২০ টিরও অধিক গাড়ি নিয়ে গতকাল বুধবার (২৭ অক্টোবর) মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে ডুবে যায় আমানত শাহ ফেরিটি। এ ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর না পাওয়া গেলেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন অনেকেই। এদিকে গতকাল থেকেই চলছে ডুবে যাওয়া যানবাহন উদ্ধারের অভিযান। ফেরিটি তীরে তুলতে কাজ করছে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা।
এদিকে জীবিকা নির্বাহের শেষ বাহনটি পানির নিচে ডুবে যাওয়ায় রীতিমতো ভেঙে পড়েছেন কাভার্ডভ্যান মালিক মো. হারুন অর রশিদ।
রশিদ বলেন, ‘গতকাল সকালের দিকে ফেরি ডুবে গেছে। তারপর থেকে ১২ ঘণ্টা পার হয়ে গেল। এখনো আমার গাড়িটি উদ্ধার হয়নি। ফেরিঘাটের সংশ্লিষ্ট কেউ এখনো এই গাড়িগুলো উদ্ধারে এগিয়ে আসলো না। প্রায় চার বছর আগে দুটি কাভার্ডভ্যান কিনেছি ৮০ লাখ টাকা দিয়ে। গাড়ি কেনার সময় ১২ লাখ টাকা লোনও করতে হয়েছে’।
বৃহস্পতিবার(২৮ অক্টোবর) সকাল ৯ টা ৪১ মিনিটে পাটুরিয়া ৫ নং ফেরিঘাটের ভাসমান কারখানা মধুমতির সামনে আলাপকালে এভাবেই আহাজারি করে কথাগুলো বলছিলেন রশিদ।
ভুক্তভোগী মো. হারুন অর রশিদ মাগুড়ার শাকিলা উপজেলার আরুয়াকান্দি গ্রামের বাসিন্দা।
মো. হারুন অর রশিদ বলেন, গাড়ি আয় দিয়ে এই লোনের কিস্তি দেই আর সংসার চালাই। পাটুরিয়ায় ফেরি ডুবে যাওয়ায় পরে আমার দুটি গাড়ি ভেসে যায় প্রায় আধা কিলোমিটার দক্ষিণে। ১৪ ঘন্টা ধরে পানির নিচে ৮০ লাখ টাকা মূল্যের দুটি গাড়ি। আমার অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেল।
তিনি আরও বলেন, বুধবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ৮ টার দিকে আমার গাড়ির চালক ফোন করে আমাকে বললো, ফেরিতে উঠেছি। এর কিছুক্ষণ পরই আনুমানিক ৯টার দিকে আবারও ফোন করে বললো, ভাই আমরা খুব বিপদে আছি। ফেরিতে থাকা সব ট্রাক চালকরা যে যার জীবন বাঁচানোর জন্য হুড়োহুড়ি করতাছে। আমার গাড়িটি ওই ফেরিটি পেছনে দিকে ছিল। ফেরিটি যখন ডুবে যায় তখন চালক গাড়িটি রেখে কোনমতে তার জীবন রক্ষা করে।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকাল ৯ টার দিকে ১৭ টি ট্রাক ও ৩ টি মাইক্রোবাসসহ বেশকিছু মোটরসাইকেল নিয়ে দৌলিতদিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে যায় ফেরিটি। এরপর মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে পৌছানোর পর ফেরিটি থেকে ২-৩ টি গাড়ি নেমে যাওয়ার পরই আচমকা ডুবে যায় আমানত শাহ ফেরিটি। এ ঘটনায় উদ্ধার অভিযান চলমান রয়েছে।