বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আবেদন আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আইনি প্রক্রিয়ায় নির্বাহী আদেশে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
রোববার (১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর বিচার প্রশাসন ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার আবেদনের ফাইল এখন আইন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে বলে জানান আইনমন্ত্রী। খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে পারবেন কিনা সে বিষয়ে আজ মতামত দেওয়া হবে। তবে আইনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।
আনিসুল হক বলেন, “‘দেশের সব কাজই নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে হওয়া উচিত। এর বাহিরে কোনো কাজ করাই আইনের লঙ্ঘন। তবে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাহী আদেশে বিদেশ যেতে পারবেন খালেদা জিয়া।’’
৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া হার্টের সমস্যা ও লিভার সিরোসিস ছাড়াও বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। এছাড়া তার বাত, ডায়াবেটিস, দাঁতের ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতা রয়েছে। এরই মধ্যে তিনি বেশ কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রামে তার হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়।
বিএনপি চেয়ারপারসন দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে রয়েছেন। নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত হওয়ায় বর্তমানে তিনি কারাগার থেকে মুক্ত। সাজা স্থগিত হওয়ার পর গত ২৪ সেপ্টেম্বর সপ্তমবারের মতো বিএনপি নেতার বর্ধিত মুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। এর আগে তার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানায় পরিবার। বেগম জিয়ার ভাই শামীম এস্কান্দার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে এ অনুরোধ জানিয়েছেন। চিঠিতে ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। রায় ঘোষণার পর তাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়। এরপর গত ৩০ অক্টোবর এ মামলায় আপিলের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট তার সাজা পাঁচ বছর বাড়িয়ে ১০ বছর করেন।
একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন একই আদালত।
২০২০ সালের মার্চ মাসে করো”-না মহামারী শুরু হলে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সাজা স্থগিত করে এবং খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের জন্য শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেয়। এরপর থেকে মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোয় তাকে আর কারাগারে যেতে হয়নি।