পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণে সহযোগিতার জন্য দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এর সব কৃতিত্ব বাংলাদেশের জনগণের। তিনি বলেন, এভাবে আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি বাংলাদেশের জনগণের কাছে সত্যিই কৃতজ্ঞ। তাদের শক্তি (আমার জন্য) সবচেয়ে বড় শক্তি। রোববার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী সবাইকে শুভেচ্ছা জানান। তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়াল সভায় সভাপতিত্ব করেন।
আলেম ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, হাজী সেলিম প্যারোলে মুক্তি পেতে পারেন, কিন্তু খালেদা জিয়াকে পদ্মা সেতু দেখতে দেওয়া যাবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ভাবুন, আপনার (প্রধানমন্ত্রীর) গাড়ি সামনে থাকবে, তারপর খালেদা জিয়ার গাড়ি, পেছনে তিনজন মুক্তিযোদ্ধা দাঁড়িয়ে থাকবেন। আস্তে আস্তে যাব। এখনো সময় আছে, অন্যদিকে টাকা খরচ না করে চলেন না এক পূর্ণিমার রাতে যাই! এটাই হবে বাংলাদেশ। আগে তাকে মুক্তি দিতে হবে… তাদের (আলেমদের)ও নিয়ে যাই। রোববার (৩ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে হয়রানি মামলায় রাজনৈতিক বন্দি ও ধর্মীয় নেতাদের দীর্ঘ কারাদণ্ড: সুশীল সমাজের উদ্বেগ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। জনমত কেন্দ্র নামের একটি সংগঠন এ সভার আয়োজন করে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম। জাফরুল্লাহ চৌধুরী কারাবন্দি আলেমদের মুক্তির দাবি জানান। প্রয়োজনে হাইকোর্ট ঘেরাও করা হবে বলেও জানান তিনি। ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমি আপনার উপর রাগ করেছি। আপনি এখানে একটা ঘরে বসে মিটিং করেন। আমরা কয়েকবার বলেছি হাজার হাজার লোক নিয়ে হাইকোর্ট ঘেরাও করা চলবে না। আমার পরামর্শ হলো, দুই দিনের মধ্যে তাদের জামিন না দিলে আমরা সবাই অবরোধে থাকব। তাদের মুক্তি না দিলে হাইকোর্টে ঈদের জামাত হবে না। আমরা মাঠ দখল করে সেখানে বসব। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বলেন, আজ আমাদের একমাত্র দাবি সব আলেম-ওলামাসহ সব রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ খালেদা জিয়াকে দুই দিনের মধ্যে মুক্তি দিতে হবে। আসন্ন বাজেটে কৃষি শ্রমিকের কোনো উল্লেখ নেই মন্তব্য করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘বাজেট বুঝতে হলে ১৩০০ পৃষ্ঠা পড়তে হবে। কত মানুষ বই পড়ছে জানি না, সংসদ সদস্যরা কী করছেন জানি না। আমাদের বাজেট চাণক্য পণ্ডিতের চালাকি; চারিদিকে খালি প্যাচ আর প্যাচ।
তিনি আরও বলেন, জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় আমরা কি ১০ তারিখে ঈদ করতে পারব? কিছু মানুষ করবে, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ হাসবে না। আমি আমার বাচ্চার জন্য কাপড় কিনতে পারি না, আমি সেমাই বানাতে পারি না, আমি মাংস পাই না; এখন মাংসের ভাগ নেই। বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার পার্টির চেয়ারম্যান জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম (বীরপ্রতীক) তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা সবাই মিলেমিশে শান্তিতে থাকতে চাই। ভারতের মতো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা আমাদের নেই কারণ আমরা একসঙ্গে থাকতে চাই। এর কৃতিত্ব আওয়ামী লীগের নয়, বাংলাদেশের জনগণের। আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন নাগরিক রিক এর মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি তার বক্তব্যে আলেমদের মুক্তির দাবিকে পূর্ণ সমর্থন জানান। এছাড়াও আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক, এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, বিএফইউজে সভাপতি এম আব্দুল্লাহ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে সড়কপথে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার সকাল ১১টায় প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন বলে জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রী তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে সুরা ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেবেন। বিকেলে তিনি হেলিকপ্টারযোগে টুঙ্গিপাড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে ত্যাগ করবেন।