রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কখনো ভালো আবার কখনো খারাপের দিকে যাচ্ছে। ফলে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসকদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রয়েছেন তিনি। সহসাই তার বাসায় ফেরা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেডএম জাহিদ হোসেন জানান, খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন। এ কারণে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা তাকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রেখেছেন।
জেডএম জাহিদ হোসেন জানান, যত দ্রুত সম্ভব লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু তার স্থায়ী মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
গত ৯ আগস্ট রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে তিনি হাসপাতালের চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। এখন তার লিভার, হার্ট ও কিডনির সমস্যা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর বেগম খালেদা জিয়ার লিভারের সিরোসিস ধরা পড়ে বলে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা জানিয়েছেন।
মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা দুই বছর ধরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছেন। এখন তাদের পরামর্শ হলো, লিভার ট্রান্সপ্লান্টের জন্য খালেদা জিয়াকে জরুরি ভিত্তিতে বিদেশে নিয়ে যাওয়া দরকার।
তার লিভারের জটিলতার জন্য দেশের সেরা চিকিৎসা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এ ছাড়া দেশে তাদের চিকিৎসার আর কিছু নেই।
বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বলছেন, খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিসের কারণে এই অঙ্গটি অনেক আগেই সংকুচিত হয়েছে। বর্তমানে এর কর্মক্ষমতা প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। এ অবস্থায় তার লিভারে জটিলতা বেড়েছে এবং তার রক্তক্ষরণের ঝুঁকি রয়েছে। এমনও হয় যে অনেক সময় লিভারের অবস্থা একটু ভালো হলেই হৃদরোগের সমস্যা বেড়ে যায়। আবার হৃদরোগের চিকিৎসা শুরু করলে অন্যান্য সমস্যা বাড়বে।
এদিকে অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। অন্যথায় সব দায় সরকারকেই বহন করতে হবে বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।