মসিউর রহমান রাঙ্গা হলেন বাংলাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টির একজন প্রখ্যাত রাজনীতিবীদ। তিনি এই দলে যোগদান করার পর থেকে দলকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সততা ও নিষ্ঠার সহিত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি রংপুর-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সম্প্রতি জানা গিয়েছে তিনি দল থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। মসিউর রহমান রাঙ্গাকে কেনো অব্যাহতি ডেওয়া হয়েছে সেই বিষয়ে জানালেন জি এম কাদের।
আমি জানি যে জিএম আমাকে বরখাস্ত করতে পারে। আমি খুশি নই, এখন নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারছি বলে মন্তব্য করেন মসিউর রহমান রাঙ্গা। তিনি বলেন, আমি শুধু বলেছি, রওশন এরশাদকে অপসারণের প্রক্রিয়া সঠিক ছিল না। এতে জিএম কাদের ক্ষুব্ধ হন। আমি হঠাৎ মুক্তি পেয়েছিলাম। বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচা ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ সব পদ থেকে অব্যাহতির বিষয়টি জানাতে তিনি এই সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন।
মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, আমি কাউন্সিলে বলেছিলাম ওই ধারা পরিবর্তন করতে হবে। আমরা একটা সংবিধান জিএম চাই। কিন্তু কিছু কারণে তিনি এই ধারা বজায় রেখেছেন। ধারা পরিবর্তন না হলে দলটি করবে না। অন্য কোনো দলে যাবো না। আগামীতে দুই দলের বেশি দল থাকবে না। আমি বাঁচি বা না থাকি তাতে কিছু যায় আসে না। দল যাতে ভালোভাবে চলতে পারে, আমি খরা-বন্যায় মানুষের পাশে দাঁড়াব।
তিনি বলেন, আমি শুধু বলেছি, রওশন এরশাদকে অপসারণের প্রক্রিয়া সঠিক ছিল না। এতে জিএম কাদের ক্ষুব্ধ হন। আমি হঠাৎ মুক্তি পেয়েছিলাম। এখনো চিঠি না পেলেও গণমাধ্যমের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। ১৮ বছরের জন্য প্রেসিডিয়াম সদস্য। আমাকে হয়রানি করা হয়নি, এমনকি পাবের কর্মীদেরও হয়রানি করা হয়েছিল। আমাদের সংবিধানের 13 অনুচ্ছেদে চেয়ারম্যান যা খুশি তাই করতে পারেন।
তিনি বলেন, সম্প্রতি রওশন এরশাদ পরিষদের জন্য চিঠি দিয়েছেন। ওই চিঠির পর পার্টির চেয়ারম্যান আমাকে সংসদীয় দলের বৈঠক ডাকতে বলেন। আমি এজেন্ডা নিয়ে কথা বললে তিনি (চেয়ারম্যান) বলেন, দরকার নেই। ৩১ আগস্ট আমরা দেখা করি, চিঠিতে স্বাক্ষর হয় ১ সেপ্টেম্বর। বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে সরানোর জন্য এরশাদকে চিঠি দিতে গেলেন রওশন, স্পিকার বলেন, কী দিলেন? এই কয়েকটা দিন থাকলে কী হতো?
রাঙ্গা বলেন, এরশাদ সাহেব যখন মারা যান, তখন দল ভাঙতে চলেছে। একদিকে জিএম কাদের, অন্যদিকে রওশন এরশাদ। দুজনকেই বুঝিয়ে বললাম। রওশন এরশাদ আমাকে বারবার ফোন করলেও আমি তার কাছে যাইনি। এবার দল ভাঙলে তা হবে ৮ বার। তিনি বলেন, গতকাল আমার ছবিতে আগুন দেওয়া হয়েছে। আমার সামনে আপত্তি করব না, এটা একটা গণতান্ত্রিক অধিকার, তারা হয়তো আমাকে পছন্দ করবে না। গতকালের লড়াইয়ে মানুষ আহত হওয়ার কারণে আরও বড় কিছু ঘটতে পারে, সেটা কি দলের জন্য ভালো হবে। আমি বলি রংপুরে আর কোনো সংঘাত হবে না।
১৪ সেপ্টেম্বর জাপা তাকে কোনো প্রকার শোক বা নোটিশ ছাড়াই মুক্তি দেয়। গত কাউন্সিলে মসিউর রহমান রাঙ্গা মহাসচিব নির্বাচিত হন। কয়েক মাস পর তাকে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরিয়ে দেন জিএম কাদের।
প্রসঙ্গত, জি এম কাদের হলেন জাতীয় পার্টির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। এই সম্মানীয় পদে অধিষ্ঠিত হবার পর তিনি সততার সহিত তার দায়িত্ব পালন করছেন। দলটির প্রতিষ্ঠাতা হলেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। তার সহধর্মিণী রওশন এরশাদও দলের প্রধান হিসেবে দায়িত=ব পালন করেছিলেন। তবে তার অসুস্থ্যতার জন্য তিনি তার দায়িত্ব বেশিদিন ধরে রাখতে পারেননি।