কেকের প্রনায়নের পর একে একে বেরিয়ে আসছে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের তথ্য। যা নিয়ে চলছে নানা ধরনের বিতর্ক। কেউ বলছে তার নিথর হওয়ার ঘটনা একদম স্বাভাবিক। তবে অনেকের দাবি তাকে নিথর করা হয়েছে। তবে সকল বিতর্ক চলা কালে নতুন বিতর্কে
সৃষ্টি করলেন, পশ্চিমবঙ্গের ( West Bengal ) জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী রূপঙ্কর বাগচী অবশেষে কেকে ইস্যুতে মুখ খুললেন। সংবাদ সম্মেলন ডেকে সবার সামনে ক্ষমা চান তিনি। এমনকি বিতর্কিত ভিডিওটিও মুছে দেন তিনি।
বলিউডের জনপ্রিয় গায়ক কেকে সম্প্রতি একটি কনসার্টে গিয়েছিলেন কলকাতায়। তখন রূপঙ্কর বাগচীকে ( Rupankar Bagchi ) ঘিরে কলকাতার মানুষের উন্মাদনা ও উত্তেজনা দেখে রেগে যান। একটি ভিডিও বার্তায়, রূপঙ্কর জিজ্ঞাসা করেন, “কে কে?” তিনি বলেন, কলকাতার শিল্পীরা কেকে থেকে ভালো গান করেন।
রূপঙ্করের মন্তব্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কের ঝড় ওঠে। কেকে-এর ( KK’ ) আকস্মিক মৃ/ ত্যুতে সেই বিতর্ক আরও বেড়ে যায়। রূপঙ্করের বিতর্কিত মন্তব্যের একদিন পর কলকাতায় কনসার্ট চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েন কেকে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক জানান, তার মৃ/ ত্যু হয়েছে।
কেকে-র মৃ/ ত্যুতে ক্ষুব্ধ রূপঙ্কর। প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে। পুলিশের সাহায্যও চেয়েছেন তিনি। এবার পুরো বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিয়েছেন গায়ক। সংবাদ সম্মেলনে হাত গুটিয়ে ক্ষমা চান তিনি।
রূপঙ্কর বলেন, “আমি প্রয়াত কেকে-এর পরিবারের প্রতি আমার নিঃশর্ত সমবেদনা জানাচ্ছি। যে ভিডিওটি গত কয়েকদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং এর বাইরেও এত উত্তেজনার বিষয় হয়ে উঠেছে, আমি এখানে আসার আগেই তা যোগাযোগ মাধ্যম থেকে মুছে দিয়েছি। আমি প্রয়াত গায়কের পরিবারের সাথে আমার কোনো পরিচিতি নেই। তবে আপনাদের (মিডিয়া) মাধ্যমে আবারও বলছি আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। কেকে আজ যেখানেই আছেন, আল্লাহ যেন তাকে শান্তিতে রাখেন।”
আশংকা প্রকাশ করে রূপঙ্কর আরও বলেন, “আমি ভাবিনি আমার সংগীত জীবনে আমাকে এমন ভয়াবহতার মুখোমুখি হতে হবে। যেখানে উড়িষ্যায় বসে একটি ভিডিও পোস্ট এমন পরিস্থিতি তৈরি করবে যা আমার পুরো পরিবারকে চরম আতঙ্ক, উদ্বেগ এবং মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে ঠেলে দেবে।” তালা থানার পুলিশ আমার বাড়ির বাইরে নিরাপত্তা দেবে।আমার স্ত্রীর ফোনে সব সময় হুমকি আসবে।একজন গায়ক হিসেবে আমি দেশ-বিদেশের কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি।এত বছর ধরে নিরন্তর তাদের আবেগ অনুভব করেছি। বিভিন্ন স্তরে স্বীকৃতি পেয়েছি। মুহূর্তের অসাবধানতা যে এমন অস্থির ও মারাত্মক আবেগ নিয়ে আসবে কে জানত?এত ঘৃণা,এত বিরক্তি,এত বৈপরীত্য-কিন্তু অনেক কিছু তৈরি হয়েছে যে বলতে পারিনি। আমার কথা ঠিক আছে।”
তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রূপঙ্কর বলেন, “কে কে-র প্রতি আমার কোনো ব্যক্তিগত ক্ষোভ নেই। থাকার প্রশ্নই আসে না। আমি শুধু তার কনসার্টের মাধ্যমে যে উন্মাদনা তৈরি করেছি তা তুলে ধরতে চেয়েছিলাম এবং বলতে চেয়েছিলাম যে আপনি বাঙালি গায়কদের প্রতি একই রকম মমতা দেখান। ব্যক্তিগতভাবে, আমি ঈশ্বরের আশীর্বাদ এবং আপনার ইচ্ছায় একজন গায়ক হিসাবে আপনার কোন ব্যক্তিগত হতাশা নেই। কিন্তু একজন বাঙালি গায়ক হিসাবে, একটি সম্মিলিত বিপদ রয়েছে। আজকাল আরও বেশি করে, মনে হচ্ছে যে দক্ষিণ বা পশ্চিম ভারত রক্ষা করার জন্য আমরা যা করে তা করতে দ্বিধাবোধ করছি। এর শিল্পীদের স্বার্থ। শিল্প-সাহিত্য-সংগীত প্রায় একটি কঠিন খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা প্রাদেশিক অভিনয়শিল্পীর মতো। তাই আমি একা কথা বলতে চাইনি। আমি একটি দলের কথা বলতে চেয়েছিলাম।”
বক্তব্যের শেষ অংশে রূপঙ্কর বলেছিলেন, কে জানে, চূড়ান্ত দুর্ভাগ্য এভাবে লুকিয়ে আছে কেকে। এটা হৃদয়বিদারক যে একজন বিখ্যাত শিল্পী কলকাতার মঞ্চে গান গাইতে এসে এভাবে প্রাণ হারিয়েছেন।
গত মঙ্গলবার ৩১ মেয়ে সন্ধ্যায় কলকাতায় একটি অনুষ্ঠানে গান গেয়ে হোটেলে ফেরার পর অসুস্থ বোধ করেন কেকে। এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যওয়া হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তাকে মৃ/ ত ঘোষণা করা হয়। বুধবার বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে মুম্বাই থেকে শিল্পীর স্ত্রীর কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। তবে তার প্রনায়নের পরে তার নিথর হওয়া কেন্দ করে অনেকের মধ্যে মিশ্র পতিক্রিয়া দেখা যায়।