রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে আবারও কেবিন থেকে করো”নারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়েছে।
শনিবার রাত ৯টার দিকে তাকে সিসিইউতে নেয়া হয় বলে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনের বরাত দিয়ে বিএনপির মিডিয়া সেলের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য জানান, বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থার গুরুতর অবনতি হলে তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। নতুন ইসিজি, এক্স-রে সহ কয়েকটি পরীক্ষা করা হয়েছে। প্যারামিটারগুলো ওঠানামা করছে। তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে এখনও উদ্বিগ্ন বোর্ড। কারণ তিনি ভয়মুক্ত নন। যে কোনো সময় পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশ’ঙ্কা রয়েছে। শারীরিক দুর্বলতার কারণে অনেক ওষুধ খেতে চান না বিএনপি চেয়ারপারসন। আর তাকে সব সময় স্যালাইন ও ইনজেকশনে থাকতে হয়। দুদিন আগে রক্তে হিমোগ্লোবিনের কিছুটা উন্নতি হলেও আবার কিছুটা কমেছে।
ইনসুলিন দিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন চিকিৎসকেরা। বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে লিভারের সমস্যা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। কিন্তু লিভার ট্রান্সপ্লান্ট ছাড়া স্থায়ী কোনো সমাধান নেই। বোর্ড সভা করে এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য রিপোর্ট দেখে নিয়মিত চিকিত্সা পরিবর্তন করছে। কিছু রিপোর্ট একাধিক হাসপাতালে পরীক্ষা করা হচ্ছে। বোর্ড সাধ্যমত চেষ্টা করছে। লিভারের পাশাপাশি তার কিডনির জটিলতা ও ডায়াবেটিসের মাত্রা বাড়ছে। কিডনির ক্রিয়েটিনিন মাঝেমধ্যে বর্ডার লাইনের কাছাকাছি চলে যাচ্ছে। ফলে একটিকে কমাতে গেলে আরেকটিতে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। বোর্ড জরুরি ভিত্তিতে তার লিভার প্রতিস্থাপনে জোর দিচ্ছে, যা বাংলাদেশে সম্ভব নয়।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক অধ্যাপক এফ এম সিদ্দিকী বলেছেন, বেগম জিয়া প্রাথমিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না। তার লিভার ট্রান্সপ্লান্ট দরকার। আমরা যে চিকিৎসা দিই তা তাৎক্ষণিক। তার জরুরি ভিত্তিতে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। তা না হলে যে কোনো সময় তার মৃ”ত্যু হতে পারে। লিভারের সংক্রমণের কারণে বারবার পেটে পানি চলে আসছে বেগম জিয়ার। উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করছে না। পেট থেকে পানি হৃদপিন্ডে পৌঁছে যাচ্ছে। এ জন্য গতকালসহ ইতোমধ্যে তাকে চারবার সিসিইউতে নেওয়া হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন গত ৯ আগস্ট হাসপাতালে ভর্তি হন। এর আগে ১২ জুন তিনি এ হাসপাতালে আসেন। ওই সময় তাকে পাঁচ দিন চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকতে হয়। ৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে বাত, ডায়াবেটিস, কিডনি ও লিভারের জটিলতা এবং হৃদরোগে ভুগছেন।