বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন যে, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সমন্বয়ে দেশে গোষ্ঠীতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বর্তমানে তিনি পাশের দেশ থেকে কর্মসূচির ঘোষণা দিচ্ছেন, আর জেলখানায় আটক থাকা কয়েকজন ব্যক্তি বিশেষ ভূমিকা পালন করছেন। এর মধ্যে অন্যতম সালমান এফ রহমান, যাকে রিজভী ‘দরবেশ’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, তিনি কারাগার থেকেই ‘ঝাড়ফুঁক’ দিচ্ছেন।
বুধবার রাজধানীর রমনায় ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইইবি) সেমিনার হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী এসব মন্তব্য করেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (এ্যাব) এ আয়োজন করে।
রিজভী বলেন, “তিনি (সালমান এফ রহমান) মাঝেমধ্যে কারাগার থেকে ‘ঝাড়ফুঁক’ পাঠাচ্ছেন। অথচ তার নির্দেশে হাজারো শ্রমিক রাস্তায় নেমে যাচ্ছে! আমি জানি না, তাদের বিচার প্রক্রিয়া কীভাবে চলছে, কীভাবে তারা বাইরে থেকে এসব কথা বলছে?”
তিনি আরও বলেন, “নিশ্চয়ই তাদের বিশেষভাবে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে, যা তারা কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে।”
বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, “আমাদেরকে কারাগারে মাদকসেবী ও ফাঁসির আসামিদের সঙ্গে রাখা হতো। রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে আমাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। শেখ হাসিনার নির্দেশে গুম, খুন ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে, যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।”
সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আপনারা সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণ করবেন না। এমন সংস্কার আনুন, যাতে ফ্যাসিবাদের পুনর্জন্ম না হয় এবং মানুষ ন্যায়বিচার পায়।”
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের অবদানের কথা তুলে ধরে রিজভী বলেন, “জিয়াউর রহমান শুধু একজন রাষ্ট্রনায়ক নন, তিনি বহুমুখী নেতৃত্বের প্রতীক। মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান অসামান্য। আওয়ামী লীগ সরকার তার নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করলেও, জনগণ তাকে মনে রেখেছে।”
তিনি আরও বলেন, “স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগের কোন্দলের কারণে ১৫ আগস্টের ঘটনা ঘটেছিল। অথচ জিয়াউর রহমান বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন।”
রিজভী অভিযোগ করেন, “শেখ হাসিনা জবরদস্তি করে গোষ্ঠীতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। তার পরিবারের নামে দেশের বিভিন্ন স্থাপনার নামকরণ করা হয়েছে। এটি কোনো গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা নয়, বরং একনায়কতন্ত্রের উদাহরণ।”
এই বক্তব্যের মাধ্যমে বিএনপি নেতা রিজভী আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে গোষ্ঠীতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, কারাগারে বিশেষ সুবিধা প্রদান এবং বিরোধী দলের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন, যা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।