খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সরকার তাকে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসা নিতে দিচ্ছে না। এর কোনো খারাপ পরিণতি হলে তার দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে। ফলে দেশে গৃহযু’দ্ধের সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে।
গণতান্ত্রিক মঞ্চের অন্যতম নেতা ও বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক আয়োজিত ‘একতরফা নির্বাচনের পাঁয়তারা, সম্ভাব্য বিপর্যয় ও জনগণের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে ড.
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার কিছু হলে তার দায় আওয়ামী লীগ কোনোভাবেই এড়াতে পারবে না। এ ব্যাপারে তাদের সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। এটা না করলে প্রতিহিংসার রাজনীতির দেয়াল বাড়তেই থাকবে। ফলে গৃহযু’দ্ধের সৃষ্টি হতে পারে।
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বিরোধীদের মোকাবিলা করার কোনো কর্মসূচি আওয়ামী লীগের নেই। তারা নৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়েছে। দল হিসেবে তাদের মৃত্যু গত তিন মাসে ওবায়দুল কাদের ও তথ্যমন্ত্রীর কথায় স্পষ্ট।
সরকার এখন তাদের অধীনে নির্বাচন হবে এটাও জোরগলায় বলতে পারছে না জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বিদেশ সফর শেষে দেশে এসে তলে তলে আপসের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী কিছু বলেননি। সংবাদ সম্মেলনে তার যে রাগ, ক্ষোভ অভিমান প্রকাশ পেয়েছে; তাতে এ সফর যে কোনো কাজে লাগেনি সেটা বোঝা গেছে। তাদের অধীনে আগামী নির্বাচন হবে সেটাও জোর দিয়ে তারা আর বলতে পারছে না।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সরকার নির্বাচনে যেতে পারবে বলে মনে হয় না। আমার মনে হয় না সরকার তফসিল ঘোষণা করতে পারবে। আমরা লড়াই ছেড়ে দেব না। সমঝোতার কোনো অবকাশ নেই। পুজোর পর আমরা ভালো আসব, ভালো এসো সেটা সরকারের জন্য খারাপ হবে।
প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য সফরে কোনো প্রাপ্তি নেই জানিয়ে তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী, সরকার, ওবায়দুল কাদেরের করার কিছু আছে বলে দেখছি না। করার থাকলে ৫ দিন ওয়াশিংটনে গিয়ে বসে থাকেন? তিনি সেখানে কি করেছেন কেউ জানে না। পরে জানলাম চিফ অফিসিয়ালের সঙ্গে দেখা করেছেন। তিনি আমেরিকার ন্যাশনাল সিকিউরিটি দেখেন। তার কাছে আপনার তদবির করতে হয়? এ সরকারের কী অবস্থা আমরা বুঝতে পারি না?
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, সংসদের শেষ অধিবেশনে তফসিল ঘোষণার টেবিল থেকে বেরিয়ে নির্দলীয় সরকার গঠন করে তিনি সম্মানের সঙ্গে বিদায় নিতে পারেন। সবকিছু উপেক্ষা করে একতরফা নির্বাচনে গেলে বাংলাদেশের মানুষ তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন শুরু করবে।
তিনি আরও বলেন, রিজার্ভ, রেমিট্যান্স কমছে, চোরাচালান বাড়ছে, সাধারণ মানুষের ওপর ভয়া’বহ চাপ আসছে, মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। অর্থনৈতিক বিপ’র্যয় হলে সব ক্ষেত্রেই বিপর্যয় আসবে। যেহেতু এই সরকার ইতিবাচক পথে হাঁটবে না, তাই জনগণকে সংগ্রাম করে এগিয়ে যেতে হবে।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সহ-সভাপতি তানিয়া রব, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ।