কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৪টি ভোটকেন্দ্রের ফলাফল বাতিল করে পুনঃনির্বাচন স্থগিত ও প্রকাশিত গেজেট প্রকাশের দাবিতে মামলা করতে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে যাচ্ছেন পরাজিত মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু। এরই মধ্যে সাক্কু এ সংক্রান্ত নথি ও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে। আগামী দু-একদিনের মধ্যে আইনি লড়াই শুরু করবেন বলে জানান তিনি।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) আসনের ১০৫টির মধ্যে চারটিতে পুনঃভোটের আবেদন করেছেন পরাজিত প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু। গত ২৪ জুন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে লিখিত আবেদন করলেও মঙ্গলবার রাতে বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান সাবেক মেয়র সাক্কু। ইতোমধ্যে বিজয়ী মেয়র আরফানুল হক রিফাত, ২৭টি সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলরদের গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। কেন্দ্র ভিক্টোরিয়া সরকারী বিদ্যালয় নং ৪২ (উত্তর দিকে তিন তলা ভবন), কেন্দ্র দিশাবন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নং ৭৮ (পশ্চিম দিকে নতুন ভবন এবং পুরানো ভবন), কেন্দ্র নং ৭৯ ডিসাবন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (উত্তর দিকে ভবন) পক্ষ) এবং কেন্দ্র শালবন বিহার সরকার নং ৯৭ সাক্কু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ফলাফল (পূর্ব-উত্তর পাশের ভবন) বাতিল করে এবং গেজেট স্থগিত করে পুনঃভোটের জন্য আবেদন করেছে। আবেদনে সাক্কু উল্লেখ করেন, ১৫ জুন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিন বিকাল ৪টা পর্যন্ত ১০৫টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ৪২, ৭৮, ৭৯ ও ৯৭ চারটি কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
এরপর রিটার্নিং অফিসার বেনামে ফোন পেয়ে পাঁচ মিনিট সময় চেয়ে ফল ঘোষণা স্থগিত করে চেয়ার থেকে উঠে যান। আইন ও নিয়ম বহির্ভূতভাবে বাকি চারটি কেন্দ্রের মেয়র প্রার্থীদের ফলাফল ঘোষণা স্থগিত করে কাউন্সিলর পদের ফলাফল ঘোষণার বিষয়টি এলে আমি ও আমার নির্বাচনী এজেন্টরা প্রতিবাদ করি। রিটার্নিং অফিসার প্রায় ৪৫ মিনিট ভোট গণনা স্থগিত করেন। ওই চারটি কেন্দ্রের ফলাফল ভুয়া ও কাল্পনিক দাবি করে তিনি লিখেছেন, আমাকে পরাজিত করতে রিটার্নিং কর্মকর্তা পৃথক চারটি কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা না করে একসঙ্গে ফলাফল ঘোষণা করেন। এরপর আমি (টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী) ৪৯,৯৬৭ ভোট এবং নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত ৫০,৩১০ ভোট পেয়ে তাকে ৩৪৩ ভোট পেয়ে ব্যক্তিগতভাবে বিজয়ী ঘোষণা করি, যা সম্পূর্ণ অবৈধ। মনিরুল হক সাক্কু বলেন, আমি ২৪ তারিখ আবেদন করেছি। বর্তমানে ঢাকায় আছি। গেজেট প্রকাশের ৩৩ দিনের মধ্যে মামলা করার নিয়ম রয়েছে। আমি প্রস্তুতি নিচ্ছি, যে কোনো সময় মামলা করব। কুসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী বলেন, এটা নির্বাচন কমিশন দেখবে। আমার কিছু বলার নেই।
উল্লেখ্য, নিয়ম অনুযায়ী, নির্বাচনের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে হয়। তাই তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মামলা দায়েরের সব প্রস্তুতি গ্রহন করছেন বলে জানিয়েছেন সাক্কু নিজেই। এর আগে ২২ জুন চারটি কেন্দ্রের ফলাফল ও গেজেট বাতিলের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি দিয়েছিলেন সাক্কু। কিন্তু কমিশন তার আবেদন আমলে না নিয়ে যথাসময়ে গেজেট আকারে ফলাফল প্রকাশ করে।