সোমবার বিকেল ৪ টার দিকে সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বাংলার অন্যতম বরেণ্য অভিনেতা ও নাট্যকার ড. ইনামুল হক (৭৮)। এরপর সর্বস্তরের শ্রদ্ধার জন্য তার মৃতদেহকে নেয়া হয় ঢাকা রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে। এ সময়ে গুণী এই তারকাকে শেষবারের মতো দেখতে রীতিমতো দুর দুরান্ত থেকে ছুটে আসেন তার দীর্ঘদিনের নাট্যাঙ্গনের সতীর্থরা।
শোকপ্রতিক্রিয়া ও স্মরণ বক্তব্য রেখেছেন নাট্যাঙ্গনে তার দীর্ঘদিনের বন্ধুরা। জীবনসঙ্গীকে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছেন স্ত্রী নাট্যজন লাকী ইনাম।
স্বামীর মরদেহ সামনে রেখে চোখের জলে তিনিও জানিয়েছেন তার প্রতিক্রিয়া। নাটকের প্রতি ড. ইনামুল হকের নিবেদনকে স্মরণ করে আবেগঘন বক্তব্য রেখেছেন তিনি। লাকি ইনাম বলেন, “কিভাবে উনি ছাড়া বাকি জীবনটা থিয়েটার করবো, আমি বুঝতে পারছি না। আমার বিশ্বাস হচ্ছে না এই মানুষটি চলে গেছে। এত দেশপ্রেমী, এত মানবপ্রেমী, সবাইকে ভালোবাসতেন। কেউ তার সামনে বদনাম করতে পারতো না, বলতেন, ‘তোমরা হয়তো জানো না তার গুণ কোথায়’। থিয়েটারের ছেলে মেয়েরা তাঁর প্রাণ ছিলো। তাঁকে ছাড়া আমি একা একা কী করে থিয়েটার করবো, আমার সংগ্রাম কী করে চালাবো আমি জানি না। আমি জানি আমার সব কাজে আমি তোমাকে পাশে পাবো, পাশে পাবো তোমাকে। তুমি আমাকে ছেড়ে যেতে পারো না, কক্ষণো না।”
শোকসভায় বক্তব্য রাখেন নাট্যব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকিসহ অনেকে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, আগামীকাল (১২ অক্টোবর) সর্বস্তরের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে ড. ইনামুল হকের মরদেহ। সকাল সাড়ে ১০টায় সেখানে তাকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হবে। এরপর বেলা ১২টায় ইনামুল হককে নেওয়া হবে তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল বুয়েটে। সেখানে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে বাদ জোহর তাকে সমাহিত করা হবে।
এদিকে পরিবার-পরিজনদের পাশাপাশি বরেণ্য এই অভিনেতাকে হারিয়ে রীতিমতো কান্নায় ভেঙে পড়েছেন হাজারও সতীর্থরা। তার মৃত্যু কোনো ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তারা। কর্মজীবনে অংখ্য জনপ্রিয় নাটক উপহার দিয়েছেন তিনি, একই সাথে টেলিভিশনের জন্য লিখেছেন মোট ৬০টি নাটক।