দেশের সব কিছু ঠিকঠাক থাকলেই আর মাত্র ১৪ মাস পরেই অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন। আর এই কারনে এখন দেশে চলছে নানা ধরনের সব প্রস্তুতি।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ১৪ মাস পর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপিসহ বিরোধীরা রাজপথে তৎপর, আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে উত্তপ্ত হচ্ছে নির্বাচনী মাঠ। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এরই মধ্যে শেষ হচ্ছে পুলিশ প্রধানের (আইজিপি) মেয়াদ। নির্বাচনকালীন আইজিপি কে হবেন তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে পুলিশ প্রশাসনে কৌতূহল দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, বর্তমান আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের চাকরির মেয়াদ ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত। বয়সের কারণে আগামী নির্বাচনের আগে তাকে চলে যেতে হবে। আগামী আইজিপিই নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন। এ জন্য পুলিশের সর্বোচ্চ পদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সাবেক আইজিপি একেএম শহীদুল হক বলেছেন, নির্বাচনকালীন আইজিপি যিনিই হবেন, তাকে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মেনে আইন মেনে কাজ করতে হবে। উপরন্তু, তার বাহিনীর গ্রহণযোগ্যতা এবং নেতৃত্ব থাকতে হবে। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এবং ক্ষেত্রের দায়িত্বশীল বাহিনী থেকে কাজ করিয়ে নেওয়ার দক্ষতা থাকতে হবে। নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা এবং বাহিনী সদস্যদের আস্থাভাজন হতে পারে এমন চৌকস ও দক্ষ কর্মকর্তা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচনে ভূমিকা রাখা কঠিন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও পুলিশ সদর দফতরের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আরও অন্তত চার মাস দায়িত্বে থাকবেন। ফলে পরবর্তী আইজিপি কে হবেন সে বিষয়ে এখনই আনুষ্ঠানিক কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের দুই ব্যাচের তিন কর্মকর্তা আলোচনায় রয়েছেন।
আলোচনায় তিন কর্মকর্তা
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পরবর্তী আইজিপি হওয়ার দৌড়ে পুলিশ ক্যাডারের ১২ ব্যাচের কর্মকর্তা এসএম রুহুল আমিন, মো: কামরুল আহসানসহ ১৫ ব্যাচের কর্মকর্তারা। মনিরুল ইসলাম। অতিরিক্ত আইজিপি রুহুল আমিন তার ব্যাচের প্রথম স্থানে রয়েছেন। ওই কর্মকর্তা বর্তমানে পুলিশের অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের (এটিইউ) প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কামরুল আহসান পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) পদে রয়েছেন। ১৫ ব্যাচের কর্মকর্তা অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সাধারণত অতিরিক্ত আইজিপিদের একজনকে আইজিপি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত ওই তিন পুলিশ কর্মকর্তা নির্বাচনকালীন আইজিপি নিয়োগে এগিয়ে রয়েছেন। তবে চুক্তিভিত্তিক বর্তমান আইজিপির মেয়াদ বাড়ানো নিয়েও গুঞ্জন রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত দেশে এ পদে কোনো চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ হয়নি।
সূত্র জানায়, রেওয়াজ অনুযায়ী ১২ ব্যাচের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে সিনিয়র হিসেবে পরবর্তী আইজিপি নিয়োগ দিতে হবে। এসবি প্রধান মনিরুল ইসলামের অপেক্ষাকৃত জুনিয়র ব্যাচের একজন পরবর্তী আইজিপি হতে পারেন বলে জোর আলোচনা রয়েছে। পুলিশ বাহিনীতে ক্লিন ইমেজ, নেতৃত্বের গুণাবলি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পারদর্শী হিসেবে সবাই তাকে চেনেন। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অসাধারণ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন এই কর্মকর্তা। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে, তিনি দেশের বাইরে উগ্রবাদ দমনে জড়িত সংগঠনগুলোর কাছে পরিচিত।
এ দিকে নির্বাচনকালীন আইজিপি নির্বাচন চলছে অনেকটা গোপনেই । তবে এখনই কিছু জানানো যাচ্ছে না। ধর্ণা করা হচ্ছে অভাগটার বিচারে দেয়া হবে একজনকে এই গুরুত্বপূর্ণ পদ।