Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / কারাবন্দীদের জন্য সুখবর দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

কারাবন্দীদের জন্য সুখবর দিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় কারাগারে খাদ্য ব্যবস্থা ও পরিবেশ ব্যবস্থার উপর অভিযোগের শেষ নেই। অনেক নির্দোষ ব্যক্তিরা আদালতে তাদের নিরপরাধ প্রমাণ করতে না পারায় বিনা অপরাধে সাজা ভোগ করে থাকার নজির ভুরিভুরি রয়েছে। তার বাস্তব উদাহরণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বন্দি ও নারী বন্দীদের মৌলিক প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা তুলে ধরেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল আরো বলেন, সারা বিশ্বের চলমান পরিস্থিতির কারণে বন্দিদের সাক্ষাৎ বন্ধ রয়েছে। তাদের পরিবারের সঙ্গে সপ্তাহে একদিন ১০ মিনিট মোবাইল ফোনে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। মোবাইলে কথা বলার পাশাপাশি ভিডিও কলের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
রোববার সকালে গাজীপুরের কাশিমপুর কমপ্লেক্সে দ্বাদশ ব্যাচের উপ-জেলা ও ৫৯তম ব্যাচের বন্দি ও নারী বন্দীদের মৌলিক প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, কারাগারে দায়িত্ব পালন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ভিন্ন ও চ্যালেঞ্জিং। কারাগারের নিরাপত্তা বিধানের পাশাপাশি বন্দিদের মানবিক আচরণ ও প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে অপরাধীদের চরিত্র উন্নয়নের মাধ্যমে সমাজে পুনর্বাসনের জন্য ইতোমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান সরকার বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কারাগারগুলোকে সংশোধনাগারে রূপান্তরের জন্য ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। কারাগারের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে এবং কয়েদিদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে রুটি-গুড়ের পরিবর্তে সপ্তাহে চার দিন সবজি ও রুটি, দুই দিন খিচুড়ি এবং দিনে পুডিং রুটি দেওয়া হচ্ছে, যা যুগান্তকারী পরিবর্তন। বাংলা নববর্ষসহ বিশেষ বিশেষ দিনে উন্নতমানের খাবারের জন্য বন্দিপ্রতি বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ভাতা বাড়ানো হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু তার জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত ও তারুণ্যের সময় কাটিয়েছেন কারাগারের চার দেয়ালের মধ্যে। কারাগারে বসে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও প্রিজন সর্ম্পকে ডায়েরি বই দুটিতে বঙ্গবন্ধুর কারাবাস ও কারাগারের বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এই কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে নির্মমভাবে শহীদ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে গণতন্ত্রের জন্য বিভিন্ন আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে একাধিকবার কারাবরণ করেছেন।

তিনি বলেছিলেন”আমরা জানি কারাগারগুলি ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ,”। জনজীবনে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য অসামাজিক ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের নিরাপদে কারাগারে রাখা হয়। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অপরাধীদের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এভাবেই স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস ও কারাগারের নাম জড়িয়ে আছে।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, কারাগার এখন শুধু সাজা দেওয়ার জায়গা নয়; বরং, এটি বন্দীদের বিভিন্ন ধরণের কর্মমুখী প্রেরণামূলক প্রশিক্ষণ প্রদানের একটি মাধ্যম। কারাগারগুলো দক্ষ জনশক্তিকে সমাজের মূলধারায় পরিণত করার দায়িত্ব পালন করছে। দেশের সব কেন্দ্রীয় কারাগারসহ অধিকাংশ জেলা কারাগারে বন্দিদের বিভিন্ন ট্রেডের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। বন্দি শ্রমের উৎপাদিত পণ্য থেকে অর্ধেকই বন্দিদের দেওয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, কারাগারে নিরাপত্তা প্রদানের পাশাপাশি বন্দীদের মানবিক আচরণ ও প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে অপরাধীদের চরিত্রের উন্নয়নের মাধ্যমে সমাজে পুনর্বাসনের জন্য ইতোমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

মন্ত্রী পরে রিক্রুট ডেপুটি জেলার মধ্যে র‌্যাঙ্ক ম্যাচ বিতরণ করেন এবং নিয়োগপ্রাপ্ত প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। প্রশিক্ষণার্থীরা অন-সশস্ত্র যুদ্ধ এবং পিটি প্রদর্শন উপভোগ করে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা সেবা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন, কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএসএম আনিসুল হক উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, কারাবন্দীদের শুধু সাজা দেওয়ার জন্যই কারাগারে রাখা হয় না। কারাবন্দীদের দিয়ে বিভিন্ন উৎপাদনমূলক করানো হয় এবং বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন কাজের উপর দক্ষ করে গড়ে তোলা হয়। তাদের উৎপাদিত পণ্যের বেশির ভাগই কারাবন্দীদের মধ্যে বিতরণ করা হয় বলে জানিয়েছেন আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি আরো বলেন, এদের মধ্যে কিছু কারাবন্দীদের বিভিন্ন কাজের উপর দক্ষ এবং কর্মমুখী করে গড়ে তুলে সমাজের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার লক্ষ্য সরকারের।

About bisso Jit

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *