Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / ক্যাম্পাসে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ, থানায় আত্মসমর্পণ করলেন সেই ছাত্রলীগ নেতা

ক্যাম্পাসে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ, থানায় আত্মসমর্পণ করলেন সেই ছাত্রলীগ নেতা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের হলরুমে এক ব্যক্তিকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মুস্তাফিজুর রহমান থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন।

রোববার সকাল ৮টার দিকে তিনি সাভার মডেল থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। এর আগে মোস্তাফিজুর রহমান গভীর রাতে হলের রান্নাঘরের তালা ভেঙে পালিয়ে যায়।

অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাফিজুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের ছাত্র। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী।

গ্রেফতারকৃত অন্যরা হলেন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের ছাত্র হাসান, ৪৬তম ব্যাচের ছাত্র মোস্তফা মনোয়ার সিদ্দিকী সাগর, উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের ছাত্র সাব্বির হোসেন সাগর।

অভিযুক্তকে পালাতে সাহায্য করায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাভার মডেল থানা পুলিশ তাদের সবাইকে আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর করেছে। তবে মুস্তাফিজুর রহমানের সহযোগী মামুন (বহিরাগত) এখনো পলাতক রয়েছে।

এদিকে সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, শনিবার বেলা ১২টার দিকে মীর মোশাররফ হোসেন হলের রান্নাঘরের তালা ভেঙে পালিয়ে যায় প্রধান আসামি মোস্তাফিজুর রহমান। ওই তিন ছাত্র তাকে পালাতে সাহায্য করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান যুগান্তরকে বলেন, প্রধান আসামি মোস্তাফিজুর রহমান থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন। বাকি তিনজনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বহিরাগত মামুন পলাতক রয়েছে।

জানা গেছে, অভিযুক্ত মামুন ওই দম্পতির বাড়িতে ভাড়া নিয়ে থাকেন। শনিবার সন্ধ্যায় তিনি নির্যাতিতার স্বামীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ডেকে পাঠান। পরে আসামিরা তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন হলের ‘এ’ ব্লকের ৩১৭ নম্বর কক্ষে আটক করে। এরপর মামুন তার স্ত্রীকে তার রেখে যাওয়া জিনিসপত্র আনতে বলেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী ওই নারী মামুনের জিনিসপত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে আসেন। পরে জিনিসপত্র নিয়ে মামুন হলের ওই কক্ষে রেখে যান। এরপর ওপার থেকে স্বামী আসবে বলে অভিযুক্ত মহিলাকে হল সংলগ্ন জঙ্গলে নিয়ে যায়। পরে ওই নারী অভিযোগ করেন, সেখানে তাকে ধর্ষণ করা হয়।

 

 

ভুক্তভোগী জানান, মামুন ভাই ভাড়ায় আমাদের বাসায় থাকতেন। তিনি আমার স্বামীর মাধ্যমে আমাকে ফোন করেন এবং তার রেখে যাওয়া জিনিসপত্র নিয়ে আমাকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে বলেন। আমি তার জিনিসপত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে যাই। তখন তিনি বললেন, তিনি আমাদের বাড়িতে থাকবেন না। এছাড়া মীর মোশাররফ হোসেন মোস্তাফিজ ভাইয়ের সঙ্গেই থাকবেন বলেও জানান তিনি।

ওই নারী অভিযোগ করেন, এরপর মামুন আমার কাছ থেকে তার জিনিসপত্র নিয়ে হলের মধ্যে ফেলে যায়। পরে ওপার থেকে আসবে বলে আমার স্বামী আমাকে হলের সামনে থেকে পাশের জঙ্গলে নিয়ে যায়। সঙ্গে ছিলেন মোস্তাফিজ ভাইও। এরপর তারা আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন বলেন, তিনি জঘন্য কাজ করেছেন। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা এই ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল জানান, মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করা হবে।

About Zahid Hasan

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *