ঢাকাই সিমেনার বেশ সাড়া জাগানো এক অভিনেত্রী সিমি ইসলাম কলি। তবে পর্দায় ‘সিমি’ নামেই অধিক পরিচিতি পেয়েছেন তিনি। অভিনয়ের পাশাপাশি একজন সফল হওয়ারও স্বপ্ন দেখছেন তিনি। আর এজন্য এক ব্যক্তিকে কয়েক ধাপে লাখ লাখ টাকাও দিয়েছেন তিনি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবসত ব্যবসায়ী তো হতে পারলেনই না, উল্টো মারধরের শিকার হতে হলো তাকে।
জানা গেছে, পূর্বপরিচিত জীবন কৃষ্ণ রায় নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তার মাধ্যমে ফরিদ নামে একজনকে ধাপে ধাপে ৮০ লাখ টাকাও দিয়েছিলেন।
কিন্তু সিমির ব্যবসায়ী হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। উল্টো মারধরের কথা স্বীকার করেছেন। পিটুনি খেয়ে প্রাণ যায় যায় অবস্থায় হয় এই অভিনেত্রী। কিন্তু ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। এ ঘটনা নিয়ে বুধবার বিকেল ৫টায় মগবাজারের একটি বাসায় সংবাদ সম্মেলন করেন সিমি। সেখানে তিনি বিস্তারিত ঘটনা তুলে ধরেন।
কিন্তু ৮০ লাখ টাকা বিনোয়োগ করলেন, কী এমন সেই ব্যবসা? এমন প্রশ্ন করতেই প্রতিবেদকের ওপর ক্ষেপে যান সিমি। রাগান্বিত হয়ে বলেন, `ক্যামেরা বন্ধ কর! তুমি এখন এই প্রশ্ন করতে আসছো কেন? আগে ওরে। ও এসে বলবে কিসের ব্যবসা করে।‘
যদিও এক পর্যায়ে সিমি বলেছিলেন যে তার ব্যবসায়িক অংশীদার প্লাস্টিকের ব্যবসা করে।
এই নায়িকার বয়ান অনুযায়ী, একটি অনুষ্ঠানে তাকে নরসিংদীতে শ্বশুরবাড়িতে ডাকা হয়। সিমি সেখানে গিয়ে দেখেন ঘটনার কোনো চিহ্ন নেই। গত ২৯ জুলাই রাতে সেখান থেকে একদিন ঢাকায় ফিরছিলেন তিনি। নরসিংদীর শিবপুর ও রায়পুরা থানার সংযোগস্থল খৈনপুর কুটিরবাজার সেতুর কাছে পৌঁছালে বাইক আরোহী (সিমির দেওয়ার) প্রস্রাব করার জন্য বাইক থামায়।
এরপর পাশ থেকে সি’মির ওপর অতর্কিত ‘হাম’লা চালানো হয়। তাকে নি’র্ম’ম’ভা’বে মারধ’রের পর তার পা’য়ে’র র’গ কেটে দেয়। এরপর তার মৃত্যু নিশ্চিত করতে হামলাকারীরা নানা চেষ্টা করে। কিন্তু ওই মুহূর্তে ওই বাড়ির এক মহিলা সেখানে আসাউ প্রাণে বেঁচে যান সিমি।
সিমি অভিযোগ করে বলেন, ‘২০২০ সালে আর্থিক সংকটের কারণে জীবন কৃষ্ণ রায়ের কাছে বিনিয়োগকৃত টাকা ফেরত চাই। এরপর সে আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার শুরু করে। তিনি আমাকে টাকা দেননি বরং তার পা ধরে ক্ষমা চাইতে বলেন। একপর্যায়ে তিনি আমাকে তার অফিসে ডেকে নিয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি দেন।
এরপর গত কোরবানির ঈদে তিনি আমাকে বললেন, তুমি এসো আমি তোমাকে টাকা ফেরত দেব। ২৮ জুলাই আমাকে কর্মসূচি নিয়ে নরসিংদী যেতে বলা হয়। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর ঘটনার কোনো চিহ্ন না পেয়ে ফিরে আসছিলাম। এ সময় পথে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর হামলাকারী এবং ওই ব্যাংকারের বিরুদ্ধে মামলা করতে নরসিংদীর রায়পুরা থানায় যান সিমি। কিন্তু সেতুর ওপারে শিবপুর মডেল থানা হওয়ায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামলা না নিয়ে ওই থানায় (শিবপুর) মামলা করার পরামর্শ দেন। পরে শিবপুর থানায় গেলে সেখানে মামলা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন সিমি।
তবে রায়পুরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোবিন্দ সরকারের দাবি, ওই মহিলা থানায় আসেননি। বরং তাকে থানায় ফোন করে মামলা করার অনুরোধ করা হয়। তবে কেন তিনি সাড়া দেননি তা স্পষ্ট নয়। তিনি অভিযোগ করলে তার মামলা গ্রহণ করা হবে।
শিবপুর থানার ওসি সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, `ঘটনাটি আমার থানা এলাকায় না। তার পরও লোকমুখে শুনে আমি ঘটনাস্থলে যাই। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ভিকটিমের খোঁজে থানা থেকে একজন কর্মকর্তাকে নরসিংদী সদর হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু জায়গাটা রায়পুরা বলে মহিলা আর আসেননি।
অভিনয় কর্মজীবনে বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় সিনেমায় অভিনয় করে জায়গা করে নেন কোটি ভক্তের মনে। যদিও পর্দায় নিজেকে তেমন ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারেনি তিনি। বর্তমানে অভিনয়ে খুব একটা দেখা মেলে না তার।