কোন সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জানালেন নির্বাচন কমিশনার (ভিডিও)

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সকল রাজনৈতিক দলের মতামত নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু নির্বাচন ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে হবে নাকি নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে হবে সে বিষয়ে মতামত দিয়েছে সংলাপে অংশ নেয়া রাজনৈতিক দলগুলো। তবে দলগুলো তাদের মতামত দিলেও প্রকৃতপক্ষে কোন ধরনের সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলেনি নির্বাচন কমিশন। এবার এ বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবীব খান।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংলাপে কয়েকটি রাজনৈতিক দল তত্ত্বাবধায়ক ও বেশিরভাগই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নির্ধারণ সম্পূর্ণভাবে রাজনীতি ও সরকারের বিষয়। নির্বাচনের সময় যে সরকারই থাকুক ইসি নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে।

নির্বাচনী বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু দলগুলোর দাবি জানিয়েই নয়, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন পরিচালনায় তত্ত্বাবধায়কের বিকল্প বা পদক্ষেপ নিয়েও ইসি সরকারকে ফর্মুলা দিতে পারে।

সংসদ নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সংলাপে আলোচনার মূল বিষয় ছিল নির্বাচনকালীন সরকার। তারা কীভাবে সরকারের অধীনে নির্বাচন চায় সে বিষয়ে দলগুলো তাদের মতামত জানিয়েছে। কয়েকটি দল তত্ত্বাবধায়ক সরকার চেয়েছে, বেশিরভাগ দল নিরপেক্ষ বা সর্বদলীয় সরকার এবং তিনটি দল বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন চেয়েছে।

এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেন, কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে তা ক্ষমতাসীন সরকারই ঠিক করবে। তবে যে সরকারই থাকুক, তারা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ইসিকে সহযোগিতা করবে।

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবীব খান বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নাকি অন্তর্বর্তী সরকার, এটা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বিষয় নয়। ইসির চিন্তা করার বিষয় বা দরকার নেই। এটা সাংবিধানিক বিষয়। সংবিধানে যেভাবে লেখা আছে, বা সংবিধান অনুমতি দেয়, সেভাবেই তখন সরকার থাকবে।

তিনি বলেন, আমাদের একটাই ঐকান্তিক ইচ্ছা ও প্রত্যাশা-যে সরকারই তখন থাকুক না কেন? সরকার আমাদের সর্বান্তকরণে সমর্থন করবে। এ ব্যাপারে আমরা খুবই আশাবাদী।

এটা গোপন নয়, নির্বাচন সংক্রান্ত সব বড় সিদ্ধান্ত জনসমক্ষে জানানো হবে বলে জানান কমিশনার।

তিনি বলেন, যেসব প্রস্তাব এসেছে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করে সারসংক্ষেপ করব। সংবিধান আমাদের যা অনুমতি দেবে আমরা তা করার চেষ্টা করব। আর যেগুলো সরকারের কাছে ন্যস্ত আছে, সেগুলো আমরা সরকারের কাছে পাঠিয়ে দেব।

তিনি আরও বলেন, কোনো গোপন কথা নেই। তবে আমরা জনগণের কাছে সবকিছু প্রকাশ করব।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিকল্প হিসেবে যে ধরনের সরকারের অধীনে কমিশন আরও স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, সে ধরনের সরকারের কাছে ইসি প্রস্তাব দিতে পারে।

নির্বাচন বিশ্লেষক ড. আবদুল আলীম বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুপস্থিতিতে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে কী করণীয় তার একটি এজেন্ডা তৈরি করতে পারে ইসি। নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচনকালীন ডি-ফ্যাক্টো সরকার হিসেবে কাজ করতে দিতে হবে।

এদিকে নির্বাচন বিশ্লেষকেরা নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করেছেন। তবে কিভাবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা যায় সে বিষয়ে নির্বাচনকালীন সরকার যেটা থাকুক না কেন বিষয়টি নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সংলাপ শুরু হতে পারে এমনটা জানিয়েছেন তারা। তবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ঠিক কিভাবে সম্ভব সে বিষয়ে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল কোন কিছু জানায়নি। তবে সংলাপের শেষ দিকে এসে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাথে সংলাপে বসে নির্বাচন কমিশন।