বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদন প্রত্যাখ্যানের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা চাইতে পারে বলে জানিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। সোমবার (২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবীর প্রশ্ন বেগম জিয়ার জীবন-মৃত্যুর দায় সরকার কেন নিচ্ছে? তবে খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রের আইন মানতেই হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বিদেশে চিকিৎসা নিতে পারবেন না- আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গতকাল রোববার (০১ অক্টোবর) আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারের অবস্থান ঘোষণা করেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে গত কয়েকদিনের আলোচনা অনসান ঘটে। তবে এমন সিদ্ধান্তে বেগম জিয়ার আইনজীবীরা হতাশ ও উদ্বিগ্ন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, সরকার কেন বেগম জিয়ার জীবন নিয়ে ঝুঁকি নিচ্ছে, এটি তাদের বোধগম্য নয়। এরপরও পরিবারের চাইলে সিদ্ধান্ত পুর্নরবিবেচনা চাইতে পারবে। আর দলীয়ভাবে বসে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে পরবর্তী করণীয়।
তিনি আরও বলেন, আদালতের সমস্ত কিছু প্রসেস এগজাস্ট করেই আমরা ৪০১ ধারা প্রয়োগের জন্য বলেছি। সরকার মানবিক দিকটা বিচার বিশ্লেষণ না করে তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে খালেদা জিয়াকে বাঁচিয়ে রাখতে চায় না। তবে বিদেশে চিকিৎসার আবেদন নাকচের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা চাইতে পারে পরিবার।
এদিকে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাসান চৌধুরী বলেছেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা দিতে গেলে দুটি উপায় আছে। একটি শর্তসাপেক্ষে মুক্তির আদেশ বাতিল চাওয়া, বাতিল হলে জেলে গিয়ে আবেদন করা। অন্যটি অপরাধ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে সাজা মওকুফের আবেদন করা।
তিনি আরও বলেন, ৪০১ ধারার অধীনে যেসব সুবিধা পাচ্ছেন তা বাতিল করে তাকে (খালেদা জিয়া) কারাগারে যেতে হবে। তিনি অবিলম্বে বিদেশে চিকিৎসার জন্য আদালতে আবেদন করতে পারেন। অন্যদিকে অপরাধ স্বীকার করে তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে সাজা মওকুফের আবেদন করতে পারেন। রাষ্ট্রপতি উপযুক্ত মনে করলে তার সাজা মওকুফ করতে পারেন।
নানা শারীরিক জটিলতায় ৫৪ দিন ধরে রাজধানীর এভারকেয়ারে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দলের চিকিৎসকরা বলছেন, তার শারীরিক অবস্থার উন্নতির কোনো লক্ষণ নেই।
এদিকে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সরকারের পতনের দাবিতে নয়াপল্টনে বিক্ষোভ সমাবেশ করছে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল। নেতাকর্মীরা শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। এ সময় তারা অভিযোগ করেন, সরকার একতরফা নির্বাচন পরিচালনার প্রতিশোধ নিয়ে বেগম জিয়াকে মুক্তি দিচ্ছে না। রাজপথে কঠোর আন্দোলনে নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠাসহ সব দাবি পূরণ করা হবে।