মাঝে মাঝে বাংলাদেশে জঙ্গি সংগঠনগুলো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে, কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতার কারণে এ সংগঠনগুলো অনেকটাই কঠোর গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে তাদের সংগঠনের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে তার পরেও দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা এই সকল জঙ্গী সংগঠনের কর্মীরা।
কক্সবাজারের মিয়ানমার থেকে আগত শরনার্থীদের ক্যাম্পে র্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া নতুন জ”ঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার দুই শীর্ষ নেতাকে গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। কাশিমপুর কারাগারে একযোগে স”/ন্ত্রাসী হাম”/লা চালিয়ে উ”গ্রবাদীদের ছাড়িয়ে নেওয়ার ছক কষেছিল এই নতুন জ”ঙ্গি সদস্যরা।
সোমবার কক্সবাজারে মিয়ানমার থেকে আগত শরনার্থীদের ক্যাম্পে র্যাবের অভিযানে নতুন জ”ঙ্গি সংগঠনের সাম”/রিক শাখার প্রধান মাসুকুর রহমান মাসুদ ওরফে রনবীর ও বোমা বিশেষজ্ঞ আবুল বাশার মৃধাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাদের মোবাইল ফোন থেকে পাহাড়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের ভিডিও জব্দ করা হয়।
এই ভিডিও প্রসঙ্গে র্যাবের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, এই ছোট ছোট ভিডিওগুলো তিন-চার মাস আগে করা হয়েছে। অ”স্ত্রসহ এসব ভিডিও প্রকাশ করে বড় আকারের হা”মলা চালিয়ে ‘দায় স্বীকার করার’ পরিকল্পনা ছিল তাদের। বিশেষ করে কাশিমপুর কারাগারে যুগপৎ স”/ন্ত্রাসী হাম”লা চালিয়ে চর”মপন্থীদের হটিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করেছিল তারা। অ”স্ত্র প্রশিক্ষণের ভিডিওগুলির বেশিরভাগই নতুন জ”ঙ্গি সংগঠনের সা”মরিক প্রশিক্ষক রণবীরের ডিভাইসে পাওয়া গেছে। ভিডিওতে ৩০-৩৫ জন যুবককে দেখা যাচ্ছে। গৃহহীন যুবকদের নিখোঁজ তালিকা যেটি প্রকাশিত হয়েছিল তা সাম”/রিক প্রশিক্ষণ ভিডিওতেও দেখানো হয়েছিল। ভিডিওতে যাদের দেখা যাচ্ছে তাদের মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন- সালেহ আহমেদ, নিজাম উদ্দিন ও আবুল বাশার মৃধা।
মঙ্গলবার কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেফতারকৃত রণবীর প্রথম জীবনে একজন ‘ডা”কাত’ ছিলেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি আরেক জ”ঙ্গি সংগঠন জেএমবির শীর্ষ নেতাদের সংস্পর্শে আসেন এবং তিনিও চরমপন্থায় জড়িয়ে পড়েন। তার বাড়ি সিলেটে। ২০০৭ সালের আগে তিনি ডাক বিভাগে কর্মরত ছিলেন। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি করতেন। তার বিরুদ্ধে ডাকাতির একাধিক মামলা রয়েছে। ২০০৭-এর পর সেই মামলায় রণবীর একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়ে কারাবরণ করেন। জামিনে মুক্ত হয়ে জেএমবির হয়ে কাজ শুরু করেন।
জেলে থাকা জেএমবি সদস্যদের পরিবারের দেখভাল করতেন তিনি। তিনি কারাবন্দি জেএমবি সদস্যদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতেন। রণবীর মোশাররফ হোসেন ওরফে রাকিবের সাথে দেখা করেন, জামাতুল আনসারের বর্তমান শুরা সদস্য এবং ২০১৭ সালে অর্থ ও মিডিয়া শাখার প্রধান। তিনি রাকিবের মাধ্যমে জামাতুল আনসারের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসাবে যোগদান করেন।
কমান্ডার মইন আরও জানান, সিলেট অঞ্চলে সংগঠনের আমন্ত্রণ ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচির পাশাপাশি সাম”/রিক শাখার সদস্য বাছাই করতেন রণবীর। শুরু থেকেই তিনি সংগঠনের সাম”/রিক শাখার বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী বিষয়ে প্রধান ভূমিকা পালন করেন। সংগঠনের আমীরের নির্দেশনায় তিনি কুমিল্লার পদুয়ার বাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শুরা কমিটির সভা-সমাবেশ করেন। ২০২১ সালে, জামাতুল আনসারের প্রশিক্ষণের বিষয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী দল কেএনএফ বা বমপার্টির সাথে চুক্তিতে পৌঁছেছিল, রণবীর সহ সংগঠনের আমির এবং অন্যান্য শুরা সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে ভিন্নধরনের একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য জানা গেছে, আর সেটা হলো এই সকল জ”ঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা কারাগারে যাওয়ার পর তারা অন্য সাধারন অপরাধীদেরকেও জ”ঙ্গী সংগঠনের অন্তর্ভুক্ত করতে উদ্ভুদ্ধ করছে এবং অনেকে জ”ঙ্গিবাদে জড়ানোর ঘটনা শোনা যাচ্ছে। সেদিক থেকে কারাগারগুলোতে উগ্রপন্থীদের অন্য সাধারণ যে সকল অপরাধী রয়েছে তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করছে কিনা সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, কমান্ডার মঈন বলেন, বিষয়টি গোয়েন্দা সংস্থা এবং কারাগার কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তারা এ বিষয়টি নিয়ে বেশ গুরুত্ব সহকারে কাজ করছে।