চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সাম্প্রতিক সময়ে যে ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনা ঘটেছে সেটা আমাদের দেশের জন্য একটি অশনি সংকেত। এটা বিএনপির কোন কর্মকান্ড ভেবে হালকাভাবে দেখা হবে না নিশ্চয়। এমন ধরনের ঘটনা আমরা কল্পনাও করতে পারি না কখনো। এই অগ্নিকাণ্ডে নয় জন সাহসী ও নির্ভীক দমকলকর্মী প্রয়াত হয়েছেন। নষ্ট হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ ও পন্য দ্রব্য। বর্তমান সময় পর্যন্ত ৫০ জনেরও বেশি লোক তাদের প্রাণ হারিয়েছেন। পাঁচ’শোর বেশি মানুষ আহত হয়েছেন, এদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিবেন, সেটা কেউ জানেনা।
সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ভ’/য়াব’হ অগ্নিকাণ্ড দেশের জন্য একটি অশনি সংকেত। এটা বিএনপির কাজ বলে অবশ্যই হালকাভাবে নেওয়া হবে না। এমন ভ’য়াব/হ ধ্বং”সযজ্ঞ আমরা কল্পনাও করতে পারি না। অগ্নিকাণ্ডে নয়জন দমকলকর্মী প্রয়াত হয়েছেন। হাজার হাজার কোটি টাকা নষ্ট হয়েছে। এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক প্রাণ হারিয়েছে। আহ’ত হয়েছেন পাঁচ শতাধিক মানুষ। তাদের মধ্যে কতজন প্রাণ হারাবেন কেউ জানে না। হ’/তাহ”তের সংখ্যা যে আরও বাড়বে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। আশা করি, সরকার এই আগুন ও ধ্বং’/সলীলাকে হালকাভাবে নেবে না।
এটা হয় অবহেলা বা শি”শুসুলভতার প্রতিফলন অথবা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বং’/স করার আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের প্রতিফলন। এখন কারো টাকা থাকলে তারা সরকারি লোক হয়ে যায়। পোশাকে, আশায়, আচরণে এমনকি রাজা-বাদশাহও পরাজিত। এ ঘটনার যথাযথ প্রতিকার বা ব্যবস্থা না নিলে আমাদের অর্থনীতি ভেঙে পড়বে। তাই অযথা কাউকে দোষারোপ না করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করা উচিত। যাঁদের কোনো কিছু ঠিকমতো পরিচালনা করার ক্ষমতা নেই, তাঁদের জন্য এভাবে রাসায়নিকের সঙ্গে মোকাবিলা করা মৃ”ত্যুর সঙ্গে খেলার মতো। তাই আশা করি সরকার দেশের স্বার্থ বিবেচনা করবে।
আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন হতে যাচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। দেশে অনেক সেতু রয়েছে। সব সেতুই স্বপ্ন নয়, এমনকি কল্পনাও নয়। কিন্তু পদ্মা সত্যিই স্বপ্নের সেতু। আমরা পাকিস্তানে থাকলে পদ্মা সেতু তো দূরের কথা, বুড়িগঙ্গায় সেতু থাকত না। এই সবে শুরু স্বাধীনতার সুফল। স্বাধীনতা কোনো তুচ্ছ বিষয় নয়। স্বাধীনতা একটি জাতির মুক্তির দ্বার। একটি ছোট ঘরের দরজা খুলে যেমন পৃথিবী দেখা যায়, তেমনি একটি ভূমির স্বাধীনতা একটি জীর্ণ কুটিরের দরজা খুলে দেওয়ার মতো। পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক তোলপাড় হয়েছে। পদ্মা সেতু কোনো ব্যক্তির নয়, পদ্মা সেতু সমগ্র জাতির, পদ্মা সেতু বাংলাদেশের, বাংলাদেশের মানুষের রক্ত-ঘামের বাস্তবায়ন। এই সেতু দিয়ে যেমন জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ছোট করা উচিত নয়, তেমনি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাও পদ্মা সেতু নির্মাণ করেননি। পদ্মা সেতু নির্মাণে শেখ হাসিনার অবিস্মরণীয় অবদান রয়েছে। তার অট”ল সংকল্প না থাকলে হয়তো এখন পদ্মা সেতু তৈরি হতো না। এই ক্ষেত্রে, তার অধ্যবসায় এবং সাবলীলতা বিজয়ী হয়।
বিশ্বব্যাংক প্রত্যাহার করে নিলে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা সারা বিশ্বকে বিস্মিত করে। অনেকেই বিষয়টি বিশ্বাস করতে চাননি। নিজ উদ্যোগে বা অর্থায়নে পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন করা পুরুষের গ’র্ভে সন্তান ধারণের মতো অকল্পনীয় মনে হয়েছে। তবে ভুল যাই হোক না কেন, পদ্মা সেতু এখন বাস্তবতা। ‘ওই নূতন কেতন উড়েছে… তোমরা সকলে আনন্দে চিৎকার কর’ নতুন আসবে, নতুন হবে পুরাতন, নতুন আবার দেখা দেবে দিকে কাঁপছে। এই পৃথিবীতে কোন কিছুই সময়ের মত নতুন নয়, কিছুই পুরানো নয়। আমরা কিছুই তৈরি করতে পারি না। আমরা কেবল মহান স্রষ্টার সৃষ্টিকে রূপান্তর করতে পারি। আকৃতি বদলাতে পারি, কাঠ-বাঁশ কেটে এই কাজ করতে পারি, বাড়ি বানাতে পারি, দালান বানাতে পারি- এরকম আরও অনেক কিছু করতে পারি।
কিন্তু আদি সৃষ্টি আমাদের হাতে নয়, সবকিছুই স্রষ্টার হাতে। পদ্মা সেতুর নামকরণ না করেই সবচেয়ে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেতুটির নামকরণ নিয়েও ভবিষ্যতে গবেষণা করা হবে এবং সেই গবেষণার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রশংসিত করা হবে। কারণ এখন তার ইচ্ছা ছাড়া গাছের পাতা নড়ে না, বাতাস বইছে না, পদ্মার পানি প্রবাহিত হয় না। তাই কেউ বিশ্বাস করুক বা না করুক, আমি বিশ্বাস করি পদ্মা সেতুর নামকরণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছারই প্রতিফলন। তাই আমি বলবো, পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে কখন গাড়ি চলবে, পার হওয়ার জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হবে না, মাথা ঘামাতে হবে না। পদ্মাপাড়ে তোলপাড়, হাজার হাজার মানুষের জীবিকার উৎস, তারা কোথায় যাবে, তাদের কী হবে, আদৌ খেতে পারবে কি না, তার খোঁজ কেউ রাখবে না। কত সোনার পরিবার অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে, কত ফল বিক্রেতা, কত ছোট মাছ বিক্রেতা, কত হোটেল মালিক-কর্মচারী পদ্মার জলের মতো ভেসে যাবে তার হিসাব কেউ হয়তো রাখবে?
আমি যখন ছোট ছিলাম তখন কালিহাতী ও পুংলীতে দুটি ফেরি ছিল। বিহার-উড়িষ্যা বা মধ্যপ্রদেশের কিছু লোক দুই তীরে কত দোকান-ফেরি চলে। এটি সম্ভবত তাদের ব্যবসার ধরন। অন্যান্য ছোট ফেরিতেও অবাঙালিদের দেখতাম। কালিহাতী ও পুংলি সেতুর পর আর কোনো দোকান নেই, নেই কোনো অবাঙালি পাটনিও। পদ্মা সেতু চালু হলে দুই পাশের বাতি জ্বলবে এবং ইন্দ্রপুরীর সংকেত মিশে যাবে অন্ধকারে। তাদের নিয়ে ভাবার, ভাবার কিছু আছে। অন্যদিকে পদ্মা সেতুর টোল নিয়ে যা শুনছি তা খুব একটা যুক্তিযুক্ত নয়। পদ্মা সেতু টোল নিয়ে ব্যবসা করার জন্য নির্মিত হয়নি।
পদ্মা সেতুর জন্য জাতীয় অর্থনীতির যে উন্নতি হবে তা কয়েক বছরের মধ্যে পদ্মা সেতুর ব্যয়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি হবে। তাই অকল্পনীয় টোল নির্ধারণ কখনই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে না। আমাকে প্রশ্ন করলে বলবো পদ্মা সেতুর টোল দিয়ে সেতুর দাম বাড়ানোর মানসিকতা সম্পূর্ণ সেকেলে, অর্থহীন। পদ্মা সেতু জাতীয় আয়ে অবদান রাখবে। সেজন্য সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য লোক থাকবে, পাশাপাশি তাদের গাড়ি চলাচলের ট্র্যাক রাখার জন্য টোল থাকবে। তবে তা মোটেও ফেরি পারাপারের অর্ধেকের বেশি হওয়া উচিত নয়। কিন্তু তা ফেরি পারাপারের মাশুলের অর্ধেকের বেশি হওয়া মোটেই উচিত নয়। মোটরসাইকেল ১০-২০ টাকা, ছোট গাড়ি ১০০, বড় গাড়ি ৪০০-৫০০, তারও বড় গাড়ি বড়জোর হাজারের ওপর টোল হওয়া উচিত নয়। জানি আমার পরামর্শ বা ভাবনা অনেকের পছন্দ হবে না। বঙ্গবন্ধু থাকলে, হুজুর মওলানা ভাসানী থাকলে তাঁরা অবশ্যই শুনতেন, মানতেন।
পদ্মা সেতু কারো একক অর্জন নয়, শুধু কোনো সরকারের নয়। এর কৃতিত্ব দেশবাসীকে দিতে হবে। আমার গাড়ির চালকও পদ্মা সেতুতে অবদান রেখেছেন, আমার টাকা আছে, আমার স্ত্রী আছে, আমার সন্তান আছে। আমরা যখন পদ্মার জন্য তহবিল সংগ্রহ শুরু করি, তখন আমরা টাকা দিয়েছিলাম। যখন পদ্মার জন্য তহবিল সংগ্রহ করা শুরু হয়েছিল তখনই আমরা ২-৪ হাজার টাকা দিয়ে ভূমিকা রেখেছিলাম। কম-বেশি অর্থ সাহায্য করছে তা ভ্যাট বা কর বা জমি ভাড়ার মাধ্যমেই হোক। যে কোনোভাবে ১৬ কোটি মানুষের একটি ভূমিকা আছে।
বর্তমান সরকার অনেক ক্ষেত্রেই জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টিতে ব্যর্থ হয়েছে। রো”হি’/ঙ্গাদের আগমনে সারাবিশ্বে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছিল, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগের প্রাদুর্ভাবের সময়ে তা সম্ভব হয়েছিল, আরব দেশগুলোতে যখন চরম উত্তে”জনা ছিল তখন তা সম্ভব হয়েছিল। সরকার ও অভিজ্ঞ দল আওয়ামী লীগও পদ্মা সেতু নিয়ে সার্বিক জাতীয় ঐক্যের চেষ্টা করতে পারে। সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কথা দেশের মানুষের মনে গভীর প্রভাব ফেলেছে, ‘সেতু উদ্বোধনে সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এমনকি আইনে কোনো বাধা না থাকলে বেগম খালেদা জিয়াকেও দাওয়াতের তালিকায় রাখা হবে।’ খুবই মূল্যবান কথা। আইনে অনেক কিছুই থাকে। তার পরও বিশেষ বিবেচনায় সরকার অনেক কিছু করতে পারে। সেতু আরও অনেক হবে, আরও অনেক ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটবে। কিন্তু এ পদ্মা সেতু আর হবে না। এটা বিশ্বের বিস্ময়, বিশেষ করে বাঙালির জন্য। ২-৪-১০-২০ বছর পর পদ্মায় হয়তো আরও সেতু হবে।
কিন্তু মাওয়া-কাঁঠালবাড়ি পদ্মা সেতু আর হবে না। তাই পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হবে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। পদ্মা সেতু যেমন বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের একটি স্বতন্ত্র পরিচয় এনে দিয়েছে, তেমনি পদ্মা সেতু নিয়েও অনেকের মোহভঙ্গ হয়েছে। তাই পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগেই প্রতিকার করতে হবে। বাংলাদেশের জন্মের পর কোনো প্রকল্পে অনিয়মের কারণে কোনো মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হয়নি। পদ্মায় দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগ করতে হয় সৈয়দ আবুল হোসেনকে। আমার ভাগ্নে, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী কায়সারকে কল’ঙ্কিত হতে হয়েছে। সাবেক সচিব এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন এমনকি ইলিয়াস দাদাভাইয়ের ছেলে নিক্সনকেও কল”ঙ্কিত করা হয়েছে। যে আদালত তাদের নির্দোষ, নির্দোষ, নির্দোষ প্রমাণ করেছে সরকার তার সাথে কী করেছে? আমার হওয়া উচিত তাদের জন্য গর্বিত।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংককে আমন্ত্রণ জানানোর কথা যেমন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, তেমনি একদিকে প্রধানমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের আসন কী হবে। অন্যদিকে সেতুমন্ত্রী? পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধনের একদিনের জন্য হলেও সৈয়দ আবুল হোসেনকে তার মন্ত্রিত্ব ফিরিয়ে দেওয়া উচিত। এটা রাষ্ট্রীয় প্রতিশ্রুতি। রাষ্ট্র কখনো রাষ্ট্রীয় প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করতে পারে না। দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগ করেন আবুল হোসেন। কানাডার আদালত তাকে খালাস দিলেই সৈয়দ আবুল হোসেনের মন্ত্রিত্ব পুনর্বহাল করা উচিত ছিল। কিন্তু না, তাকে মন্ত্রিত্ব দেওয়া হয়নি। প্রশ্ন হল কেন নয়। এমনটা তো হওয়ার কথা নয়।
সৈয়দ আবুল হোসেন প্রধানমন্ত্রীর প্রকৃত ভক্ত। আমি বঙ্গবন্ধুকে যেভাবে ভালোবাসি, সৈয়দ আবুল হোসেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সেভাবে ভালোবাসেন বলে আমার বিশ্বাস, হয়তো আমার থেকেও বেশি। কেন সেই মানুষটি তার হারানো ভাবমূর্তি ফিরে পায় না? পদ্মা সেতু একটি ঐতিহাসিক বিষয়। এর শুরুতে যিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, তিনি যাই বলুন না কেন, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের জীবনের শ্রেষ্ঠ সৌভাগ্য তাঁর তত্ত্বাবধানে পদ্মা সেতু সম্পন্ন হয়েছে। এটি তার জীবনের একটি চূড়ান্ত সত্য এবং একটি গভীর সম্মান ও গৌরবও বটে। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দুই পাশে বসে উদ্বোধন করাটা খারাপ কিছু হবে বলে মনে হয় না। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে।
সেদিন যদি আমাদের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবীর আতাউল গণি ওসমানী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে থাকতেন, তাহলে একদিকে মিত্রবাহিনীর ইস্টার্ন চিফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা এবং অন্যদিকে পরাজিত জেনারেল টাইগার আমির আবদুল্লাহ নিয়াজী স্বাক্ষর করতেন। দুই পক্ষেই. ওসমানী একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ভার্সাই চুক্তির চেয়ে বেশি মর্যাদাপূর্ণ হত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা, দুই পক্ষের দুই মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও ওবায়দুল কাদের পদ্মার পাড়ে সেতু উদ্বোধনের মাঝখানে থাকলে কী হবে?
বহু বছর আগে মুঘল সম্রাট হুমায়ুন পাঠান বীর শের শাহের সাথে যু”দ্ধে হেরে পালানোর পথে যমুনা নদীতে ডুবে মা’/রা যান। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করেন এক ভিস্তিওয়ালা। পরাজিত সম্রাট হুমায়ুন তার গর্ভ”বতী স্ত্রীকে নিয়ে রাজস্থানের অমরকোটে আশ্রয় নেন। সেই অমরকোটে শ্রেষ্ঠ মুঘল সম্রাট আকবর জন্মগ্রহণ করেন। হুমায়ুন ইরান-তুরানের চারপাশে ভ্রমণ করেন, শক্তি সংগ্রহ করেন এবং দিল্লির সিংহাসন পুনরুদ্ধার করেন। দিল্লি পুনরুদ্ধারের পর মনে হয় সম্রাটের সেই ভিস্তিওয়ালা ছিল।
অনেক খোঁজাখুঁজির পর সেই ভিস্তিওয়ালাকে নিয়ে এসে একদিনের জন্য সম্রাট বা রাজা করলেন। ইদানীং সমাজে খুব একটা ভালো মানুষ দেখা যায় না। আইনের আদালত নির্দোষ প্রমাণ করে না। সৈয়দ আবুল হোসেন কষ্টিপাথরে যাচাইকৃত খাঁটি সোনার মতো খাঁটি হয়ে উঠেছেন। তাই পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধনে একদিনের জন্যও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাকে পাশে রাখবেন এটাই জনগণের প্রত্যাশা। এটা সকলের আশা যে আপনি অন্য যারা ক্ষতিগ্রস্থ এবং অসম্মানিত হয়েছেন তাদের যথাযথ সম্মান দেবেন।
এই পর্বে আর কিছুতেই মন চাইছে না। তবুও বিরক্ত মন নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলছি। বৃহত্তর রংপুরের অনেককে চিনি। মন্ত্রী মতিউর রহমান আপনার বিয়ে ঠিক করে দিয়েছিলেন। রংপুরে কত মেধাবী মানুষ ছিল। আমি আপনার বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির কাছ থেকে খুব একটা শুনিনি। বাংলাদেশের মানুষের দুঃখ-দুর্দশায় তিনি দুবার চা খায় বলে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছেন। চালের দাম, তেলের দাম, প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম গরীবদের নাগালের বাইরে। তার ছেলেখেলার কোনো শেষ নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রীকে সামলে নিলে বাজারের অর্ধেক জটিলতা আপনা থেকেই শেষ হয়ে যাবে।
তবে সরকার যাই করুক না কেন এসব দিকগুলো থেকে তাদের শিক্ষা নেয়া উচিত। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দ্রব্যের মূল্য লাগামহীনভাবে বাড়ছে, সেটাও সরকারের দেখা উচিত। কারণগুলো বের করে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্ব সেটা করতে সক্ষম হবে বলে আশা করি।