Thursday , September 19 2024
Breaking News
Home / Countrywide / কোনো রকম মায়া দয়া দেখাবো না, একদম পিষে দেব: এমপি

কোনো রকম মায়া দয়া দেখাবো না, একদম পিষে দেব: এমপি

“আমি কোনো রকম মায়া-দয়া দেখাবো না। একদম পিষে দেব।’ ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের স্থানীয় এমপি মোঃ শামসুল হক টুকু পাবনা জেলার বেড়া পৌরসভা নির্বাচনের আগে নৌকার বিরুদ্ধে অংশ নিয়ে নির্বাচনে দাঁড়ানো এক মেয়র পদপ্রার্থীর সমর্থককে এইভাবে হু/ম’কি দিয়েছেন।

গত শুক্রবার অর্থাৎ ১৯ নভেম্বর সকালের দিকে বেড়া পৌর এলাকাধীন বৃশালিখা পশ্চিমপাড়ার সড়ক দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন ইয়ামিন আলীর নামের ঐ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রতিদ্বন্ধী করা স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আব্দুল বাতেনের সমর্থক আওয়ামী লীগ কর্মী। সেই সময় তিনি শামসুল হক টুকু যিনি পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য তার সামনে পড়ে যান। এরপর শামসুল হক ইয়ামিনকে এই ধরনের কথা বলে হু’ম/কি দেন।

বেড়া পৌরসভা নির্বাচনে অন্যদের সাথে প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন শামসুল হক টুকুর ছেলে আসিফ শামস যাকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

এখানে বিদ্রোহী প্রার্থীরা হলেন শামসুল হকের ভাই আব্দুল বাতেন ও ভাইয়ের মেয়ে সাদিয়া ইসলাম। আব্দুল বাতেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে বেড়া পৌরসভার মেয়র। সাদিয়া ইসলাম শামসুল হকের বড় ভাই বদিউল আলমের মেয়ে।

একই পরিবারের তিনজন মেয়র পদপ্রার্থী হওয়ায় বেড়া আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। নিজের সন্তানকে ভোটে জেতানোর জন্য নির্বাচনী আচরণবিধি ল’ঙ্ঘ/ন করে এলাকায় অবস্থান করছেন শামসুল হক। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীদের হু/ম’কি ও এলাকাছাড়া করার অভিযোগও উঠেছে।

জনপ্রিয় একটি দৈনিকের হাতে আসা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ইয়ামিন আলীকে ভ’/য়ভী’/তি দেখাচ্ছেন শামসুল হক। আবদুল বাতেনের পক্ষ নেওয়ায় ইয়ামিনকে হু’ম/কি দিয়ে শামসুল হক বলেন, ‘ওখানে যাবি না। তোগোরে পু’/লি’শ দিয়ে মা’/রতেও আমার ভ’/য় লাগে, খারাপ লাগে। যে কয়টাকে মা’/রবনে, চার-পাঁচটাকে…একটা আমিনুল, দেহিসনে কী অয়।’

নারকেলগাছ প্রতীকের প্রার্থী আবদুল বাতেনের নির্বাচনী ক্যাম্পে না যেতে নির্দেশ দিয়ে শামসুল হক বলেন, ‘যাবি, না যাবি না? আজকে নৌকার মি’/ছি’ল করবি। নৌকা হলো জাতির প্রতীক। আর ওই শা’লা খেজুরগাছ সেদিন ছিল আউয়াল আজ হলো বাতেন (এ সময়ে পাশ থেকে একজন বলেন, খেজুরগাছ নয়, নারকেলগাছ)।…ওখানে বসবি ক্যা? মা’লপা’তি দেয়?’

হু/ম’কির বিষয়ে জানতে চাইলে ইয়ামিন বলেন, ‘আমি শুক্রবারই পরিবারসহ এলাকার বাইরে চলে এসেছি। এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’

বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল বাতেন ঐ দৈনিককে বলেন, ‘আমার কর্মী ও সমর্থকদের এলাকাছাড়া করার চেষ্টা করছেন সংসদ সদস্য ও তাঁর পুত্র। এলাকায় তাঁদের জনসমর্থন নেই। তাঁরা প্রশাসনিক ক্ষমতা ব্যবহার করে নির্বাচনে জয়ের চেষ্টা করছেন।’

স্বতন্ত্র মেয়র পদপ্রার্থী সাদিয়া ইসলাম বলেন, ‘আমার কর্মীরাও এখন প্রকাশ্যে আমার সঙ্গে হাঁটতে ভয় পায়। স্থানীয় সংসদ সদস্য এলাকায় অবস্থান করে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছেন। বলছেন যে নৌকায় ভোট না দিলে এলাকা শ্ম’শান বানিয়ে দেবেন।’

বেড়া পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মাহবুবুর রহমান গত ১৪ নভেম্বর শামসুল হককে একটি চিঠি পাঠান। সেখানে বলা হয়, ‘সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নির্বাচনী এলাকায় প্রচারণা বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। বেড়া পৌরসভা সাধারণ নির্বাচন প্রভাবমুক্তভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে পৌরসভা (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা অনুযায়ী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি তথা মাননীয় সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান না করার জন্য আপনাকে বিনীতভাবে অনুরোধ করা হলো।’

নির্বাচন কর্মকর্তার চিঠি পাওয়ার পরের দিন ১৫ নভেম্বর সকালে শামসুল হক বৃশালিখা পল্টন সমাজের আয়োজনে এক দোয়া ও আলোচনাসভায় অংশ নেন।

আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নির্বাচনী এলাকায় অবস্থানের বিষয়ে শুক্রবার রাতে শামসুল হক টুকু বলেন, “নির্বাচন কমিশন আমাকে চিঠি দিয়ে বলেছে যে ‘আমি যেন নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলি, আর সম্ভব হলে যেন এলাকার বাইরে থাকি।’ কিন্তু আমি তো এলাকার মানুষ, আমি

যাবটা কোথায়? আমি এখানকার ভোটার। আমি নির্বাচনী আচরণবিধি ল’/ঙ্ঘ’ন করে কোনো কাজ করব না।”

প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র প্রার্থী তিনি এ বিষয়ে প্রতিবাদ করেছেন। তার সমর্থককে পিষে মা’/রার হু’ম/কি দিয়েছেন এমন বিষয়ে জানার জন্য প্রশ্ন করা হলে এমপি শামসুল হক বলেন, “এটা কোনোভাবে ঠিক নয়। আমি কেন সেটা বলতে যাবো? এই ধরনের অভিযোগ মিথ্যা।’ পু’লি/শ দিয়ে ভ’য়ভী/তি প্রদর্শনের প্রসঙ্গ তোলা হলে শামসুল হক বলেন, ‘আমার বেশ কর্মী বা’হি/নী আছে। পু’লি/শকে দিয়ে এমনটা করাবো কেন?’

স্বজনরা বি’দ্রো/হী প্রার্থী হয়েছেন এবং তাদের প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন এই সকল বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে শামসুল হক বলেন, ‘এটাই হলো গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। আওয়ামী লীগ সরকার এটা বিশ্বাস করে যে গনতন্ত্র যেখানে সেখানে সবাই নির্বাচনে অংশগ্রহন করার অধিকার রাখে।’

জানতে চাওয়া হলে মাহবুবুর রহমান যিনি বেড়া পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি দেশের একটি জনপ্রিয় দৈনিককে বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে তাকে এ বিষয়ে একটি চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছি। আশা করছি, তিনি আজ (শনিবার) এই নির্বাচনী এলাকা ত্যাগ করবেন। এটার যদি অন্যথা হয় তাহলে আমরা পরবর্তীতে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করবো।”

 

 

 

About

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *