নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ ভূঁইয়া বলেছেন যে তিনি মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করবেন না।
সোমবার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। এরপর আলোচনায় আসেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. শুধু তাই নয়, এখন টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছেন তিনি।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরানের মন্তব্য প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, তিনি কথা বলে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।
আর অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কোনো পক্ষকে খুশি করার জন্য তিনি এ কাজ করেছেন।
আরও পড়ুন ইউনূসের বিরুদ্ধে ‘বিবৃতিতে’ স্বাক্ষর করবেন না ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড
সরকারের পক্ষে থাকা লোকজন এখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইমরানের সমালোচনা করছেন। অন্যদিকে বিরোধীরা ইমরানের প্রশংসা করছেন। তারা বলছেন, ডিএজি এমরান সরকারের আইন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেও বাস্তবতা অনুধাবন করে সঠিক বক্তব্য দিয়েছেন।
এদিকে ইউনূস ইস্যুতে বিস্ফোরক মন্তব্যের পর সবার মনে প্রশ্ন- কে এই ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইমরান? তার আসল পরিচয় কি? কেন তিনি এমন বক্তব্য দিলেন?
কে এই এমরান?
ইমরানের পৈতৃক বাড়ি কুমিল্লায়। বাবা সুলতান আহমেদ ভূঁইয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করতেন। তার মা সুরাইয়া সুলতানা। বাবার চাকরির সুবাদে পরে তারা চট্টগ্রামে স্থায়ী হয়। ইউনূসের ঘনিষ্ঠ ছিলেন তার বাবা সুলতান আহমেদ ভূঁইয়া ড. ইউনূস তখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছিলেন ড. এমরান ১৯৯২-৯৩ সেশনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন। তিনি আইন বিভাগের দ্বিতীয় ব্যাচের ছাত্র ছিলেন।
বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী হিসেবে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের কয়েকজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী জানান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় এমরান ছাত্রলীগ করতেন। আইন বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করে ঢাকায় চলে আসেন। ২৭ এপ্রিল ২০০৩-এ হাইকোর্টে অনুশীলনে ভর্তি হন এবং ২১ জুলাই ২০০৫-এ সদস্যপদে ভর্তি হন। এর পরে, ৪ জানুয়ারী, ২০১৮-এ তিনি একজন মন্ত্রীর সুপারিশে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান।
হঠাৎ ইউনূসের অবস্থান কেন?
অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ ভূঁইয়ার ফেসবুক প্রোফাইল দেখা যায়, তার ফেসবুক কভারে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি রয়েছে। ফেসবুক ব্যবহারের শুরু থেকেই তিনি আওয়ামী লীগের নীতি, আদর্শ ও সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরেছেন। কিন্তু হঠাৎ করেই নোবেল বিজয়ী ড. তিনি ইউনূসের পক্ষে সরাসরি অবস্থান নেন। অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের সহকর্মীরা তার অবস্থান পরিবর্তনে হতবাক হয়েছিলেন।
অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের তার কয়েকজন সহকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ইমরান বিচারক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে তদবির করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হয়েছেন। কিন্তু পরপর দুটি নিয়োগে তিনি বিচারক হতে পারেননি। এটি তাকে ক্ষুব্ধ করে। আবার কেউ বলছেন, ইমরানের অনেক আত্মীয় আমেরিকায় থাকেন। তিনি আমেরিকান ভিসা নিশ্চিত করতে ড. তিনি ইউনূসের পক্ষে অবস্থান নেন।
এর আগে এমরান গণমাধ্যমকে বলেন, ইসরায়েলের অ্যাটর্নি জেনারেল সে দেশে আইন সংস্কার করছেন; বিচারের ব্যাপারে তিনি এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন এটা আমার নিজস্ব মতামত।
ডঃ আমি ইউনূসের পক্ষে ১৬০ জন নোবেল বিজয়ী এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের বক্তব্যের সাথে একমত।
তিনি বলেন, আমি মনে করি- অধ্যাপক ড. ইউনূস একজন সম্মানিত মানুষ। ইমরান ভূঁইয়া মনে করেন, তার সম্মান ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং এটা বিচারিক হয়রানি।