নৌকার বিপরীতে ধানের শীষ না থাকায় কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের মাঠে এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান উত্তেজনা নেই। পরিবর্তে, স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা স্নায়ুযুদ্ধকে মাঠের যুদ্ধের চেয়ে বড় হিসাবে দেখেন। এ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থীর বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক (সাক্কু) প্রধান প্রার্থী হলেও মূল আলোচনা সাংসদ সদস্য বাহাউদ্দিনকে (বাহার) ঘিরে। কারণ, আগের দুই নির্বাচনে মনিরুল বাহারের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। এবার বাহারের অনুগত আরফানুল হক আওয়ামী লীগের প্রার্থী। তিনি পরাজিত না হলে কুমিল্লার রাজনীতিতে বাহাউদ্দিনের প্রভাবও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। তাই মেয়র নির্বাচনকে ঘিরে বাহারের মুখোমুখি হয়েছেন মনিরুল।
কুমিল্লা সদরের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের বিরুদ্ধে আবারও অভিযোগ তুলেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু। শনিবার বিকেলে তিনি কুসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদুন্নবী চৌধুরীর কাছে নতুন দুটি লিখিত অভিযোগ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু নিজেই। সাক্কু জানান, এমপি বাহার এমপিওভুক্ত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও সিটি করপোরেশনের আওতাধীন বিভিন্ন মসজিদের ইমামদের নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এ নির্দেশনার কারণে উল্লিখিত শিক্ষক ও ইমামগণ প্রচার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। যা সিটি করপোরেশন নির্বাচনী আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
একই সঙ্গে আরেকটি অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, এরই মধ্যে নওকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত ও সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে জনসভা, মিছিল ও শোভাযাত্রা করেছেন। নিচে যাচ্ছে বহিরাগতরা নির্বাচনের দিন জনসভা করে নির্বাচনী পরিবেশ প্রভাবিত করার চেষ্টা করবে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে, যা আচরণবিধির লঙ্ঘন। রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদুন্নবী চৌধুরী বলেন, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর কাছ থেকে দুটি অভিযোগ পেয়েছি। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব। উল্লেখ্য, সাক্কুর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন এমপি একিউএম বাহাউদ্দিন বাহারকে নির্বাচনী এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ উপেক্ষা করে এখনো নির্বাচনী এলাকায় রয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, প্রচারের বাকি দুই দিন, নির্বাচনের চার দিন। এমন উত্তেজনাপূর্ণ সময়ে কুমিল্লা সিটিতে নির্বাচনী আলোচনায় রয়েছেন কুমিল্লা সিটি-৬ আসনের সংসদ সদস্য আকম বাহাউদ্দিন বাহার। সাবেক মেয়র ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু গত ৮ জুন স্থানীয় সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার এমপি বাহারকে এলাকা ছাড়ার নোটিশ দেয় নির্বাচন কমিশন। কিন্তু নোটিসের পরেও তিনি এলাকা ছাড়েননি এমনটাই জানা গেছে।