মধ্যরাতে একজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলের সাথে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীকে বাল্যবিবাহের প্রায় সকল প্রস্তুতি শেষ হওয়ার মাঝেই নিজের বাল্যবিয়ে ভেঙ্গে দেন এক ছাত্রী। ঐ ছাত্রী সুযোগ বুঝে থা’নার দায়িত্বপ্রাপ্ত ওসিকে ফোন করে বাল্যবিয়ের সকল বিষয় জানান।
পরবর্তীতে দায়িত্বপ্রাপ্ত ওসি সাঈদ আহমেদ কয়েকজন পুলিশ সদস্য নিয়ে বাল্যবিবাহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে ঐ ষষ্ঠ শ্রেনীর শিক্ষার্থীর মা, ছেলের ভাই ও ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে নিয়ে যান থানায়। এভাবেই অনেকটা কৌশলে নিজের বাল্যবিবাহ ঠেকিয়ে দিলো ষষ্ঠ শ্রেণির ঐ ছাত্রী।
ঘটনাটি ঘটে সোমবার রাত ১২টায় ভোলার মনপুরার ৪নং দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের রহমানপুর গ্রামের ৮নং ওয়ার্ডে ওই ছাত্রীর বাবার বাড়িতে। সে দক্ষিণ সাকুচিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ওই ছাত্রীর মা মেয়েকে (৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী) পড়াশুনা করাবেন ও ১৮ বছরের আগে বিয়ে না দেওয়ার মুচলেকা দিলে তাদের ছেড়ে দেন ওসি। একইভাবে অপ্রাপ্ত বয়স্ক জেলের ভাই মো. ফারুক ২১ বছরের আগে ভাইকে বিয়ে করাবেন না বলে মুচলেকা দিলে তাকেও ছেড়ে দেন ওসি।
ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী জানায়, দক্ষিণ সাকুচিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কমিউনিটি পু’লিশিং সভায় ওসি সাইদ আহমেদ বাল্যবিবাহ রোধে শিক্ষার্থীদের করণীয় সম্পর্কে বক্তব্য দেন। পরে ওসি নিজের মোবাইল নম্বর সবাইকে খাতায় লিখতে বলেন। ওই নাম্বার খাতা থেকে বের করে মোবাইলে ফোন দেয়। পরে ওসি গিয়ে বাল্যবিবাহ রুখে দেওয়ার পাশাপাশি পড়ালেখার সুযোগ করে দেওয়ায় কৃতজ্ঞতা জানান ওই ছাত্রী।
এ বিষয়ে সাঈদ আহমেদ যিনি মনপুরা থা’নার ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি বলেন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে ঐ ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে সেজন্য মনপুরা থা’নার পক্ষ থেকে তাকে পুরস্কৃত করা হবে। ছাত্রীর মা ও নাবালক ছেলের ভাইকে মুচলেকা নেওয়ার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনাটি এই এলাকায় একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।