সম্প্রতি এক ছাত্রলীগ নেত্রীর সাথে অসামাজিক আচরনের অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রলীগ নেতারা বিরুদ্ধে। যে ঘটনার পর সারা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনা সূত্রে এক সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, প্রথমে ওই ছাত্রলীগ নেত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয় ছাত্রলীগ নেতা। তবে তার কথায় রাজি হয় না ১৯ বছর বয়সী ওই ছাত্রলীগ নেত্রী। এরপরই ওই নেতা ওই নেত্রীর সাথ অসামাজিক আচারন করতে শুরু করে।
কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ শেখ ওই তরুনীকে বাজে পরামর্শ ও প্রাণ’নাশের হু’মকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন এক ছাত্রলীগ নেতা।
ওই তরুণী অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তার ব্যক্তিগত কিছু ছবি ভুয়া আইডি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করা হয়। অভিযোগে আরও ৩ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই তরুণী সোমবার বিকেলে কুষ্টিয়া মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
অভিযোগের ওই কপিতে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছাড়া অন্যদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে- কুষ্টিয়া শহরের পায়রাতলা এলাকার সোহেল রানার ছেলে জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ফারদিন সৃষ্টি, একই এলাকার জেলা ছাত্রলীগের সদস্য হৃদয়। এবং ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাইমিনুল মিরাজের ঘনিষ্ঠ সহযোগী।
অভিযোগকারীর (১৯) বাড়ি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ছাতিয়ান ইউনিয়নে। তিনি কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সহ-সম্পাদক। সে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে অনার্সে ভর্তির অপেক্ষায় রয়েছে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে দেওয়া অভিযোগে ওই ছাত্রলীগ নেতা উল্লেখ করেন, আমি কুষ্টিয়া ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করতাম এবং একপর্যায়ে তিনি আমাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। বিভিন্নভাবে খারাপ পরামর্শ দিয়ে, তাই আমি প্রায় এক মাসের জন্য তার কাছ থেকে দূরে সরে গেছি। যখন থেকে আমি সরে এসেছি, তখন থেকে অন্য আসামিরা বিভিন্ন ধরনের বাজে কথা বলে রাস্তায় আমাকে অনুসরণ করেছিল। চ্যালেঞ্জের নির্দেশে আমি ‘আঁখি খাতুন’ নামে একটি ভুয়া আইডি তৈরি করে আমার ছবি এডিট করে আমার ব্যক্তিগত ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে বিভিন্ন ফালতু পোস্ট করি। পরে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে বাধা দিলে আসামিরা আমাকে প্রাণনাশের হুম/কি দেয়।
অভিযোগে ওই ছাত্রলীগ নেতা অভিযোগও করেছেন, চ্যালেঞ্জে আরও বলেছেন- ‘আমার প্রস্তাবে রাজি না হলে সমস্যা আছে’। এ সময় তিনি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ বিভিন্ন হুমকি ও প্রাণনাশের হুমকি দেন। গত ১৭ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে অভিযুক্ত নং ৩ মোহাইমিনুল মিরাজের সঙ্গে দেখা হলে তিনি আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন, ছবিটি এখনো ভাইরাল হয়নি, আরও হবে। আসামি যেকোনো সময় আমার বড় ক্ষতি করতে পারে জানিয়ে ওই তরুণী ওসির কাছে আইনি সহায়তা চেয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সোমবার বিকেলে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছি।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ আসামিরা ইতোমধ্যে তার জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। আমার ব্যক্তিগত ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে এবং আমার এবং আমার পরিবারের মর্যাদাকে মারাত্ম’’কভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আমি তাদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
মুঠোফোনে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ শেখ চ্যালেঞ্জ জানান, এ ধরনের অভিযোগের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে তাকে কেউ কিছু জানায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান অনিক বলেন, এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেনের অফিসিয়াল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
তবে কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহিরুল ইসলাম জানান, এক তরুণী প্রথমে তার কাছে অভিযোগ নিয়ে আসেন এবং পরে দায়িত্বরত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন। অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, তাদের মধ্যে কোনো ঝামেলা হতে পারে।
অনেকে মনে করছে ব্যক্তিগত কোন সমস্যার করনে ছাত্রী লীগ নেতার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করতে পারে। এবিষয়ে পুলিশ যানায় ঘটনা যাই হোক সত্যতা যাচাই করে অভিযুক্তর উপর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা তদন্ত করছি বিষটি নিয়ে।