদিন মনে থাকবে।আড্ডার স্মৃতির কোন শেষ নেই।আমরা দিনরাত একসাথে আড্ডা দিতাম।বুলির সবসময়ই একটা আইডিয়া ছিল ফিল্মকে আরও উঁচুতে নিয়ে যাওয়ার। সৃষ্টির নেশায় থাকত। যার জন্য এতগুলো সিনেমা করতে পেরেছিল।’
‘ভীষণ কষ্ট পাচ্ছি আমি। দুই চোখ বেয়ে সমানে অশ্রু ঝরছে। আর কথা বলতে পারছি না। বুলি যেন শান্তিতে থাকে। এটুকুই আল্লাহর কাছে চাওয়া।’
উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালে ‘ওরা ১১ জন’ নামক একটি সিনেমায় প্রযোজকের হিসেবে অভিনয়ের জগতে পা রাখেন সোহেল রানা। এরপর ধীরে ধীরে অভিনয় শুরু করেন তিনি। বর্তমানে তার ঝুলিতে রয়েছে একাধিক ব্যবসায় সফল সিনেমা।