ব্রেস্ট (স্তন) ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ায় চিকিৎসার জন্য চেয়েছিলেন ছুটি। কিন্তু পেলেন বরখাস্তের আদেশ। এমনটাই দাবি করেছেন ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার পরিবার কল্যাণ সহকারী জেসমিন আরা খাতুন। মিথ্যা অভিযোগে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, ছুটি ছাড়া ২১ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় উপজেলার পরিবার কল্যাণ সহকারীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুল তথ্য উপস্থাপনের অভিযোগ রয়েছে।
পরিবার কল্যাণ সহকারীর নাম জেসমিন আরা খাতুন উপজেলার কাপাশহাটিয়া ২/খ ইউনিটে কর্মরত। মঙ্গলবার খুলনা বিভাগীয় পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের পরিচালক সৈয়দ রবিউল আলম স্বাক্ষরিত এক সরকারি আদেশে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।
বরখাস্তের আদেশে বলা হয়, পরিবার কল্যাণ সহকারী জেসমিন আরা খাতুন দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, অনুমতি ছাড়া ভারতে ভ্রমণ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনের কারণে কর্মস্থলে ছিলেন না। দুটি তদন্ত কমিটির রিপোর্টে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় সরকারি চাকরিজীবী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধি অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জেসমিন আরা খাতুন বলেন, ‘আমি ক্যান্সারে আক্রান্ত। বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ। ঢাকায় চিকিৎসা করে তার ব্রেস্ট ক্যান্সার ধরা পড়ে। চিকিৎসকরা তাকে ৮টি কেমোথেরাপি নিতে বলেছেন। ফলে চিকিৎসার জন্য একাধিকবার উপজেলা ও জেলা কর্মকর্তার কার্যালয়ে ছুটির জন্য গেলেও তারা ছুটি দেননি। গত ২৪ ডিসেম্বর উপজেলা কর্মকর্তার কাছে পাঁচ দিনের নৈমিত্তিক ছুটির জন্য আবেদন করেছিলাম। তবে ছুটি দেওয়া হয়নি। পরে ছুটির জন্য জেলা কর্মকর্তার কাছেও আবেদন করে ছুটি পাইনি। এখন মিথ্যা অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে।’ তিনি ন্যায়বিচার পাননি বলে দাবি করেন।
উপজেলা ইনচার্জ পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নাসরিন বলেন, ‘জেসমিন কখনো ছুটির আবেদন করেননি। বিনা ছুটিতে দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় জেলা কার্যালয় থেকে তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়েছিল। কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে আমার কোনো হাত নেই।
তদন্ত কমিটির প্রধান ও কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আব্দুল বারী বলেন, তদন্ত এখনো চলছে। শেষ পর্যন্ত কোনো তথ্য দেওয়া যাবে না।
উপজেলা কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলে ফোন কেটে দেন জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক মো. মোজাম্মেল হক।