Monday , December 23 2024
Breaking News
Home / Countrywide / খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়ে যা বললেন কানাডার দুই পুলিশ সদস্য

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়ে যা বললেন কানাডার দুই পুলিশ সদস্য

কানাডার দুই পুলিশ কর্মকর্তা আদালতকে জানান, কানাডার তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানি নাইকোতে কাজ পেতে ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ও ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়ার মধ্যে অর্থের লেনদেন হয়।

সোমবার (৩০ অক্টোবর) এনআইসিও দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে এসে কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ সদস্য কেভিন ডুগিয়ান ও লয়েড স্কুইপ এসব কথা বলেন।

লয়েড স্কুইপ বলেন, তৎকালীন সরকারের কিছু কর্মকর্তা কানাডিয়ান তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান কোম্পানি নাইকো-তে দুর্নীতিতে ইন্ধন জুগিয়েছিলেন। আমরা মিডিয়ার খবর দেখে এই দুর্নীতি সম্পর্কে জানতে পারি। নাইকোর কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার জন্য কানাডায় নাইকো রিসোর্সেসের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে।

এর আগে, সোমবার বেলা ১১টার দিকে কেরানীগঞ্জের অস্থায়ী আদালতে যান কানাডিয়ান রয়্যাল পুলিশের দুই সদস্য কেভিন দুগিয়ান ও লয়েড স্কুইপ। পরে, সাড়ে এগারোটার দিকে লয়েড শোয়েপের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান তার সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জেরা করেন।

আলোচিত এ মামলায় সাক্ষ্য দিতে গত ২৮ অক্টোবর রাতে ঢাকায় আসেন তারা। রোববার অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও দুদকের প্রধান আইনজীবী খুরশীদ আলম খানের সঙ্গে বৈঠক করেন কানাডার রয়্যাল পুলিশের দুই সদস্য।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ৯ নম্বর (অস্থায়ী) বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান সাক্ষ্য দিতে ৩০ অক্টোবর তাদের আদালতে আসার সময় দেন। এদিন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলমের জিজ্ঞাসাবাদের দিন ধার্য ছিল। খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী হাজিরা দাখিল করেন।

এরপর খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন তাদের আইনজীবীরা। জেরা শেষ হওয়ায় পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৩০ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন আদালত।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) একজন এবং কানাডিয়ান রয়্যাল মাউন্টেড পুলিশের দুজনকে সাক্ষ্য দেওয়ার অনুমতি দেন আদালত। তারা হলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের অবসরপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক বিশেষ এজেন্ট, ডেব্রা লাপেরিবট গ্রিফিথ, কানাডিয়ান এবং রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের সদস্য, মিঃ কেভিন ডুগান এবং লয়েড স্কুইপ।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী জিয়া উদ্দিন জিয়া ও হান্নান ভূইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বাকি আসামিরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব মো. বাপেক্সের সিএম ইউসুফ হোসেন। সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর মঈনুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকো দক্ষিণ এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

এদের মধ্যে একেএম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় তারা মামলা থেকে খালাস পান।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম। কানাডিয়ান কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে দুর্নীতি ও রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতির অভিযোগে মামলাটি করা হয়।

এরপর ২০১৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে রাজ্যের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ রয়েছে। ২০২৩ সালের ১৯ মার্চ কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৯ নম্বর (অস্থায়ী) বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ গঠন করেন।

 

 

About bisso Jit

Check Also

ভারতের গণমাধ্যমে প্রতিবেদন ফাঁস, বন্দিদের ভারতে পাঠাতেন শেখ হাসিনা

ভারতের গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *