মোঃ আব্দুর রাজ্জাক হলেন বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের একজন প্রখ্যাত রাজনীতিবীদ। তিনি বর্তমানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সরকারের কৃষিমন্ত্রী। এই সম্মানীয় পদে আসীন হবার পর থেকে মোঃ আব্দুর রাজ্জাক সততা ও নিষ্ঠার সহিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি তিনি তার এক বক্তব্যে বলেছেন বিপর্যয় এড়াতে সরকার তেলের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছে।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার মধ্যে দেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল ও স্বস্তিতে রাখতে সরকার তেলের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম আরও কমলে দেশেও তেলের দাম কমবে বলে জানান তিনি।
রোববার (৭ আগস্ট) সকালে কুমিল্লা নগরীর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে সিলেট, কুমিল্লাসহ পাহাড়ি এলাকায় তৈল ফসল ও ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি বিষয়ক কর্মশালা শুরুর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (BR) এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (DAE) কর্মশালার আয়োজন করে।
মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে তেলের দাম কিছুটা বেড়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ আন্তর্জাতিক সংকট এর জন্য দায়ী। এই সংকটের কারণে সারা বিশ্বে অর্থনীতি বিপর্যস্ত। দেশের এই অস্থিরতা মোকাবেলায় সরকার তেলের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছে। তেলে এত ভর্তুকি দিলে আমাদের বৈদেশিক রিজার্ভ অনেক কমে যাবে, তাহলে পুরো জাতি হুমকির মুখে পড়বে। মিতব্যয়ী এবং মিতব্যয়ী হওয়ার চেয়ে এখনই সাবধান হওয়া ভাল। বর্তমানে সাময়িকভাবে একটু কষ্ট স্বীকার করছি যাতে আমরা সাবধান হতে পারি। আমরা দেশকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারি না। এ কারণে সরকার তেলের দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছে, যাতে তেলের ব্যবহার কিছুটা কম হয় এবং আমরা যাতে সহনীয় অবস্থায় টিকে থাকতে পারি এবং শ্রীলঙ্কার মতো দুর্যোগের মধ্যে পড়তে না পারি। ‘
তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে কৃষিতে কোনো প্রভাব পড়বে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বিদ্যুতের দাম বাড়েনি, তাই বৈদ্যুতিক সেচের কোনো সমস্যা হবে না। তবে সামগ্রিকভাবে কৃষিতে কিছুটা প্রভাব পড়বে। কৃষি উৎপাদন কমবে না, কৃষকের লাভ কমবে। বিশ্ব পরিস্থিতি একটু কঠিন হলেও আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে মোকাবেলা করতে হবে। ‘
মন্ত্রী আরও বলেন, সিলেট ও পাহাড়ি এলাকায় অনেক জমি পড়ে। দেশের ক্রমবর্ধমান খাদ্যের চাহিদা মেটাতে এসব জমি কোনোভাবেই পতিত রাখা যাবে না। এছাড়া ধানের উৎপাদন না কমিয়ে বিদ্যমান শস্য আবর্তনে তেল ফসলকে অন্তর্ভুক্ত করার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। সে জন্য কৃষি কর্মকর্তাদের আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।
কৃষি সচিব মো. সৈয়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরফানুল হক রিফাত, বিআরআই মহাপরিচালক শাহজাহান কবির, কৃষি সম্প্রসারণ মহাপরিচালক বেনজীর আলম, বিএডিসি চেয়ারম্যান এএফএম হায়াতুল্লাহ, বারির মহাপরিচালক দেবাশীষ সরকার, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, তেলের দাম রাতারাতি বেড়ে যাওয়ায় মানুষ একেবারে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। একবারে এত টাকা বৃদ্ধি পাওয়াটা সাধারণ মানুষ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেনা। দেশের প্রায় সব জায়গায় প্রতিবাদ মিছিল বের হয়েছে।