Sunday , November 17 2024
Breaking News
Home / International / কেন স্বেচ্ছায় নিখোঁজ হয় জাপানিরা

কেন স্বেচ্ছায় নিখোঁজ হয় জাপানিরা

বিশ্বে অনেক প্রজাতির মানুষ রয়েছে তাদের জীবন ধারণ থেকে শুরু করে সামাজিকতার সবকিছুই আলাদা বিভিন্ন দেশের সমাজব্যবস্থা বিভিন্ন রকম এবং তাদের রীতিনীতি আলাদা এবং বিভিন্ন মতাদর্শিক মানুষ বিদ্যমান রয়েছে সারা বিশ্বে এমন অনেক ধরনের মানুষ রয়েছে যাদের কর্মকান্ডের সাথে অন্যদের কর্মকাণ্ড কখনোই মিলবেনা এবং তাদের সকল কর্মকান্ড দেখে বাকীরা বিস্ময় প্রকাশ করে যেমনটা দেখা যায় জাপানে সেখানে নানান রীতি নীতি প্রচলিত আছে এখনো

সারা বিশ্বেই কিছু মানুষ রয়েছে, যারা তাদের নিজের জীবন থেকে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। বাড়িঘর, চাকরি এবং পরিবার থেকেও মাঝ রাতে তারা এমনভাবে উধাও হয়ে যায়, যাতে কেউ তাদের খুঁজে বের করতে না পারে।

এর পর তারা শুরু করে নতুন জীবন, অনেক সময় তারা আর পেছনে ফিরেও তাকায় না। জাপানে এ ধরনের লোকজনকে অভিহিত করা হয় “জুহাতসু” হিসেবে।

জাপানি এই শব্দের অর্থ ‘হাওয়া হয়ে যাওয়া’। যেসব লোক উদ্দেশ্যমূলকভাবে লুকোতে চায়, তাদেরকে বোঝাতেও এই শব্দটি ব্যবহার করা হয়।

এই লোকগুলো কোথায় আছে এবং কী করছে সেসব তারা গোপন রাখে – কখনো কখনো কয়েক বছর এমনকি কয়েক দশকের জন্যও।

৪২ বছর বয়সী সুগিমোতো বলেন, মানুষের সাথে সম্পর্কের ব্যাপারে আমি অত্যন্ত হতাশ হয়ে পড়ি। এর পর ছোট্ট একটি সুটকেস নিয়ে উধাও হয়ে যাই। এক ধরনের পালিয়ে যাওয়াও বলতে পারেন।

সুগিমোতো আরো বলেন, যে ছোট্ট শহরে তিনি ছিলেন, তার পরিবারের কারণে সেখানে সবাই তাকে চিনতো। কারণ তাদের ব্যবসা স্থানীয় লোকজনের কাছে বেশ পরিচিত ছিল। পরিবারটি আশা করছিল যে সুগিমোতো এই ব্যবসার হাল ধরবেন। কিন্তু এই দায়িত্ব নিয়ে সুগিমোতো এমন চাপের মধ্যে পড়েন যে, তার মধ্যে মানসিক অশান্তি সৃষ্টি হয় এবং তিনি খুব দ্রুত চিরদিনের জন্য ওই শহরে ছেড়ে চলে যান। কোথায় যাচ্ছেন সে কথা কাউকে বলেননি তিনি।

এভাবে হঠাৎ মিলিয়ে যাওয়ার পেছনে রয়েছে নানা কারণ; পরিশোধ করার মতো নয় এমন ঋণ থেকে শুরু করে প্রেমহীন বিবাহ।

তবে কারণ যা-ই হোক না কেন, তারা তখন এমন কিছু কম্পানির দ্বারস্থ হন, যারা তাদেরকে উধাও হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সাহায্য করে।

এ ধরনের কাজকে বলা হয় “রাতে সরে যাওয়ার” সার্ভিস। এর মধ্য দিয়ে দেশটিতে “জুহাতসু” হয়ে যাওয়ার গোপন প্রক্রিয়াকেই অনুমোদন করা হয়।

যেসব লোকজন উধাও হতে চান, তাদেরকে গোপনে জীবন থেকে সরে যেতে সাহায্য করে এসব কম্পানি। এমনকি গোপন স্থানে তাদের থাকারও ব্যবস্থা করে দেয়।

“সাধারণত এভাবে চলে যাওয়ার পেছনে ইতিবাচক কারণই থাকে, যেমন কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া, কোথাও নতুন চাকরি পাওয়া অথবা কাউকে বিয়ে করা।”

“তবে খারাপ কিছু কারণও থাকে- উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যেমন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়া, চাকরি হারানো অথবা কারো কাছ থেকে পালিয়ে যাওয়া,” বলেন শো হাতোরি, যিনি ৯০-এর দশকে, পালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সাহায্য করে এরকম একটি কম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। এই দশকে জাপানের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ধস নেমেছিল।

প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন লোকজন হয়তো শুধু অর্থনৈতিক দুর্দশার কারণেই তাদের সমস্যা-কবলিত জীবন থেকে পালিয়ে যেতে চাইবে, কিন্তু খুব শিগগিরই তিনি দেখতে পান যে, এর পেছনে আরো কিছু সামাজিক কারণও রয়েছে।

তিনি বলেন, মানুষ যাতে আরেকটা দ্বিতীয় জীবন শুরু করতে পারে; সে ব্যাপারে সাহায্য করার জন্যই আমরা এই কম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছি।

জাপানে বিবাহ বিচ্ছেদের হার খুব কম ছিল, এখনও কম। ফলে অনেকেই ডিভোর্সের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে একদিন হঠাৎ করেই তাদের স্বামী বা স্ত্রীকে ছেড়ে চলে যায়।

“জাপানে উধাও হয়ে যাওয়া খুব সহজ,” বলেন নাকামোরি। দেশটিতে মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা কঠোরভাবে রক্ষা করা হয়। নিখোঁজ ব্যক্তিরা তাদের পরিচয় না দিয়েও মুক্তভাবে এটিএম থেকে অর্থ তুলতে পারেন। এছাড়াও পালিয়ে যাওয়া এই ব্যক্তি যদি গোপন ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনো ক্যামেরাতে ধরাও পড়েন, তার পরিবারের সদস্যদের ওই ভিডিও দেখতে দেওয়া হয় না।

“অন্য কোনো কারণ না থাকলে পুলিশ হস্তক্ষেপ করবে না- যেমন কোনো অপরাধ বা দুর্ঘটনা। পরিবারগুলো চাইলে হয়তো ব্যক্তিগত গোয়েন্দাদের অর্থ দিয়ে কাজে লাগাতে পারে। অথবা পারে শুধু অপেক্ষা করতে। এর বাইরে কিছু করার নেই।”

সারা বিশ্বের বিভিন্ন ধরনের মানুষ রয়েছেন যারা তাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড করে বিশ্ববাসীর কাছে বিস্ময়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায় সারা বিশ্বে এমন মানুষ দেখা যায় যারা নিজেদের জীবন থেকে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন নিজেদের বসতবাড়ি এবং পরিবার পরিজন থেকে তারা দূরে সরে যান যাতে করে তাদের কোনো হদিস না পাওয়া যায় এবং তারা অন্য যেখানে চলে যায় সেখানে গিয়ে তারা নতুন জীবন শুরু করে

About

Check Also

হাসিনার ট্রাভেল ডকুমেন্টে কী লিখেছে ভারত

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যিনি টানা চারবার ক্ষমতায় ছিলেন, বর্তমানে ভারতীয় মাটিতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছেন। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *