জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, সীমান্ত খুলে দিলে ভোক্তারা ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকার মধ্যে আলু খেতে পারবে। তবে এটি কোনো স্থায়ী সমাধান নয় বলে জানান তিনি।
সোমবার (২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, এখন সীমান্ত খুলে দিলে কৃষক বা আলু ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা ক্ষতির মুখে পড়বেন। আগামী বছর তাদের আলু উৎপাদনে উৎসাহিত করা হবে না। বিবেচনা করার অনেক বিষয় আছে।
নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষা করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে অস্বাভাবিক আচরণ করছে। দুর্বল আইন ও ভোক্তাদের সচেতনতার অভাবে এসব ব্যবসায়ীকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। কিন্তু সরকার তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে। প্রয়োজনে এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও টাকার মান কমে যাওয়া দেশের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ মন্তব্য করে মহাপরিচালক বলেন, এতে দেশের ১৭ কোটি মানুষের কষ্ট হচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধসহ আন্তর্জাতিক ঘটনা দেশটির দ্রব্যমূল্যের ওপর প্রভাব ফেলছে। তবে এর সুযোগ নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা কিছু পণ্যের কারসাজি করে অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়াচ্ছে, যার সঙ্গে এসব আন্তর্জাতিক ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ এসব খাদ্যপণ্যের বেশির ভাগই আমাদের দেশে উৎপাদিত হয়।
ডিম, কাঁচামরিচ, আলুর দাম আকস্মিকভাবে বেড়ে যাওয়ার উদাহরণ দিয়ে ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালক বলেন, এসব ক্ষেত্রে দাম বাড়ায় কোনো ফর্মূলা কাজ করে না। এগুলো অস্বাভাবিক আচরণ।
তবে নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক রাখার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সীমিত জনবল নিয়ে কাজ করছে বলে উল্লেখ করেন এএইচএম সফিকুজ্জামান।
তিনি বলেন, দেশের অনেক জায়গায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কোনো কর্মকর্তা নেই। তারপরও সীমিত ক্ষমতা নিয়ে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। এর সুফলও বাজারে কমতে শুরু করেছে।
এছাড়া শুধু আইনের দুর্বলতার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ভোক্তাদের তাদের অধিকার সম্পর্কে আরও সচেতন হতে হবে।
তিনি বলেন, শুধু আইন প্রয়োগ করে পণ্যের দাম কমানো সম্ভব নয়। এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। ভোক্তারা সচেতন না হওয়া পর্যন্ত অসাধু ব্যবসায়ীরা বাজারে কারসাজি চালিয়ে যাবে।
এছাড়া বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার এসব সিন্ডিকেটর দমনে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করবে না বলে উল্লেখ করেন ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। এ ক্ষেত্রে তিনি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়ার উদাহরণ দেন।
ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ক্ষুদ্র খামারিরা সাময়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বৃহত্তর পর্যায়ে দেশের ভোক্তাদের স্বার্থে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। এ সময় তিনি সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।