নিরাপত্তা হেফাজতে মারা যাওয়া তরুণী ইরানী মহিলা মাহসা আমিনির পরিবারকে তার সম্মানে ইউরোপের অভিজাত মানবাধিকার পুরস্কার সাখারভ পুরস্কার প্রদান করতে বাধা দিয়েছে ইরান । এই পুরস্কার আনতে তাদের ফ্রান্সে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাদের বিমানে উঠতে নিষেধ করেছে। পরিবারের আইনজীবী বিবিসিকে বলেছেন, মাহসা আমিনির বাবা-মা ও ভাইকে বিমানে উঠতে দেওয়া হয়নি। তাদের পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাখারভ পুরস্কার আনতে ফ্রান্সের স্ট্রাসবার্গে যাওয়ার কথা ছিল তাদের। কিন্তু বৈধ ভিসা থাকা সত্ত্বেও তাদের দেশ ত্যাগে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, মাহসা আমিনিকে হেজাব না পরার কারণে ইরানের এথিকস পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল। তাদের হেফাজতে থাকা অবস্থায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। মাহসা আমিনি ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২ তেহরানের একটি হাসপাতালে মারা যান।
তাকে নি/র্যাতন করে হ/ত্যা করা হয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, নিরাপত্তা হেফাজতে আমিনি নামে ২২ বছর বয়সী তরুণীকে মারধর করা হয়। তবে তার সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে কর্তৃপক্ষ। উল্টো তারা দাবি করেছে, হঠাৎ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। এর ফলে দেশটিতে তীব্র প্রতিবাদ হয়। এমন প্রতিবাদ সেখানে আগে কখনো দেখা যায়নি।
অক্টোবরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কর্তৃক ঘোষিত মাহসা আমিনীর মৃত্যু বিশ্বজুড়ে নারী, জীবন ও স্বাধীনতার আন্দোলনকে তীব্র করে তোলে। এর জন্য মিস আমিনিকে সম্মান জানাতে, তারা তাকে মরণোত্তর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ মানবাধিকার সাখারভ পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেয়।
তার পরিবারের আইনজীবী চিরিন আরদাকানি এএফপিকে বলেছেন যে মিসেস আমিনির মা, বাবা এবং বাইকে ফ্লাইটে উঠতে নিষেধ করা হয়েছে। সাখারভ পুরস্কার সংগ্রহ করতে তাদের ফ্রান্সে যাওয়ার কথা ছিল। তিনি আরও বলেন, নিহতের পরিবারকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কথা বলতে বাধা দেওয়ার ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট রবার্টা মেটসোলা পরিবারটিকে ভ্রমণের অনুমতি দেওয়ার জন্য ইরানের প্রতি আহ্বান জানান। আগামী মঙ্গলবার স্ট্রাসবার্গে সাখারভ পুরস্কার পাওয়ার জন্য তাদের ইউরোপীয় পার্লামেন্টে থাকা উচিত, তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন। সত্যকে কখনো থামানো যায় না।