দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর ক্ষমতায় না থাকায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে একটা সময়ে যখন বিএনপির বিভিন্ন নেতাকর্মীরা দলে দলে পদত্যাগ করছিলেন, ঠিক তখনই আত্মবিশ্বাসের সাথে দলকে আঁকড়ে ধরেছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলের জন্য তার এই আত্মত্যাগ সহজে ভোলার নয়। এদিকে এই মুহূর্তে কারাগারের চার দেয়ালের মাঝে দিন কাটছে গুণী এই নেতার।
কারাবন্দি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম-ফেসবুকে আবেগমথিত পোস্ট দিয়েছেন তার বন্ধু, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ রোববার তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কারাদণ্ডের খবরে আমি খুবই মর্মাহত; বিশেষ করে আমি জানি তার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। প্রায় আড়াই বছর আগে ফেইসবুকে দেয়া এই পোস্টটির কথা মনে পড়ল:
১৯৬৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর, আমরা চারজন সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের একটি কক্ষে উঠেছিলাম, বেশিরভাগই একই বামপন্থী ছাত্র রাজনীতির সুবাধে। ঢাকা কলেজ হোস্টেলে থাকার পর থেকে ওদের দুজনের সাথে আমার বন্ধুত্ব। আমি ওই বছর হল সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হই; পরে তৎকালীন আইয়ুবপন্থী ছাত্র সংগঠন এনএসএফ-এর বাহিনী অন্তত দুবার আমাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। (এর ফলে একবার আমার একটি স্বর্ণ পদকও খোয়া গিয়েছিল বলে ওই ছাত্র সংগঠনের নেতারা দুঃখ প্রকাশ করেছিল; ক্ষমতাসীন সরকারের মদদপুস্ট হলেও ওইটুকু সৌজন্যবোধ তখন তাদের ছিল।)
এরপর আমাদের চার জীবনের পথ চলে গেছে ভিন্ন দিকে। এত বছর পর সম্ভবত এই প্রথম আমার জন্মদিনে আমরা চারজন একসাথে বসে আড্ডা দিলাম। হয়তো আমি এই অস্বাভাবিক বন্দিদশায় কিছু সময়ের জন্য অতীতে ফিরে যেতে চেয়েছিলাম।
এর আগে মধ্যরাতে নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এমনকি গ্রেপ্তারের পূর্বে বাসার সামনের রাস্তার বাতিও নিভিয়ে ফেলা হয়। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপির বিভিন্ন নেতাকর্মীরা।