অনেক মানুষ অভাবের তাড়নায় চুরি করে আবার অনেকে অভ্যাসগত কারণে চুরি করে থাকে। চুরি করা খুব ঘৃণ্য ও অপরাধমূলক কাজ। চোররা মানুষের অনেক দামি ও গুরুত্বপূর্ণ জিনিস চুরি করে নিয়ে যায়। সম্প্রতি জানা গেল এক হাস্যকর ঘটনা। চোর চুরি করে তার নিজের মোবাই নাম্বার রেখে যায় এবং চুরি হওয়া জিনিস ফেরত পেতে চোরের নাম্বারে ফোন করে টাকা দিয়ে চুরি হওয়া জিনিস ফেরত আনতে হয়।
অপহরণ ও মুক্তিপণ সাধারণ ঘটনা। এখন বিদ্যুতের মিটার চুরি করে টাকার বিনিময়ে ফেরত দেওয়ার ঘটনার কথা জানা গেছে। মানিকগঞ্জের সদর উপজেলায় এমন একাধিক ঘটনা ঘটেছে। তবে তিন-চার মাস ধরে মিটার চুরির ঘটনা ঘটলেও চোরদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না।
তাই আ/তঙ্কে রয়েছেন বিদ্যুৎ গ্রাহকরা। ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চুরির পর মিটার বোর্ডে একটি মোবাইল নম্বর রেখে যায় চোরের দল। যদি তারা উল্লিখিত নম্বরে যোগাযোগ করে এবং তাদের দাবিকৃত অর্থ প্রদান করে, মিটারটি ফেরত দেওয়া হয়। চুরি যাওয়া মিটারের পরিবর্তে নতুন মিটার সংযোগ দিতে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ ছাড়াও নানা সমস্যায় পড়তে হয়। মূলত ঝামেলা এড়াতেই চোরের প্রস্তাবে রাজি হয়েছেন মিটার মালিকরা। ভুক্তভোগীরা জানান, চোরের দলও এ সুযোগ নেয়। তারা জানান, প্রতি বছর ৫ হাজার টাকা দিলেই চোরেরা মিটার চুরির হাত থেকে বাঁচানোর হুমকি দেয়।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের কাছে হারুন শিকদারের সরিষার তেলের মিল। মিলের দায়িত্বে আছেন বড় ভাই আলমাস শিকদার। তিনি জানান, গত ঈদের কয়েকদিন আগে সকালে মিল চালু করতে গিয়ে দেখেন বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। মিলের বাইরের দেয়ালে কোনো মিটার লাগানো নেই। তার বদলে পলিথিনের প্যাকেটে মোড়ানো সাদা কাগজ মিটার বোর্ডে টাঙানো হয়। কাগজে মোবাইল নম্বর লেখা আছে। ওই নম্বরে যোগাযোগ করা হলে উপরের দিক থেকে মিটারের বদলে ১০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা কথা কাটাকাটির পর অবশেষে ছয় হাজার টাকায় চুক্তি হয়। ওই নম্বরে ছয় হাজার টাকা দেন আলমাস শিকদার। এরপর নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের জাগীর সেতুর পশ্চিমে একটি জঙ্গল থেকে মিটারটি উদ্ধার করা হয়।
এমনই ঘটনা ঘটেছে মানিকগঞ্জ পৌর এলাকার লাউখন্ডা গ্রামের শুকুর আলী সেচ প্রকল্পে। এ ঘটনায় তিনি সদর থানায় জিডিও করেন। মিটারের বোর্ডে টাঙানো মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে ১০ হাজার টাকা দাবি করা হয় বলে জানান তিনি। অনেক দর কষাকষির পর 6000 টাকা দেয় ভাকসা। পরে তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী হারিয়ে যাওয়া মিটারটি ব্র্যাক অফিসের পেছনের বনভূমি থেকে উদ্ধার করা হয়।
নিহত জামাল উদ্দিনের ভাই আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন মিটারে সংযোগ দিতে কমপক্ষে ৩০ হাজার টাকা লাগবে।’
এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম ওবায়দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মিটার চুরির বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি; তবে গ্রাহকদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ পাইনি। ‘
মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ গোলাম আজাদ খান বলেন, বিদ্যুতের মিটার চুরির রহস্য উদঘাটনে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, চুরি করা খুব কাহারাপ একটি কাজ। চুরি করলে আত্মার স্বাধীনতা নষ্ট হয়ে যায়। প্রায় শোনা যায় চুরির ঘটনা। চোররা চুরি করতে গিয়ে অনেক সময় খুব হিংস্র মনোভব ও আচরণ করে থাকে। চোর আ/তঙ্ক খুব বাজে একটি বিষয়।