পদ্মা সেতু নির্মান কাজ শুরু হওয়ার পরে যখন পিলার নির্মানে বাঁধা সৃষ্টি হয় তখনি একটা শুনজন রটে পদ্মাসেতু নির্মানে মাথা লাগবে। সারাদেশে এই নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। সবাই তাদের সন্তানকে সতর্ক করতে থাকে। তারই ভুক্তগোগী হয় রেনু। অনেকে লোকেরা তাকে ছেলে ধরা সাজিয়ে গনপিটুনি দেয়।
এই ঘটনায় তিনি পরলোক গমন করেন। তবে এখনো প্রয়াত তসলিমা আক্তার রেনুকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করে তার পরিবার। ১৬ কোটি মানুষের প্রত্যাশা সেই সেতু উদ্বোধন হতে বাকি আছে পাঁচ দিন। তিন বছর আগে সারা দেশে গুজব ছড়ানো হয়েছিল যে পদ্মা সেতু নির্মাণে শি/ শুদের মাথা লাগবে। যা সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে।
এ সময় রেণুকে ছেলেরা ধরে সরকারের কাছে পাঠিয়েছে বলে গুঞ্জন ওঠে। সেদিন রেণু অপেক্ষা করছিলেন হেডমাস্টারের কাছে বাচ্চাদের ভর্তির খবর জানতে। পদ্মা সেতু কারও কাছে সাহসের প্রতীক, কারও মনে জেগে ওঠা সম্ভাবনা, কেউ স্বপ্ন দেখছে সহজ ও নিরাপদ ভ্রমণের। আর কী যেন হয়ে উঠেছে দেশের জন্য আত্মসম্মানের প্রতীক। তবে তারা পদ্মার পাড়ের মানুষ না হলেও পদ্মার বড় সেতু ঢাকার একটি পরিবারের কিছু মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে।
পদ্মা সেতুর অংশ না হলেও তারা হারিয়েছে তাদের পরিবারের মানুষটিকে। মা হারিয়েছেন তার দুই সন্তান তাহসিন আল মাহির (১৩) ও তাসমিম মাহিরা তুবা (৬)। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরের মাস ১৯ জুলাই গণপিটুনিতে তসলিমা আক্তার রেনুর হ/ ত্যার তিন বছর পূর্ণ হবে। রেণুর পরিবার এখন মামলার আসামিদের দেওয়া জবানবন্দি বা নিজেদের জিজ্ঞাসাবাদে জানে, গুজবের রাজনীতি সেদিন তাদের পরিবারে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটায়। বাবা দায়িত্ব না নিলেও রেনু স্কুলে ভর্তির জন্য লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার সোনাপুর গ্রামে যান।
সেই দুই সন্তান এখন দুই ভাগে বড় হচ্ছে। ভাই স্কুল হোস্টেলে। আর ছোট বোনের কাছে খালামণি এখন মা, আর মা কথা না বলে গোল চাঁদ। খালার সাথে থাকা তুবা এখন প্রথম শ্রেণীতে পড়ছে। আর মাহির ভর্তি হয়েছে ঢাকা মাইলস্টোন স্কুলে। সেখানে একটি হোস্টেলে পড়ে সে। তসলিমা বেগম রেনু হারানোর পর কিছুটা আর্থিক সাহায্য পেলেও দিন যত যাচ্ছে অনিশ্চয়তা বাড়ছে।
মেয়েটি লাশ হয়ে ফেরার পর থেকেই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন রেনুর মা ছবুরা খাতুন। তারপর থেকে সে বিছানায় নিথর হয়ে শুয়ে আছে। সব মিলিয়ে রেনুর পরিবার মনে করে গুজব রাজনীতির নিষ্ঠুর শিকার।
এখনো সেই আসামীদের উপর মামলা চলছে যারা রেনুকে নিথর করার জন্য প্রকিত দায়ী। তবে এই মামলার তিন বছর পর হলেও বিচার কার্য এখনো চলমান।