নাট্য জগতের পরিচিত নাম অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। আগের মতো অভিনয়ে নিয়মিত না হলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় সবসময়ই সক্রিয় তিনি। তিনি প্রায়ই এর মাধ্যমে তার মনের ভাব প্রকাশ করেন।
মঙ্গলবার বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেন শবনম ফারিয়া। স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
“পর্দার সামনে বা পর্দার আড়ালে, যে যে ক্ষেত্রেই কাজ করুক না কেন, সবাই মানুষ। সৃষ্টিকর্তা সবাইকে একই রকম করেছেন। যারা ব্যাংকে কাজ করেন, শিক্ষকতা করেন, কর্পোরেট কাজ করেন বা ডাক্তার, হাত-পা কাটলে যেমন ব্যাথা পান, যারা পর্দার সামনে কাজ করেন তারাও একই ব্যাথা পান।
পৃথিবীতে আসার প্রক্রিয়া সবার জন্য একই, মৃত্যুর পর মুসলমান হলে তাকে দাফন করা হয়, অন্য ধর্মের হলে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। এমন কোনো পেশায় কাজ করলে তাকে দাফন করা হবে না, নাকি ভিন্ন নিয়মে তাকে সমাহিত করা হবে এমন কোনো নিয়ম স্রষ্টা নির্ধারণ করেননি! পর্দার সামনে হোক বা যেকোনো পেশায় কাজ করা হোক, প্রত্যেকেরই ব্যক্তিগত জীবন আছে, রয়েছে নানা উত্থান-পতন। আপনি কি জানেন একজন ব্যক্তি কত স্বপ্ন এবং আশা নিয়ে একটি পরিবার শুরু করেন? কোনো কারণে সংসার করা সম্ভব না হলে কতটা কষ্ট হয় জানেন?
বিশ্বাস করেন, প্রত্যেকেরই একটি পরিবার আছে। যারা পর্দার সামনে কাজ করেন তারা সমাজ বা পরিবারের বাইরে নন। ধরুন, কোনো কারণে আপনার বোনের সংসার টিকল না, আর তার আশেপাশের লোকজন না জেনে আজেবাজে কথা বলছে, আপনার মা বা আপনার কেমন লাগবে? বিশ্বাস করুন যে প্রত্যেকের মা ভাই/বোন একই রকম অনুভব হবে।
আমি ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারি- ২০২০ সাল পর্যন্ত অভিনয় আমার পেশা ছিল, আমি আমার পরিবারের হাজার বাধা সত্ত্বেও অভিনয় করেছি। কারণ আমি কাজ ভালোবাসি। একটা ভালো স্ক্রিপ্ট আসলে এক্সাইটমেন্টেয রাতে ঘুম হয় না! যদিও গত দুই বছর ধরে আমি আগের মতো কাজ করিনি বা বিভিন্ন কারণে কম কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
কিন্তু আমি যখন কাজ করতাম, তখন আমার জন্য আরও ১০টি কাজের মতো ছিল, আমি সকালে উঠে শুটিং করতে যেতাম, রাতে বাসায় আসতাম। শুক্র-শনিবার খুব জরুরি না হলে শুটিং করতাম না। শুধুমাত্র পার্থক্য ছিল, অন্যরা ৯-৫টা পর্যন্ত কাজ করেন, আমাদের ১১-১১টা কাজ করতে হয়।
এখন কাজের ধরনে পর্দার সামনের মানুষগুলোকে চেনেন। কাউকে আপনার ভালো লাগে, কাউকে আপনা কম ভালো লাগে। কেউ কেউ এটা পছন্দ নাও করতে পারে। এটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু একজন লোক তার কষ্টের কথা বলছে, আর আপনার হাতে একটা ফোন আছে, তাই আপনি যা খুশি বলবেন, এটা খুবই খারাপ অভ্যাস। শুধু শুধু কাউকে আঘাত করা অপরাধ।
দয়া করে এমনটা আর করবেন না, কারো কষ্ট কমাতে না পারলে বাড়াতে ভূমিকা রাখবেন না। বিশ্বাস করুন, কেউ ইচ্ছা করে কারো সংসার ভাঙে না!
যে কোনো পেশায় থাকা প্রত্যেকেই স্বামী/সন্তান নিয়ে সুখে থাকতে চায়।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জমকালো আয়োজনে বিয়ে করেন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া ও বেসরকারি চাকরিজীবী হারুন অর রশিদ অপু। এর আগে ২০১৫ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের পরিচয় হয়। তারপর বন্ধুত্ব ও প্রেম। তিন বছর পর, তাদের ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে আংটি বদল হয়।
বিয়ের ঠিক এক বছর ৯ মাস পর ডিভোর্স হয়ে যায় শবনম ফারিয়ার। তিনি তার স্বামী হারুন অর রশিদ অপুকে ২৭ নভেম্বর ২০২০ তারিখে তালাক দেন। এই অভিনেত্রী বলেছেন যে এই বিচ্ছেদ দুজনের সম্মতিতেই হয়েছে।