বাংলা সিনেমার এক সময়ের তুমুল জনপ্রিয় অভিনেত্রী সুনেত্রা। অভিনয়ের পাশাপাশি রুপের মুগ্ধতা ছড়িয়েও শত শত যুবকের ক্রাশ ছিলেন তিনি। ক্যারিয়ারে একাধিক ব্যবসায় সফল সিনেমা উপহার দিয়ে কোটি কোটি ভক্তদের ভালোবাসা কুড়িয়েছেন গুণী এই অভিনেত্রী। তবে অনেক বছর হয়ে গেল, পর্দায় দেখা নেই তার। রীতিমতো রয়েছেন লোকচক্ষুর অন্তরালেও।
এমনকি চলচ্চিত্রের মানুষেরাও জানেন না কোথায় আছেন, কেমন আছেন তিনি। চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, শিল্পী সমিতিতেও পাওয়া গেলা না নব্বই দশক মাতিয়ে রাখা চিত্রনায়িকা সুনেত্রাকে নিয়ে নিখুঁত কোনো তথ্য। কেউ কেউ ভাসা ভাসা তথ্যে বললেন, সুনেত্রা বর্তমানে রয়েছেন পাকিস্তানে। সেখানে সংসার পেতেছেন এক মঞ্চ অভিনেতার সঙ্গে। কেউ বললেন তিনি নাকি বাংলাদেশেই রয়েছেন। থাকেন সাভারে।
আবার শিল্পী সমিতির একটি সূত্র বলছে, একসময় পাকিস্তানে থাকলেও বর্তমানে বাবার ভিটা ভারতের কলকাতাতেই রয়েছেন তিনি। অভিনয়ের সঙ্গে আর সম্পৃক্ত নন।
জানা যায়, নব্বই দশকের মাঝামাঝিতে ঢাকাই ছবি থেকে আড়ালে চলে যান সুনেত্রা। কিন্তু কেন তিনি চলচ্চিত্র ত্যাগ করেছিলেন সেই তথ্য পাওয়া গেল না কোথাও। জানা গেছে, বাংলাদেশে এসে প্রথমদিকে প্রখ্যাত চিত্রগ্রাহক ও চলচ্চিত্র পরিচালক বেবি ইসলামের স্ত্রী তন্দ্রা ইসলামের বাড়িতে থাকতেন। পরে তিনি নিজেই নিজের আবাসন ব্যবস্থা করেছিলেন।
জাফর ইকবালের বিপরীতে ‘ঘর ভাঙা ঘর’ ছবিটিকেই সুনেত্রা অভিনীত সর্বশেষ বাংলাদেশি ছবি বলে ধরা হয়। এটি মুক্তি পেয়েছিলো ১৯৯২ সালে। এরপর কিছুদিন কাজ করেন কলকাতার ছবিতে। ১৯৯৯ সালের সেখানে সর্বশেষ সুনেত্রা অভিনীত ‘দানব’ ছবিটি মুক্তি পায়। সেই ছবিতে তিনি অভিনয় করেছিলেন কলকাতার শক্তিমান অভিনেতা ভিক্টর ব্যানার্জির বিপরীতে।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে প্রতিষ্ঠা পেলেও সুনেত্রা ছিলেন কলকাতার মেয়ে। সেখানেই মঞ্চে অভিনয় করতেন। তাকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে নিয়ে আসেন গুণী নির্মাতা মমতাজ মালী। ১৯৮৫ সালে মুুক্তি পাওয়া ‘উসিলা’ ছবি দিয়ে মাত্র ১৫ বছর বয়সে অভিষিক্ত হন তিনি। শুরুতেই নায়ক হিসেবে পান তৎকালীন সুপারস্টার অকাল প্রয়াত নায়ক জাফর ইকবালকে। এরপর তিনি অভিনয় করেছেন ‘বোনের মতো বোন’, ‘ভাবীর সংসার’, ‘সাধনা’, ‘রাজা মিস্ত্রি’, ‘যোগাযোগ’, ‘সুখের স্বপ্ন’, ‘আলাল দুলাল’, ‘শুকতারা’, ‘সহধর্মিনী’, ‘কুচবরণ কন্যা’, ‘বন্ধু আমার’, ‘শিমুল পারুল’, ‘ভাই আমার ভাই’, ‘লায়লা আমার লায়লা’, ‘দু:খিনি মা’, ‘বিধান’, ‘নাচে নাগিন’, ‘ভুল বিচার’, ‘সর্পরানি’, ‘বিক্রম’, ‘বাদশা ভাই’, ‘রাজা জনি’, ‘আমার সংসার’ ইত্যাদি হিট ছবিগুলোতে।
১৯৮৫ সালে জনপ্রিয় অভিনেতা জাফর ইকবালের বিপরীতে ‘উসিলা’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বড় পর্দায় প্রথমবার পা রাখেন সুনেত্রা। তবে পববর্তীতে ১৯৯০ সালে পরিচালক ঝন্টুর নির্মিত ‘পালকী’ সিনেমা দিয়ে সবার নজরে আসেন এই অভিনেত্রী। তবে গত কয়েক বছর ধরে অনেকটা আড়ালে রয়েছেন তিনি। সঠিক কেউই বলতে পারছে না তিনি এখন কোথায়।