জাতীয় দলের কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছেন। এই প্রোটিয়া কোচের সাম্প্রতিক সময়ে কর্মকাণ্ড নিয়ে বেশ আগে হতেই প্রশ্ন উঠেছিল। মাশরাফির মতো ক্রিকেটারও অনেকবার রাসেল ডমিঙ্গোকে ‘বাতিল কোচ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। দেশের ক্রিকেট ভক্তরাও এই কোচের ওপর সন্তুষ্ট নন বরং ক্ষুব্ধ। সেই ক্ষোভ আরও তীব্র হয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলের চরম ব্যর্থতার পর। কোচকে বরখাস্ত করার জন্য অনেক চেষ্টায় রয়েছে বিসিবিও, খুজছে পথ। কিন্তু কাজটি খুব একটা সহজ নয়। বিষয়টি হলো ডমিঙ্গোর ফাঁদে পা দিয়েছে বিসিবি।
২০১৯ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয় পাওয়ার পরও স্টিভ রোডসকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। যদিও রোডস বেশ ভালো কোচই ছিলেন। এদিকে ডমিঙ্গো সম্ভবত নিজের ভাগ্যলিপি অনুমান করেই চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে একটা চাল চালেন। তিনি বিসিবির কাছে দাবি করেন, অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়ার কোচ হওয়ার প্রস্তাব পেয়েছেন। তাই বিশ্বকাপে আগে হয় তার চুক্তি নবায়ন করতে হবে দুই বছরের জন্য; নয়তো তিনি নতুন চাকরিতে যোগ দেবেন।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগমুহূর্তে এমন কথা শুনে বিসিবি কর্তারা চিন্তায় পড়ে যান। এর মাঝেই মিরপুরে পরপর দুটি সিরিজ জয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়। বিশ্বকাপের আগেই বিসিবি ৫০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি করে ডমিঙ্গোর সঙ্গে নতুন করে দুই বছরের চুক্তি করে ফেলে। চুক্তিতে স্পষ্ট লেখা আছে, ‘প্রথম এক বছরে বিসিবি ডমিঙ্গোকে বরখাস্ত করতে চাইলে কিংবা তিনি চাকরি ছাড়তে চাইলে সেই সময় থেকে এক বছর হওয়া পর্যন্ত যত মাস বাকি থাকবে, সেই মাসের বেতনের অঙ্ক বুঝিয়ে দিতে হবে।’
অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের কাছে সিরিজ হারিয়ে দেওয়ার পর সেই আনন্দে ডমিঙ্গোর শর্তেও রাজি হয় বিসিবি। নতুন চুক্তি মোতাবেক, ডমিঙ্গোর প্রতি মাসে বেতন গিয়ে দাঁড়াবে প্রায় ১৭ হাজার ডলার। অন্য কথায়, ডমিঙ্গোকে এখনই যদি বাদ দেওয়া তাহলে বিসিবিকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে হবে ১ বছরের বেতন এবং সেটা অনেকটা বাধ্য থাকবে বিসিবি। এই হিসাবে দাঁড়ায় ২ মিলিয়ন ডলার। আর যদি ডোমিঙ্গো কোচ হিসেবে নিজে না থাখতে চান তাহলেও তাকে একই পরিমাণ অর্থ প্রদান করতে হবে। বিসিবির সর্বশেষ যে অবস্থানে রয়েছে সেক্ষেত্রে, ভালো কোচ দিয়ে দলের পারফরমেন্স ফেরাতে হলে জরিমানা দিয়েও বিদায় করতে হবে ডমিঙ্গোকে।