বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগের প্রাদুর্ভাবের পর কুয়েতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংখ্যা ব্যাপক হারে কমতে শুরু করেছে, যেটা রেমিটেন্সের প্রবাহের ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। এক সময় দেশটিতে তিন লাখেরও বেশি বাংলাদেশি বসবাস করতেন কিন্তু সেই সংখ্যা এখন নেমে আড়াই লাখেরও কম হয়েছে। তবে বিশ্বের যে সকল দেশ থেকে রেমিটেন্সের প্রবাহ বাংলাদেশে রয়েছে সেদিক থেকে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে কুয়েত।
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগের কারণে বিভিন্ন দেশে ল’কডা/’উন ও অচলাবস্থার কারণে একদিকে প্রবাসীরা নিয়মিত বেতন পাননি, অন্যদিকে অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন। দেশে ফিরেও কর্মস্থলে ফিরতে পারেননি অনেকে।
কুয়েতে দীর্ঘ দিন ধরে তিন লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি বসবাস করলেও বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগ সংক্রান্ত নানা কারণে সেই সংখ্যা আড়াই লাখের নিচে নেমে এসেছে। প্রবাসীর সংখ্যা কমলেও রেমিটেন্স পাঠাতে এগিয়ে রয়েছে কুয়েত। মধ্যপ্রাচের মধ্যে তৃতীয় হলেও বিশ্বে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে দেশটি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সৌদি আরব থেকে ২০ দশমিক ৭৮ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৬ দশমিক ২৮ শতাংশ, ব্রিটেন থেকে ১১ দশমিক ৩৩ শতাংশ, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৮ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং কুয়েত থেকে ৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ রেমিট্যান্স আসে বাংলাদেশে।
এদিকে কুয়েত বিভিন্ন দেশের প্রবাসীদের পারিবারিক ও ভিজিট ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে। এতে হতাশ প্রবাসীরা। তবে নতুন পদ্ধতি ও শর্ত পরীক্ষা করে আবারও এই ভিসা চালুর আশ্বাস দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সম্প্রতি, কুয়েতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফ্যামিলি এবং ভিজিট ভিসা স্থগিত করার জন্য রেসিডেন্সি বিষয়ক বিভাগকে মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশনা কার্যকর থাকবে। তবে যাদের ইতিমধ্যে ফ্যামিলি ভিসা দেওয়া হয়েছে তারা নতুন নির্দেশের আওতায় আসবেন না। এছাড়া চিকিৎসক ও ইউরোপীয় নাগরিকরা এই সিদ্ধান্তের আওতায় পড়বেন না।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকার দেশে রেমিটেন্সের প্রবাহ বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন দেশে জনশক্তি রপ্তানি করতে কাজ করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে কয়েকটি দেশে জনশক্তি রপ্তানি করার জন্য চুক্তি করেছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এদিকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগের কারণে রেমিট্যান্সের প্রবাহে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল, তবে সেটা কাটিয়ে উঠে আগের অবস্থায় যাবে এমনটাই আশাবাদ জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।