ক্লাস চলাকালীন সময়ে এক শিক্ষককে ক্লাসরুম থেকে টেনেহিচরে বাহিরে নিয়ে বেদম প্রহার করার অভিযোগ উঠেছে। ক্লাসে ছাত্র ছাত্রীদের পাঠদানকালে কিছু ব্যাক্তি ক্লাসে ঢুকে তাকে ক্লাস রুম থেকে বাহিরে নিয়ে যায়। এই সময়ে তাকে বেদম প্রহারও করেন বলে প্রতক্ষ্যদর্শীদের মাধ্যমে বিষয়টি জানা যায়। ঘটনার সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ব্যাক্তিদের মাধ্যমে তিনি প্রাণে রক্ষা পান।
পাবনা সদর উপজেলার ভান্ডারা ইউনিয়নের শ্রীরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হাফিজুর রহমান (৫০)সহ স্থানীয় কয়েকজন অভিভাবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (৩ আগস্ট) ক্লাস চলাকালীন তাকে টেনেহিঁচড়ে ক্লাসরুম থেকে বের করে বেদম প্রহার করা হয়। পাবনা সদর থানায় ওই শিক্ষকের লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত ২৯ জুলাই স্কুলের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে উচ্ছৃঙ্খল আচরণের কারণে তিনি মৌখিকভাবে শায়েস্তা করেন। এর জের ধরে বুধবার ১০-১৫ জন লাঠি হাতে শ্রেণীকক্ষে প্রবেশ করে। তারা প্রথমে শিক্ষককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। একপর্যায়ে শিক্ষককে ক্লাস থেকে বের করে নিয়ে লাঠিসোঁটা ও লাথি দিয়ে প্রয়ার করে তারা। হামলাকারীরা তাকে দ্বিতীয় তলা থেকে প্রহারের চেষ্টাও করে। এ সময় শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে চিৎকার শুরু করে। ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আসলাম উদ্দিন, আমিরুল ইসলাম ও নাজির উদ্দিন এসে সহকর্মী হাফিজুর রহমানকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন।
তাদের প্রতিরোধের মুখে শিক্ষককে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে হামলাকারীরা চলে যায়। বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকরা তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেন। বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও পাবনা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ওই শিক্ষক। প্রধান শিক্ষক সমিতির পাবনা জেলা শাখার সভাপতি ইকরামুল কবির মামুন, বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমিতি পাবনা জেলা শাখার সভাপতি মামুনুর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, পাবনা সদর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম মিঠু, সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. মির্জা জহুরুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আরিচুর রহমান হীরা, পাবনা পৌর শাখার সভাপতি শফিকুল আলম রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান প্রমুখ। পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, তারা লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) পুলিশ স্কুল পরিদর্শন করবে। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ক্লাসে পাঠদানকালে হঠাৎ করে কিছু ব্যাক্তি হাতে লাঠি-সোটা নিয়ে ক্লাসে অবস্থানরত শিক্ষককে ক্লাস থেকে বেদম প্রহার করে ক্লাসের বাহিরে নিয়ে আসেন। স্কুলে কিছু ছাত্রকে বকাঝকা করার কারনেই এই কান্ড ঘটিয়েছে স্কুলের বিপদগামী কিছু ছাত্র। ঘটনার সময়ে উক্ত শিক্ষককে দুই তলা থেকে নিচের তলায় নামিয়ে নিয়ে আসতে চেয়েছিলেন। তবে অন্য শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের সহায়তায় সেটি আর সম্ভব হয়নি।