মারা গেছেন সাবেক ইসি মাহবুব তালুকদার। আজ দুপুরে তিনি মারা যান বলে নিশ্চিত করেছেন তার মেয়ে আইরন তালুকদার। তিনি জানান, সকালে তার বাবার অক্সিজেন লেভেল কমে গিয়েছিল। দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে। সেখানে তার বড় ধরনের হার্ট অ্যাটাকের কথা জানান চিকিৎসক।
আইরিন জানান, মাহবুব তালুকদার শারীরিক নানা জটিলতায় দুই মাস ধরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখান থেকে বাসায় ফেরার পর তার শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল।
মাহবুব তালুকদারকে ভারতের চেন্নাইয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তার মেয়ে।
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭-এ, মাহবুব তালুকদারকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সদস্য হিসাবে নিযুক্ত করেছিলেন।
মাহবুব তালুকদার ১৯৪২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নবাবপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন।
দৈনিক ইত্তেফায় সাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করা মাহবুব তালুকদার দীর্ঘদিন শিক্ষকতা পেশার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি তৎকালীন জগন্নাথ কলেজ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও স্থাপত্য বিভাগ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে অধ্যাপনা করেন।
১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং মুজিবনগর সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেন। পরবর্তীকালে তিনি সরকারি চাকরির ধারাবাহিকতায় পাঁচ বছর বঙ্গভবনে অবস্থানকালে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হন।
২৪ জানুয়ারী, ১৯৭২ সালে, তিনি রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর একজন বিশেষ কর্মকর্তা হিসাবে নিযুক্ত হন। এরপর তিনি রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদুল্লাহর জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে তিনি তার সহকারী প্রেস সচিবের দায়িত্ব পালন করেন।
মাহবুব তালুকদার শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। 1999 সালে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে অবসর গ্রহণের আগ পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
শিশু সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১২ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান। মাহবুব তালুকদার ও তার স্ত্রী নিলুফার বেগমের দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে।
গেল বছর নির্বাচন কমিশনার হিসেবে তার মেয়াদ শেষ হয়। এরপর থেকেই নিজেকে কিছুটা অন্তরালে নিয়ে গেছিলেন ইসি তালুকদার। যার বেশ কিছুদিন পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।